সম্প্রতি ঋণসীমা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে টানা ১৬ দিন দেশটির সব ধরনের সরকারি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি অস্ট্রেলিয়ায়ও হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী জো হকি। দেশটির বিরোধী দল যদি ঋণসীমা ৫০০ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে উন্নীত করতে সম্মত না হয়, তবে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। খবর সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের।
গতকাল বৃহস্পতিবার এবিসি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে হকি বলেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বর্তমান ৩০০ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ার ডলারের ঋণসীমা শেষ হবে। সংকট এড়াতে এরই মধ্যে আমরা এ ঋণসীমা আরো বাড়াতে চাই। কিন্তু যদি লেবার পার্টি মনে করে তাদের বিরোধিতার কারণে সরকারি সেবা বন্ধ হলে একটা বিরাট কাজ হবে, তবে তা ভুল।
এদিকে গত বুধবার রাতে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ঋণসীমা বাড়ানোর বিলটি উত্থাপিত হলেও বিরোধী দল অস্ট্রেলিয়ান লেবার ও গ্রিনস পার্টি এর বিপক্ষে অবস্থানের কারণে তার অনুমোদন দেয়া যায়নি। এ দুই দল ঋণসীমা ৪০০ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে উন্নীত করার পক্ষে রয়েছে। কিন্তু টনি অ্যাবট নেতৃত্বাধীন সরকার এ ঋণসীমা পর্যাপ্ত নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
গত বুধবার অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, যদি ঋণসীমা নিয়ে কোনো সমাধান না হয়, তবে সরকারকে সব ধরনের কল্যাণমূলক কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ রাখতে হবে।
তিনি বলেন, লেবার পার্টি আমাদের সঙ্গে জুয়া খেলছে। তারা ঋণসীমার ভয়াবহতা বুঝতে পারছে না। যদি তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে তবে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো এতে অপূরণীয় ক্ষতি হবে অস্ট্রেলিয়ার জনগণের।
এদিকে বিরোধী দলের অর্থবিষয়ক মুখপাত্র টনি বার্ক অভিযোগ করে বলেন, হকি একটি রাজনৈতিক চাল চালছে। আমি মনে করি, সে ঋণসীমা নিয়ে যে দাবি তুলেছে, তা নেহাত শিশুসুলভ। ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণসীমা ঠিক আছে।
অন্যদিকে গ্রিনসের দলনেতা ক্রিস্টিন মিলনে কেন এত বেশি অর্থের প্রয়োজন, তা জানতে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা কি বলতে চাইছি বা আপনাদের এজেন্ডা কি, সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আর এ অর্থ কোথায় ব্যবহূত হবে, তাও জানতে চাই আমরা।
হকি জানান, সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত লেবার দলটি বেশ ভালো করেই জানে যে ঋণসীমা ৩৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাদের সময়ে অতিরিক্ত আরো ৬০ বিলিয়ন ডলার লাগতে পারে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল সরকারের ঋণের ঊর্ধ্বসীমা অনুমোদন করে আইনসভা কংগ্রেস। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করে যায় অর্থ দফতরের মোট দেনা। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অর্থবছরে প্রেসিডেন্ট ওবামার স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় পরিকল্পনা অন্তত এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়ার দাবিতে এ ঋণসীমা বাড়াতে অসম্মতি জানায় বিরোধী রিপাবলিকানরা। ১৬ দিন ধরে বন্ধ থাকে ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন সেবা। বিনা বেতনে ছুটিতে যেতে বাধ্য হয় সাত থেকে আট লাখ কর্মী। পরবর্তীতে ডেমোক্র্যাটদের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় করে যাওয়ার মতো অর্থ ধার করার অনুমতি দেয় আইনসভা।