জেপি মরগান চেজ, ইউবিএস গ্রুপসহ পাঁচটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্রিটেনে বৈদেশিক মুদ্রা জালিয়াতির মামলা করা হয়েছে। ক্লাস অ্যাকশন এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ১৬৮ কোটি ডলার জরিমানার দাবি করা হয়েছে। খবর ব্লুমবার্গ।

ব্রিটেনে করা এ মামলায় অন্য যে ব্যাংকগুলো রয়েছে সেগুলো হচ্ছে বার্কলেস, সিটিগ্রুপ ও রয়্যাল ব্যাংক অব স্কটল্যান্ড। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৭ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বাজার জালিয়াতির মাধ্যমে পেনশন ফান্ড, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, হেজ ফান্ড ও করপোরেশন থেকে অর্থ গায়েব করা হয়েছে। সেগুলোর ক্ষতিপূরণের দাবিতে মূলত মামলাটি করা হয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে গোপন আঁতাত সম্পর্কিত এ মামলায় বার্কলেস, আরবিএস, সিটিগ্রুপ, জেপি মরগান ও মিত্সুবিশি ইউএফজে ফিন্যান্সিয়াল গ্রুপকে গত মে মাসে ১২০ কোটি ডলার (১০৭ কোটি ইউরো) জরিমানা করে ইউরোপীয় কমিশন। গোপন আঁতাত সম্পর্কে নীতিনির্ধারকদের প্রথম অবগত করার কারণে জরিমানা এড়াতে সক্ষম হয়েছে ইউবিএস। দেওয়ানি এ মামলায় মিত্সুবিশির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন হয়নি।

জেপি মরগান ও ইউবিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে মন্তব্যে অপারগতা প্রকাশ করে। অন্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ফোনে বা মেইল মারফত যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো প্রকার উত্তর দেয়নি।

ইউরোপীয় নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা অনলাইন চ্যাটরুমে দুটি কার্টেল পরিচালনা করেন এবং বেশির ভাগই একে অন্যকে চেনেন। একটা চ্যাটরুমের নাম হচ্ছে ‘এসেক্স এক্সপ্রেস অ্যান্ড দ্য জিমি’; একজন বাদে এর সব ব্যবসায়ী এসেক্স থেকে লন্ডনগামী একটি এক্সপ্রেস ট্রেনে পরিচিত হয়েছিলেন। অন্য কয়েকটি চ্যাটরুমের মধ্যে রয়েছে ‘থ্রি ওয়ে ব্যানানা এসপ্লিট’ ও ‘সেমি গ্রাম্পি ওল্ড ম্যান’।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি রেগুলেটরি তদন্তের একটি হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে জালিয়াতির বিষয়টি। গত বছর ২৩০ কোটি ডলার জরিমানার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে এ রকম একটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল।

যুক্তরাজ্যে মামলায় নেতৃত্বদানকারী মাইকেল ও’হিগিনস নামে একটি পেনশন ফান্ডের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যে সুস্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছি তা হলো, আমরা চাই বাজার ন্যায্যভাবে পরিচালিত হোক। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হয়তো মুক্ত বাজারের যুক্তি দেখাবেন। কিন্তু মুক্ত বাজারের সঙ্গে সঙ্গে ন্যায্য বাজারের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

লন্ডনের কম্পিটিশন আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেছে স্কট প্লাস স্কট ইউরোপ। স্কট প্লাস স্কটের মার্কিন অ্যাটর্নিদের দায়ের করা মামলায় ২৩০ কোটি ডলারে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছিল।

যুক্তরাজ্যের সরকারি খাতের একটি পেনশন ফান্ড লোকাল পেনশনস পার্টনারশিপের চেয়ারম্যান ও’হিগিনস ও চ্যানেল আইল্যান্ডস কম্পিটিশন অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটিজ বলছে, তারা যদি মামলায় জেতে তাহলে ব্যাংকগুলোকে অন্তত ১০০ কোটি পাউন্ড অর্থদণ্ড দিতে হবে। মামলাটি নিষ্পত্তিতে তিন থেকে পাঁচ বছর লাগতে পারে এবং সফল হলে হাজারো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অর্থ পরিশোধে বাধ্য হবেন।

২০১৫ সালে প্রণীত একটি ব্রিটিশ আইনের আওতায় প্রথমবারের মতো মার্কিন ধাঁচের এ সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া হলো। ভোক্তা অধিকার আইনের আওতায় শুধু যুক্তরাজ্যভিত্তি বিনিয়োগকারীরাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থের দাবিদার হয়ে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়া ব্রিটেনের বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান এ অর্থ দাবি করতে পারবে না।
নিউজ বনিকবার্তা