আমি আজ আপনাদের সামনে এমন একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই যাকে ঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট বলা চলেনা। চাইলে ট্রেড ম্যানেজমেন্ট বলা যেতে পারে। প্রপার ট্রেড ম্যানেজমেন্ট করতে না জানলে আপনি কখনোই সফল হবেন না। প্রথমে যতই লাভ করেন না কেন শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে আপনি লসের মুখে পড়েছেন।
আমি আজ ট্রেড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে যে কথাগুলো বলতে যাচ্ছি সেগুলো হচ্ছে মূলত ট্রেড করার সময় আমি যে বিষয়গুলো মেনে চলি তারই প্রতিরুপ। আমি আশা করব আপনারাও নিজেরা ট্রেড করার সময় বিষয়গুলো মানবেন।
ট্রেড ম্যানেজমেন্ট আসলে কি?
ট্রেড ম্যানেজমেন্ট এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে আপনি আপনার স্টপ লসকে কখনোই এমন ভাবে এডজাস্ট করবেন না যা আপনাকে বর ধরনের রিস্ক এ ফেলে দেয় এবং টার্গেট প্রফিট অর্জন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই বিষয়টা মেনে চললে আপনি একটা লো রিস্ক-রিওয়ার্ড রেশিও মেইনটেইন করে চলতে পারবেন। এটা লং রানে আপনাকে অনেক সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে যাবে।
একটি উদাহারনঃ
ধরুন আপনি একটা সর্ট ট্রেডে এন্টার করেছেন। স্টপ লস ধরুন ৩০ পিপস আছে। প্রাইস ধীর গতিতে আপনার স্টপ লসের দিকে মুভ করছে। আপনি আশা করছেন যে মার্কেট আপনার অনুকুলে মুভ করবে তাই ঠিক করলেন যে স্টপ লস ৫০ পিপস ধরবেন। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় যেটা হয় যে দেখা যায় প্রাইস ঠিকই ৫০ পিপস এ স্টপ আউট হওয়ার ফলে আপনাকে বড় লসে পড়তে হয়। এই ক্ষেত্রে যা করা উচিৎ তা হল- যখনই দেখব প্রাইস স্টপ লসের দিকে এগোচ্ছে, ট্রেডার হিসেবে আমাদের এক্সেপ্ট করে নিতে হবে যে আমরা ভুল ট্রেডে আছি, ভুল টাকে শুদ্ধ করার জন্য স্টপ লস শিফট করব না, কারন এতে করে আরও বড় লস হতে পারে। সাধারণত নতুন ট্রেডাররা এই মিস্টেকটা খুব্ বেশি পরিমানে করে থাকে, কারন তারা ট্রেডিং এ লস টাকে এক্সেপ্ট করে নিতে পারেনা। তাই আমি আপনাদের সাথে আমার নিজের কিছু টেডিং আইডিয়া শেয়ার করব, যা এই ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেবে। যখনই প্রাইস আমার পজিশনের বিপরীতে মুভ করবে, আমি আমার স্টপ লস ধরে রাখব। আল্টিমেটলি যদি প্রাইস আমার স্টপ লস ধরে ফেলে তাহলে এটা আমি এক্সেপ্ট করে নেব। এবং লস রিকভারের জন্য নতুন ট্রেডের অপেক্ষা করব।
অপরদিকে, প্রাইস যদি আমার অনুকূলে মুভ করে, আমি আমার স্টপ লসকে ব্রেক ইভেন পয়েন্টে নিয়ে যাব। অপেক্ষা করব কখন প্রাইস আমার টার্গেটকে হিট করবে। যদি এইক্ষেত্রে প্রাইস রিভার্স হয়ে এসে স্টপ আউট করে, তাতেও আমি একটা সিঙ্গেল পিপ লস খাবনা। এভাবেই আমি আমার ক্যাপিটালকে প্রটেক্ট করে থাকি।
আমি বলছিনা আপনি এই ভাবে আমাকে ফলো করেন। কিন্তু আপনি চাইলে চিন্তা করে এমন কিছু পদ্ধতি নিয়ে আসতে পারেন যাতে আপনার মানি ম্যানেজমেন্ট হবে সুন্দর ভাবে।
ট্রেড ম্যানেজমেন্ট কেন দরকার?
এখন ট্রেডার হিসেবে আপনার একটা জিনিস বুঝা খুব দ্রকার যে আপনাকে অবশ্যই আপনার ক্যাপিটাল সেভ করে চলতে হবে। একজন প্রফেশনাল ট্রেডারের কাছে নিজের ক্যাপটাল সেভ করাটা নতুন ট্রেডে জেতার চেয়েও বেশি দরকারি। আপনি যদি কখনও প্রফিটেবল ট্রেডার হতে চান তাহলে আপনাকে নিজের ট্রেড ম্যানেজমেন্ট এর দক্ষতাকে কে ট্রেডিং এ এপ্লাই করতে জানতে হবে।
ট্রেড ম্যানেজমেন্ট এর একটা সুন্দর উপায় :
আমি আপনাদের ট্রেড ম্যানেজমেন্ট এর আর একটা উপায় দেখাতে পারি- এটা আগেরটার তুলনায় একটু কনজারভেটিভ এপ্রোচ। এখানে একটা ট্রেড এর বদলে এই খানে আপনি দুইটি ট্রেড অর্ডার ওপেন করবেন। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই আপনা স্টপ লস ও এবং এন্ট্রি প্রাইস সেইম হবে। একমাত্র পার্থক্যটি হল আপনি যে পরিমান টাকা রিস্ক নিতে রাজি আছেন তা দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়ে গেল। ধরুন আপনি ২০০ ডলার রিস্ক নিতে চান, এক্ষেত্রে আপনি ১০০ ডলার করে দুটো আলাদা ট্রেড এ রিস্ক নিলেন। একটা ট্রেডের জন্য আপনার রিস্ক-রিওয়ার্ড রেশিও ধরেনঃ ১:১
অন্য ট্রেডে টার্গেট সেট যখন ১:১ টার্গেট হিট খাবে, আপনি পাবেন ১০০ ডলার। এখন এই ১০০ ডলার কিন্তু আপনার অন্য ট্রেডের রিস্কটি কভার করবে যেটা এখনও ওপেন আছে। এর ফলে আপনার সেকেন্ড ট্রেডটি একটা ফ্রি ট্রেডে পরিনত হয়েছে। কারন সেকেন্ড ট্রেডের স্টপ লস পয়েন্টে চলে এলেও আপনি কোন লস খাবেন না। প্রথম ট্রেডে ১০০ ডলার লাভ, পরের ট্রেডে লস। আপনার ক্যাপিটাল কিন্তু রয়ে গেল। শুধু মাত্র একটা উপায় আছে জার ফলে আপনি এই খানে একটা লস খেতে পারেন তা হল যদি আপনার ১:১ রেশিওর ট্রেডটি যদি হিট না করে টার্গেটে এবং আপনি ঐখানে তে লস খেয়ে যান। তাই ঐ ট্রেডটা আপনাকে অনেক বুঝে শুনে করতে হবে।
আজ এই পর্যন্ত।