চলতি বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক ঋণ রেকর্ড ৩০৭ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। দুই বছর নিম্নমুখী থাকার পর চলতি বছরে বিভিন্ন দেশের সরকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেড়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতা। জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ঋণ বেড়েছে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার। এক দশক আগের তুলনায় ঋণ বেড়েছে ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি বাণিজ্য ও আর্থিক পরিষেবাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স (আইআইএফ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আইআইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে * বৈশ্বিক ঋণের ৮০ শতাংশের হিস্যা ছিল জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশের বাজারগুলোর। অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি মাসের মাঝামাঝি দাবি করেছিল, বৈশ্বিক ঋণ দ্বিতীয় বছরের মতো ২০২২ সালে কমে ২৩৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে মহামারীপূর্ব পর্যায়ের চেয়েও বৈশ্বিক ঋণের বোঝা বেশি। গত বছর বৈশ্বিক ঋণ ছিল জিডিপির ২৩৮ শতাংশ, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় দুই দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে ঋণ। উদীয়মান অর্থনীতির তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশের বেসরকারি ঋণ কম হলেও ঝুঁকি বেশি। অর্ধেকের বেশি নিম্ন আয়ের দেশ ঋণসংক্রান্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। [IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/130082240.jpg[/IMG]
ধারাবাহিকভাবে সাত প্রান্তিক ধরে বৈশ্বিক ঋণ কমতে থাকলেও চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে ঋণ বেড়েছে। গত দুই বছরে ঋণ কমার প্রধান কারণ ছিল মূল্যস্ফীতির হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। এ কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দেশ তাদের মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন এনেছে। আইআইএফের দাবি, মজুরি ও দ্রব্যমূল্যের ওপর থেকে চাপ ক্রমেই কমে আসছে। বছরের শেষ দিকে ঋণের হার ৩৩৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। জিডিপির বিপরীতে গৃহস্থালি ঋণ উদীয়মান অর্থনীতিগুলোয় বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে কোরিয়া, চীন ও থাইল্যান্ড এগিয়ে তালিকায়। তবে উন্নত দেশগুলোয় সূচক ছিল নিম্নমুখী। প্রতিবেদন বলছে, আন্তর্জাতিক তহবিল স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। উদীয়মান অর্থনীতিগুলো বাড়িয়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও তুরস্ক ছিল ঋণগ্রহণে শীর্ষে।
উদীয়মান বাজারে পুঁজিপ্রবাহে সীমাবদ্ধতা একটা বড় ঘটনা হয়ে দেখা দিয়েছে চলতি সময়ে। আইআইএফ দাবি করেছে, বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুঁজি বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। নতুন প্রকল্প হাতে নিতে হবে বিনিয়োগকারীদের। আইআইএফের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ এমরে টিফতিক বলেছেন, ‘*আশার কথা হলো ভোক্তা ঋণের এ বোঝার বড় অংশই মোকাবেলা করা সম্ভব। যদি মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে যায়, তাহলে দেশে দেশে অর্থনৈতিক নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র আরো এক দফা সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বসতে পারে।’