ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে নতুন আলোচনার সম্ভাবনা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখান করার একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ফ্রান্সকে রাজি করানোর চেষ্টায় নেমেছেন।

বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের বৈঠকে জনসন ব্রেক্সিট নিয়ে নতুন আলোচনা শুরুর বিষয়ে ম্যাক্রোঁকে রাজি করনোর চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, জানিয়েছে বিবিসি।

ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা নিরসনে সম্ভাব্য একটি পথের ইঙ্গিত দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল। এর পরের দিনই প্যারিসে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এ ‘কঠিন কূটনৈতিক বৈঠকের’ মুখোমুখি হতে হচ্ছে জনসনকে।

তবে জনসনের ফের ব্রেক্সিট আলোচনার প্রস্তাবে কাজ হবে না বলে আগেই জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।

যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিদায় নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ‘অধীনস্তে’ পরিণত হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যে নতুন নির্বাচন কিংবা গণভোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া ব্রেক্সিট নিয়ে আরও দেরি করার কারণ দেখতে পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ।

বিবিসি বলছে, তিন বছরেরও বেশি সময় আগে হওয়া গণভোটে যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার রায় জানালেও কখন, কী প্রক্রিয়ায় এটি সম্পন্ন হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর জনসন চলতি বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিট সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইউরোপের অধিকাংশ দেশই যখন কোনো ধরনের ‘চুক্তি ছাড়া’ ব্রেক্সিট কার্যকরের আশঙ্কায় শঙ্কিত, তখন চলতি সপ্তাহে নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেমেছেন ইউরোপকে ফের আলোচনায় উদ্যোগী করতে।

বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর মের্কেল যুক্তরাজ্যকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত সংকট নিয়ে একটি সমাধানে পৌঁছার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইইউর সঙ্গে কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে এ বিষয়টিই যুক্তরাজ্যের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা।

মের্কেলের এই চ্যালেঞ্জকে অবশ্য ইতিবাচকভাবেই দেখছেন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা। ইইউ ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনায় অস্বীকৃতি জানানোর অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসেছে বলেও ধারণা তাদের।

মের্কেলের ওই বক্তব্যের ঘণ্টাখানেক পর ম্যাক্রো ব্রেক্সিট নিয়ে ইইউর আগের অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে জনসনের পূর্বসুরীর সঙ্গে ইউরোপের নেতাদের যে চুক্তি হয়েছিল, তা নিয়ে নতুন আলোচনার সুযোগ নেই। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে-র সঙ্গে ইইউর ওই ব্রেক্সিট চুক্তি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে তিন দফা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।

ফরাসী প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ফ্রান্স এখন ‘চুক্তি ছাড়াই’ ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার বেশি সম্ভাবনা দেখছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম