ধৈর্যশক্তি বাড়ানোর উপায় (পর্ব-২)
ধৈর্যশক্তি বাড়ানোর আরেকটি উপায় হলো- অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। যে কোনো বিষয় আপনার ভাবনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী না-ও এগোতে পাতে। আপনার প্রত্যাশা হতে হবে বাস্তবভিত্তিক। এমন হতে পারে যে, আপনার এক সন্তান অসাবধানতাবশত গ্লাসের জুস ফেলে কার্পেট বা ফ্লোর নষ্ট করে ফেললো। আপনাকে এ অবস্থায় চেচামেচি করলে চলবে না। আপনাকে এটা মেনে নিতে হবে যে, এ ধরনের ঘটনা শিশুদের মাধ্যমে ঘটতেই পারে। মানুষ ভুল-ভ্রান্তির উর্ধ্বে নয়। কোনো কিছু যদি অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে যায়, তাহলে আপনি ধৈর্যহীন হয়ে পড়লে কোনো সমাধান আসবে না রবং আরো ক্ষতি হবে। এ কারণে যেসব বিষয় আপনার মাঝে অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়, চিন্তা ও চেতনাকে সেসব বিষয় কেন্দ্রীক করলে চলবে না। দয়া-মায়া, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত ও পরিস্থিতিকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। সব সময় এটা মনে রাখতে হবে যে, যা প্রত্যাশা করছেন, আপনার প্রাপ্তি সেরকম না-ও হতে পারে। এ জন্য ধৈর্য ও স্থিতিশীলতা জরুরি।
ইসলাম ধর্মে বারবারই ধৈর্যের প্রভাব নিয়ে কথা বলা হয়েছে। ধৈর্য ও সাফল্য-একটির সঙ্গে আরেকটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। হজরত আলী (আ.) বলেছেন, দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হলেও ধৈর্যশীলরা জয় হাতছাড়া করে না। ধৈর্যশীল হলে অনেক পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে মানুষ। এমন মানুষ আল্লাহর ন্যায়বিচারের বিষয়ে নিরাশ হয় না। এ কারণে তাদের পুরস্কার অবসম্ভাবী। ধৈর্যের পুরস্কার অপরিসীম। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা হচ্ছে তিন ভাগে বিভক্ত। এক-বিপদের সময় ধৈর্য। দুই-আল্লাহর নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে ধৈর্য। তিন-ধৈর্যের মাধ্যমে পাপ করা থেকে বিরত থাকা। এ তিন ধরনের ধৈর্যের পুরস্কার প্রসঙ্গে রাসূল (সা.) বলেছেন, বিপদের সময় যে ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে আসমান ও জমিনের মধ্যকার দূরত্বের সমতুল্য মর্যাদা দান করেন। যে ধৈর্যের সঙ্গে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলবে অর্থাত ইবাদত-বন্দেগি করবে, আল্লাহ তাকে জমিনের তলদেশ থেকে আল্লাহর আরশ পর্যন্ত যে জায়গা, সে পরিমাণ মর্যাদা দেবেন। আর যে ব্যক্তি ধৈর্যের মাধ্যমে পাপ থেকে বিরত থাকবে, আল্লাহ তাকে জমিনের তলদেশ ও আরশের শেষ প্রান্তের মধ্যকার দূরত্বের সমতুল্য মর্যাদা দেবেন। কাজেই ধৈর্যের সঙ্গে পাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকার পুরস্কারই সর্বোচ্চ।