বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব : মে মাসে চীনে গাড়ি বিক্রিতে বড় পতন

চলতি বছরের মে মাসে গাড়ি বিক্রিতে সবচেয়ে বড় মাসিক পতনের কথা জানিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম গাড়িবাজার চীন। ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতিটির মন্থর প্রবৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ আরো বাড়ছে। খবর রয়টার্স।

চায়না অ্যাসোসিয়েশন অব অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার স (সিএএএম) জানিয়েছে, এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে গাড়ি বিক্রিতে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ পতন দেখা গেছে। এ নিয়ে টানা ১১ মাস দেশটির বাজারে গাড়ি বিক্রিতে পতন দেখা গেল। এর আগে এপ্রিলে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং মার্চে ৫ দশমিক ২ শতাংশ পতন দেখা যায়।

সিএএএমের সহকারী মহাসচিব জু হাইদং বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের দেয়া ২০২০ সালের সময়সীমার আগেই প্রদেশগুলোর গাড়ির নির্গমন মানদণ্ড ‘চায়না ফোর’ বাস্তবায়ন গাড়ির বিক্রিতে পতনের একটি প্রধান কারণ। এতে ম্যানুফ্যাকচারার ের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য ম্যানুফ্যাকচারার সরা খুব সামান্য সময় পেয়েছে। পরিবর্তিত বাজারের সঙ্গে তাল রেখে চলার ক্ষেত্রে মানদণ্ডটি গাড়ি শিল্পের সরবরাহ শৃঙ্খলকে সমস্যায় ফেলেছে।

মন্থর অর্থনীতি এবং ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের প্রভাবে ক্রেতা মনোভাব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত শতকের নব্বইয়ের দশকের পর গত বছর প্রথমবার চীনে গাড়ি বিক্রিতে পতন দেখা যায়।

শিল্পসংশ্লিষ্ট নির্বাহীরা অবশ্য আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, সরকারের সহায়তার কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাজার প্রবৃদ্ধিতে ফিরে আসতে পারে। বুধবার জু বলেন, নিম্ন থেকে মধ্যম আয় গোষ্ঠীর জ্বালানি ক্রয়ে পতন ঘটায় গত মাসে চাহিদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে সরকার বিক্রি পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বেশকিছু পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়, যার মধ্যে গাড়ি কেনার ওপর স্থানীয় সরকারগুলোর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি বন্ধ এবং নিউ এনার্জি ভেহিকলের (এনইভি) ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বাতিলের মতো পদক্ষেপ রয়েছে। কিন্তু বাজারের প্রত্যাশা থাকলেও এসব পদক্ষেপের মধ্যে বড় শহরগুলোয় পেট্রলচালিত গাড়ির লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিলের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

জু আরো জানান, সরকারের পদক্ষেপের মধ্যে ভর্তুকিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ধরনের সহায়তা ছাড়া পদক্ষেপগুলো থেকে সফলতা পাওয়া সম্ভব নয়। গত মাসে এনইভি খাতের প্রবৃদ্ধিতে তীব্র মন্থরতা দেখা যায়। এপ্রিলের ১৮ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় গত মাসে মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ বিক্রয় প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অন্যদিকে গত বছর বৃহত্তর গাড়িবাজারে সংকোচন দেখা গেলেও এনইভি বিক্রি প্রায় ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এনইভির মধ্যে রয়েছে পেট্রল-বৈদ্যুতিক হাইব্রিড গাড়ি, প্লাগ-ইন হাইব্রিড, কেবল ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং হাইড্রোজেন জ্বালানিচালিত গাড়ি।
নিউজ বনিকবার্তা