[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/40987257.jpg[/IMG]
চীনে জাপান ও জার্মানির বিনিয়োগকারীদের ওপর পরিচালিত দুটি জরিপে দেখা গেছে, চলতি বছরে দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবনতি ঘটবে বলে আশঙ্কা করছে তারা। বিদেশী বিনিয়োগের ওঠানামার খবর অস্বীকার না করলেও এর আগে বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি ভুলভাবে চিত্রায়িত করছে গণমাধ্যমগুলো।
চীনে জাপানি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ১ হাজার ৭১৩টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালিয়েছে। এ অনুসারে, দেশটিতে বিদ্যমান জাপানি সংস্থার প্রায় ৩৯ শতাংশ বলছে, চলতি বছরে চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। ২৫ শতাংশ সংস্থা উন্নতির কথা বলেও প্রায় ৩৭ শতাংশ সংস্থা বলছে, অবস্থা অপরিবর্তিত থাকবে। ২০২৩ সালে প্রায় ৪৮ শতাংশ জাপানি সংস্থা চীনে বিনিয়োগ কমিয়েছে বা মোটেও বিনিয়োগ করেনি। একই সময়ে ১৫ শতাংশ সংস্থা বাড়িয়েছে এবং অবশিষ্ট ৩৮ শতাংশ ২০২২ সালের সমপরিমাণ বিনিয়োগ করেছে।
অন্যদিকে চীনে জার্মান চেম্বার অব কমার্সের জরিপ অনুসারে, ৫৬৬টি কোম্পানির ৮৩ শতাংশ বলেছে চলতি বছর চীনের অর্থনীতিতে ‘নিম্নমুখী গতি’ দেখছে। প্রায় ১০ শতাংশ এর সঙ্গে একমত নয় এবং বাকিরা বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট নয়।
জার্মান সংস্থার মধ্যে যারা চীনের অর্থনৈতিক প্রবণতাকে নেতিবাচক বলেছে, তাদের ৬৪ শতাংশ মনে করে দেশটির শক্তিশালী অর্থনৈতিক গতি ফিরে পেতে এক-তিন বছর সময় লাগবে এবং ২২ শতাংশ বলেছে তিন-পাঁচ বছর লাগবে। তবে ৯১ শতাংশ উত্তরদাতারা বলেছে, তাদের চীন ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। প্রায় ৯ শতাংশ বলেছে, দুই বছরের মধ্যে চীন ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বা বিবেচনা করছে। ২০২০ সালে পরিচালিত একই ধরনের জরিপে এ সংখ্যা ছিল ৪ শতাংশ।
এ অনাস্থা বিষয়ে বিপরীত মত জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিদেশী বিনিয়োগ প্রশাসন বিভাগের পরিচালক ঝু বিং। ৮ জানুয়ারি তিনি বলেন, ‘*চীনের এফডিআইয়ের ওঠানামাকে বিদেশী মিডিয়া “*বিদেশী পুঁজির বহির্গমন’’ হিসেবে ভুলভাবে বর্ণনা করছে।’
সঙ্গে যোগ করেন, কিছু বিদেশী সংস্থা মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু অন্যরা ডিসপ্লে ও ব্যাটারি তৈরির জন্য নতুন উচ্চমানের কারখানা খুলেছে। এছাড়া কিছু দেশ চীনের ওপর বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় কিছু বিদেশী সংস্থাগুলোকে বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনতে হয়েছে।
২৫ জানুয়ারি বেইজিংয়ে একটি জাপানি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে লি বলেন, ‘*চীন একাধিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে চীন ও জাপানের ব্যবসায়কে সমর্থন করতে প্রস্তুত এবং চীনে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখতে জাপানসহ সব দেশের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।’
গত বছরের জুলাইয়ে চীনে জাপানের চিপ তৈরির সরঞ্জাম রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা, আগস্টে প্রশান্ত মহাসাগরে ফুকুশিমা পারমাণবিক প্লান্টের মিশ্রিত বর্জ্য পানি ছেড়ে দেয়া এবং একজন জাপানিকে গ্রেফতারসহ বেশ কয়েকটি ঘটনার কারণে টোকিও ও বেইজিংয়ের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। তবে জার্মানির বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার বিষয়ে বেশি মনোযোগ দিয়েছে চীন। অটোমোবাইল ও উচ্চ ক্ষমতার মেশিন তৈরিতে ইউরোপের দেশটির শক্তিশালী হিস্যা রয়েছে। গত জুনে জার্মানি সফরে দেশটির কোম্পানি ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঝু বিং।