জার্মানির অর্থনীতি গত বছর দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান সুদহার ও জ্বালানির উচ্চমূল্য ইউরোপের এ বৃহত্তম অর্থনীতিকে বিশ্বের দুর্বল প্রতিযোগীদের একটিতে পরিণত করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রাথমিক পূর্বাভাসে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। গত বছরের জার্মান অর্থনীতির এমন পতন ২০২৪ সালের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করবে। কর্মঘণ্টা নিয়ে দেশব্যাপী ট্রেন ধর্মঘট, জ্বালানি ভর্তুকি কমানোর বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদ এসবই দেশটির অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ফেডারেল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিসের প্রেসিডেন্ট রুথ ব্র্যান্ড বলেন, ‘একাধিক সংকটে জার্মানির *সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ২০২৩ সালে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে, যা চলতি বছরও অব্যাহত থাকবে।’
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/228310612.jpg[/IMG]
ফেডারেল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস জানায়, জার্মানির জিডিপি এখনো করোনা মহামারী স্তরের ওপরে আছে। ২০১৯ সালের তুলনায় তা দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত পৃথক তথ্যানুযায়ী, ইউরোজোনের শিল্পোৎপাদন নভেম্বরে টানা তৃতীয় মাসে কমেছে। জার্মানির এ পরিসংখ্যান দেখে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, চতুর্থ প্রান্তিকে ইউরোজোনের অর্থনীতির সংকোচন ঘটতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে গেছে জার্মানি। সংস্থাটি সম্প্রতি পূর্বাভাস দেয়, উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো ২০২৩ সালে গড়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো ৪ শতাংশ বাড়বে।
আইএমএফ আরো পূর্বাভাস দিয়েছে, মার্কিন অর্থনীতি গত বছর ২ দশমিক ১ শতাংশ বাড়বে। ইউরোজোন দশমিক ৭ এবং যুক্তরাজ্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। রাশিয়ার সস্তা জ্বালানি এবং চীনা জনগণের চাহিদা কমার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জার্মানির বৃহৎ রফতানিকেন্দ্রিক উৎপাদন খাত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্যানুসারে, নভেম্বরে ইউরোজোনের শিল্পোৎপাদন দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। কারণ জার্মান ও ইতালির কারখানাগুলোর কম উৎপাদন। এটি ইউরোজোনের উৎপাদন খাতে বার্ষিক পতনকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশে নিয়ে গেছে।

জার্মানির পরিসংখ্যান অফিস জানায়, গত বছরের শেষ তিন মাসে আগের প্রান্তিকের তুলনায় দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে দেশটির জিডিপি। জার্মানিতে খুচরা বিক্রি, রফতানি ও শিল্পোৎপাদন সবই গত বছর কমেছে। জীবনযাত্রার উচ্চব্যয়ের কারণে পরিবারগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উচ্চ জ্বালানি ব্যয়, দুর্বল বৈশ্বিক চাহিদা ও ক্রমবর্ধমান সুদহারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দেশটির বিস্তৃত উৎপাদন খাত। গত বছর গৃহস্থালির ব্যবহার দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে, যা প্রাক-মহামারী স্তর থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে।