[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/534204379.jpg[/IMG]
চলতি বছরের জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরের শিল্পোৎপাদন খাতে আগের মাসের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খাতটিতে পতন ঘটেছে। জুনের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হওয়ার কারণে খাতসংশ্লিষ্টরা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিয়ে আশাবাদী। ২০২২ সালের জুলাইয়ের তুলনায় শিল্পোৎপাদন দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। তবে তা জুনের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ পতনের তুলনায় ভালো। সম্প্রতি দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য প্রকাশ করেছে। জুলাইয়ে শিল্পোৎপাদন পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো ছিল। এর আগে ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদরা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ পতনের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। সামগ্রিক পতন সত্ত্বেও শিল্পোৎপাদনে সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। প্রকৌশল, সাধারণ উৎপাদন এবং বায়োমেডিকেল পণ্য উৎপাদন বাদে সব খাতজুড়েই সামান্য পরিমাণ উৎপাদন বেড়েছে। যদি বায়োমেডিকেল পরিসংখ্যান বাদ দেয়া হয়, তাহলে সার্বিকভাবে উৎপাদন ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।
ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং উপখাতে ২০২২ সালের একই মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ উৎপাদন বেড়েছিল। জাহাজ ও সমুদ্র প্রকৌশলে বেড়েছে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ। শিল্পোৎপাদন খাতের অগ্রগতিতে বিমানের যন্ত্রাংশের উচ্চ চাহিদা বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাণিজ্যিক ও পর্যটন কার্যক্রমের জন্য বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ চাহিদা বেড়েছে। ইলেকট্রনিকস ছিল আরেকটি সফল উপখাত। সেমিকন্ডাক্টর, ইনফোকম ও কনজিউমার ইলেকট্রনিকসের হাত ধরে খাতটিতে উৎপাদন বেড়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। যদিও অন্যান্য উপখাতে অগ্রগতি অতটা ভালো ছিল না।
জুলাইয়ের সবচেয়ে দুর্বল ছিল বায়োমেডিকেল উৎপাদন। খাতটিতে উৎপাদন ২০২২ সালে জুলাইয়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। মেডিকেল টেকনোলজি খাত ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু ২০২২ সালের জুলাইয়ের তুলনায় ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে উৎপাদন ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। দেশটির রাসায়নিক খাতেরও উৎপাদন ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ব্যাটারি ও কাঠামোগত ধাতব পণ্যের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। প্রকৌশল খাতগুলোর অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না। চলতি বছরের জুলাইয়ে এর উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
ডিবিএস ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ চুয়া হান টেং জানান, এ বছরের অর্ধেক সময়ের মধ্যে উৎপাদন ক্রিয়াকলাপ ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তবে পুনরুদ্ধার কিছুটা দুর্বল হবে, কারণ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিবেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, ‘ইলেকট্রনিকস সংস্থাগুলোর জন্য একই রকম চিত্র দেখা যায়, সামনের মাসগুলোতে এ খাতের চালান ও উৎপাদন ধীরে ধীরে বাড়বে। বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর বিক্রয় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত চিপের চাহিদা তৈরি হয়েছে। যদিও দীর্ঘায়িত ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এখনো সরবরাহ চেইনগুলোতে বাধা তৈরি করতে পারে।’
মেব্যাংকের অর্থনীতিবিদ চুয়া হাক বিন এবং ব্রায়ান লি বলেন, ‘*২০২৩ সালে দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে ২ দশমিক ২ শতাংশে গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আসবে।’ তারা আরো বলেন, ‘চীনের একটি সূক্ষ্ম মন্দা ঝুঁকি রয়ে গেছে, তবে আমরা চীনের সামগ্রিক আমদানি চাহিদার ইতিবাচক বৃদ্ধির দ্বারা স্বস্তি পেয়েছি। চীন সম্ভবত কিছু আবাসন ও ঋণ ব্যবস্থা শিথিল করবে এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে সমর্থন করার জন্য কিছু পরিমিত আর্থিক নীতি প্রণয়ন করবে।’
ইউওবির সিনিয়র অর্থনীতিবিদ অ্যালভিন লিউ ২০২৩ সালে সিঙ্গাপুরের পূর্ণ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে আশা করছেন।