নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য পিপল’স ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি)। দেশটিতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং এর আগে গৃহীত অর্থনৈতিক নীতিমালাকে কার্যকর রাখতে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চীনের চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও মূল্যসংকোচন নিরসনে বিভিন্ন মেয়াদে উদ্যোগ নিয়েছিল বেইজিং। এক্ষেত্রে মুদ্রানীতি আরো কঠোর করার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন দেশটির অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ। কিন্তু মুদ্রানীতিকে আরো কঠোর করা হলে ইউয়ানের অবমূল্যায়নের ঝুঁকি বাড়বে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। যদিও বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেবে। আর তা হলে চীনের সিদ্ধান্তও প্রভাবিত হতে পারে। [IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/927358279.jpg[/IMG]
দ্য পিপল’স ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) জানায়, মিডিয়াম টার্ম লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এমএলএফ) ক্ষেত্রে নীতি সুদহার ২ দশমিক ৫০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনলাইন বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তারল্য পরিস্থিতিকে অনুকূলে রাখার জন্য।’
এদিকে ৩১টি বাজার পর্যাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান নিয়ে জরিপ পরিচালনা করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। জরিপে অংশগ্রহণ করা ৭১ শতাংশ মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বছর মেয়াদি এমএলএফ ঋণব্যয় অপরিবর্তিত রাখবে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিবিএসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা চেং ওয়েই লিয়াং বলেন, ‘নীতিনির্ধারকরা বর্তমানে ইউয়ানকে অগ্রাধিকার দিতে চাচ্ছেন। ডলারের বিপরীতে চীনা মুদ্রাটির অবমূল্যায়ন রোধ করতে চাচ্ছেন। বর্তমান সিদ্ধান্তটি তারই বহিঃপ্রকাশ।’
অবশ্য এর পরও কোনো কোনো বিনিয়োগকারী ও বাজার পর্যবেক্ষক আগামী দিনগুলোয় মুদ্রানীতি শিথিল হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশটি চলতি বছরের গোড়ার দিকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। সে প্রবণতা অব্যাহত থাকলে সুদহার মুদ্রানীতি শিথিল করা অসম্ভব না। অবশ্য পিবিওসি দাবি করেছেন, চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা গতিশীল রাখার জন্য মুদ্রানীতি অনুকূলে রাখা হবে। একই সঙ্গে স্থিতিশীলতা আনা হবে পণ্যের দামে। জাপানভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান নমুরা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ তিং লু বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে দুই দফায় সুদহার কমানো হতে পারে। সর্বশেষ নেয়া সিদ্ধান্তগুলো বাজারে স্থিরতা আনতে ব্যর্থ হয়েছে।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল নিউজের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আগামী দিনগুলোয় লোন প্রাইম রেট তথা এলপিআরের বেঞ্চমার্ক কমিয়ে আনা হবে। আর পাঁচ বছর মেয়াদি এলপিআর কমিয়ে আনা হলে তা ইতিবাচক প্রভাব রাখবে দেশটির অর্থনীতি স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে। পাশাপাশি সহযোগিতা করবে আবাসন খাতের সংকট নিরসনে। দেশটির আবাসন খাত দীর্ঘদিন ধরেই নেতিবাচক প্রবণতায় রয়েছে।