জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বিলোপ করার ঘোষণা দিয়েছে মোদি সরকার। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর অন্য যেকোন ভারতীয় রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্বশাসন ভোগ করতো। এই ধারাটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটিই ভিত্তিতেই ১৯৪৭ সালে কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল।

সোমবার সংসদে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্র অমিত শাহ বিরোধীদের তুমুল বাধা ও বাগ-বিতণ্ডার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করার পরই এ ঘোষণা দিল মোদি সরকার। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহকে গৃহবন্দি করে রাখার কয়েক ঘণ্টা পরই এ ঘোষণা আসলো। এ ছাড়া এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে রাজ্যে জনসভা নিষিদ্ধ করা হয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়।

কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি টুইট করেছেন, এই সিদ্ধান্ত কার্যকরভাবে ভারতকে ওই রাজ্যের দখলদার বাহিনী হিসেবে প্রমাণ করেছে।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ ভারতীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকা ব্যবহারের স্বাধীনতা দেয়। এ ছাড়া পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ সম্পর্কিত বিষয়াদি বাদে অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দেয় কাশ্মীরকে। এই অনুচ্ছেদের সুবাদে কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দারাই শুধুমাত্র সেখানে বৈধভাবে জমি কিনতে পারতেন, সরকারি চাকরি করার সুযোগ পেতেন এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।

এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রীসভার ঐ বৈঠক শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে একান্ত বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্র অমিত শাহ।

ঐ অনুচ্ছেদ বিলোপ করার বিষয়টি বিজেপি'র পুরনো রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোর একটি। এখন থেকে জম্মু এবং কাশ্মীর 'ইউনিয়ন টেরিটরি' বা কেন্দ্রীয়ভাবে শাসিত রাজ্য হিসেবে পরিচালিত হবে। লাদাখ কেন্দ্রশাসিত তৃতীয় একটি এলাকা হিসেবে বিবেচিত হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে সেখানে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।




নিউজ বনিকবার্তা