গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে পড়া গ্রিসের অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকিস বলেছেন, ঋণ চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাব তাঁরা প্রত্যাখ্যান করতে বদ্ধপরিকর। সংস্কারের প্রস্তাবকে তিনি অপমানজনক আখ্যায়িত করেছেন। খবর এএফপি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।
ইইউর তুলনামূলক দরিদ্র সদস্য গ্রিসের অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে এ সপ্তাহেই বহুপক্ষীয় আলোচনা হবে। তার ঠিক আগে দেশটির অর্থমন্ত্রী বললেন, গ্রিসকে ভয় দেখানোর জন্যই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সরকারকে ভয় দেখানো যাবে না।
বিক্রয় করের হার বাড়ানো, সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের বেতন কাটছাঁটের মতো বেশ কিছু শর্ত দিয়ে গত সপ্তাহে পাঁচ পৃষ্ঠার সংস্কার প্রস্তাব দেয় ইউরোপীয় কমিশন (ইসি)।
গত শুক্রবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপেরাস ইসির প্রস্তাবকে উদ্ভট বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, দেশটির বিপুল ঋণের পুনর্গঠনের বিষয়টি যুক্ত না করলে তিনি এই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না। সিপেরাস বলেন, দাতাদের বেঁধে দেওয়া শর্ত অনুসারে তিনি বাজেট ছোট করতে পারেন। তবে পেনশনে কাটছাঁট বা বিক্রয়মূল্যের ওপর কর আরোপের বিষয়টি মেনে নেবেন না।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর এই কথার পর গতকাল রোববার জার্মানিতে চলমান জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ ইউনকার বলেন, সিপেরাস একটি বিকল্প প্রস্তাব দিতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি সেটি দেননি।
ইউনকার দাবি করেন, গ্রিস দাতাদের প্রস্তাবের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে।
গ্রিক অর্থমন্ত্রী ভারোফাকিসও বলেন, আমাদের সংস্কার, ঋণ পুনর্গঠন এবং বিনিয়োগএই তিনই একসঙ্গে দরকার। এই তিনটি বিষয় না থাকলে আমরা কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করব না।
গ্রিস আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৩০ কোটি ইউরো ঋণ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে। এর ফলে ঋণ ফেরত দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা আরও বাড়ল।
আগামী বুধবার থেকে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠেয় ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলনে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী সিপেরাস জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। গত শনিবার টেলিফোনে এই তিন নেতা ওই বৈঠকের বিষয়টি ঠিক করেন।
গ্রিস বেশ কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুত ২৪ হাজার ৫০০ কোটি ইউরোর জরুরি সহায়তা কর্মসূচির মধ্যে ৭২০ কোটি ইউরোর জন্য অপেক্ষা করছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চরম ঋণগ্রস্ত দেশটিকে বিপুল পরিমাণ ঋণ শোধ করতে হবে। অর্থনৈতিক অচলাবস্থার ফলে শেষ পর্যন্ত দেশটি ইইউ থেকে বাদও পড়তে পারে।