বিশ্ববাজারে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের বিনিময় হার দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৫৭ হাজার ডলার ছুঁয়েছে। বড় বড় কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীরা ডিজিটাল মুদ্রাটিতে অর্থলগ্নি করায় বিনিময় হারে এমন উল্লম্ফন দেখা গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গতকাল বিটকয়েনের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী ইথারের বিনিময় হারও বেড়েছে। এদিন প্রথমবারের মতো ৩ হাজার ২০০ ডলার স্পর্শ করেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভার্চুয়াল মুদ্রাটির বিনিময় হার।
রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময় হার ট্র্যাক করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) সম্প্রতি এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড বা ইটিএফের মাধ্যমে বিটকয়েনে বিনিয়োগের অনুমোদন দেয়। পাশাপাশি চলতি বছর মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমারও সম্ভবনা রয়েছে। এসব বিষয়ও প্রভাবশালী ডিজিটাল মুদ্রার বিনিময় হারকে আরো শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। গত সোমবারের দুই সেশনে বিটকয়েনের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। এতে ভূমিকা রেখেছে ক্রিপ্টো ইনভেস্টর অ্যান্ড সফটওয়্যার ফার্ম মাইক্রোস্ট্র্যাট জি। সম্প্রতি কোম্পানিটি ১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে ৩ হাজার বিটকয়েন কিনেছে বলে জানিয়েছে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/372089974.jpg[/IMG]
এশিয়ান মর্নিংয়ে বিটকয়েনের দাম ৫৭ হাজার ৩৬ ডলার পর্যন্ত বেড়েছে, যা ২০২১ সালের শেষ থেকে সর্বোচ্চ। এছাড়া ইথারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৭৫ ডলার, যা ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে সর্বোচ্চ। বিটকয়েনের বিনিময় হারে সাম্প্রতিক উল্লম্ফনের পেছনে প্রাথমিক প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে স্পট ইটিএফে অনুমোদন—এমনটাই জানিয়েছেন ফিনটেক ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম ফিনেকিয়া ইন্টারন্যাশনালের রিসার্চ এনালিস্ট মাত্তেও গ্রেকো। এদিকে একদিকে যেমন ভার্চুয়াল মুদ্রার বিনিময় হার বাড়ছে। অন্যদিকে ক্রিপ্টো মুদ্রা সম্পর্কিত অপরাধও উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। ব্লকচেইন ডাটা প্লাটফর্ম চেইন্যালাইসিসের সম্প্রতি এমন তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, ২০২৩ সালের মধ্যে অবৈধ ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে প্রাপ্ত মূল্যের মোট পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪২০ কোটি ডলার, যা ২০২২ সালে সর্বকালের সর্বোচ্চে ওঠা ৩ হাজার ৯৬০ কোটি ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম।
মূলত ক্রিপ্টো স্ক্যামিং ও তহবিল চুরির মতো অপরাধ কমেছে সবচেয়ে বেশি। চেইন্যালাইসিসের প্রতিবেদন থেকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, তা হলো সাইবার অপরাধীদের পছন্দের ক্রিপ্টোকারেন্সি তালিকা থেকে বিটকয়েন দূরে সরে যাওয়া। সামগ্রিকভাবে সব অবৈধ লেনদেনের মাত্র ২৫ শতাংশের কম বিটকয়েন ব্যবহার করে হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।