বিনিয়োগকারীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে গতকাল বুধবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে অস্থিরতা বজায় ছিল। অন্যদিকে পাউন্ড কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে উঠলেও ঝুঁকি কাটেনি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর রয়টার্স।
সমঝোতার ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যেতে একটি চুক্তির খসড়া করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে। কিন্তু দেশটির সংসদ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ-সংক্রান্ত ভোটাভুটিতে ৩৯১ জন আইনপ্রণেতা বিপক্ষে এবং ২৪২ জন পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্ত ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে দুর্ভাবনা তৈরি করেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বুধবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে। নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
বুধবার এশিয়ার প্রধান শেয়ারবাজারগুলো শ্লথগতিতে শুরু হয়। জাপান বাদে এশিয়ার বিস্তৃত সূচক এমএসসিআই হারায় দশমিক ৪৫ শতাংশ। চার মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে স্থানীয় যন্ত্রাংশ ক্রয়াদেশ কমেছে, এ সংবাদে নিক্কেই-২২৫ সূচকের পতন হয় ১ দশমিক ২ শতাংশ। দুদিন বৃদ্ধির পর সাংহাইয়ের ‘ব্লু চিপ’ সিএসআই-৩০০ সূচকের পতন হয় দশমিক ৫ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর ই-মিনি ফিউচার সূচক হ্রাস পায় দশমিক ২ শতাংশ।
সোমবার শেষ মুহূর্তে এসে ইইউ নেতাদের সঙ্গে মে আলোচনায় বসেছিলেন ব্রিটেনের ইইউ বিচ্ছেদ চুক্তিতে পরিবর্তন করা যায় কিনা, তা নিয়ে। ধারণা করা হয়েছিল, এটি সমালোচকদের শান্ত করবে। কিন্তু সংসদে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। এখন ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে কয়েক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা ‘চুক্তিহীন ব্রেক্সিট’ গ্রহণ করবে নাকি আরো কিছুটা সময় চাইবে। ২৯ মার্চ ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বুধবার আরেক দফা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এটি যদি ব্যর্থ হয়, তবে বিচ্ছেদের চূড়ান্ত সময়সীমা বাড়ানো যায় কিনা, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার আরেকটি ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া নিয়ে মঙ্গলবারের ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে পাউন্ড কিছুটা স্থির হয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ব্রেক্সিট-সংক্রান্ত আগামী প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে মুদ্রাটি আরো বেশি অস্থির হয়ে উঠতে পারে। ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়ান ব্যাংকের অর্থনীতি ও বাজার বিভাগের পরিচালক ডেভিড দে গারিস বলেন, আজকের (মঙ্গলবারের) ভোট যে সরকারের বিরুদ্ধে যাবে, তা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার সময় বৃদ্ধির পক্ষে ভোট পড়বে বলে আমরা অনুমান করছি এবং এটি হলে স্টার্লিং কিছুটা স্বস্তি পাবে। তিনি আরো বলেন, এটি এখনো দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশ, যেখানে রাজনৈতিক চাপ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।