PDA

View Full Version : বাণিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কায় এশিয়ার শেয়ারবাজারে পতন



kohit
2019-05-31, 04:25 PM
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরস্পরের প্রতি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বাণিজ্যযুদ্ধ আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার আভাস দিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির দীর্ঘায়িত দ্বৈরথের প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবে ওয়াল স্ট্রিটের পর গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোয় পতন দেখা গেছে। খবর রয়টার্স।

গতকাল সকালের লেনদেনে ইউরোপীয় শেয়ারবাজারের ফিউচারস ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ফলে আগের দিনের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া গেছে। প্যান-আঞ্চলিক ইউরো স্টক্স-৫০ ফিউচারসে দশমিক ৪৬ শতাংশ, জার্মানির ডিএএক্স ফিউচারসে দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং এফটিএসই ফিউচারসে দশমিক ২৫ শতাংশ উত্থান দেখা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্ ী ঝাং হানহুই বলেন, আমরা বাণিজ্যযুদ্ধের বিরুদ্ধে। তাই বলে আমরা বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে ভীত নই। হানহুই ইচ্ছাকৃতভাবে বাণিজ্য বিরোধ উসকে দেয়াকে ‘নগ্ন অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ, অর্থনৈতিক উগ্র জাতীয়তাবাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সম্প্রতি চীনা গণমাধ্যমগুলোয় ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে বেইজিংয়ের বিরল খনিজ ব্যবহারের প্রতিবেদনের পর এমন মন্তব্য করলেন ঝাং হানহুই। বাণিজ্য নিয়ে চীনের সঙ্গে চুক্তির জন্য ওয়াশিংটন এখনো প্রস্তুত নয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর বেইজিংয়ের পাল্টা পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে চীনা গণমাধ্যমগুলো।

এদিকে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা ইকুইটি থেকে সরকারি বন্ডের মতো নিরাপদ সম্পদে বিনিয়োগ স্থানান্তর করছেন। এছাড়া জার্মান ঋণের ইল্ড রেকর্ড নিম্নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

দীর্ঘায়িত বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের প্রভাবে গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোর মধ্যে সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্সে দশমিক ৭ শতাংশ ও হংকংয়ের হাং সেং সূচকে দশমিক ৪ শতাংশ পতন দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই দশমিক ৫ শতাংশ ও অস্ট্রেলিয়ার শেয়ারবাজারগুলো দশমিক ৮৫ শতাংশ হারিয়েছে।

এছাড়া জাপান বাদে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ব্রড এমএসসিআই সূচক নতুন করে চার মাসের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। তবে এ পতনের আগে সূচকটিতে দশমিক ১ শতাংশ উল্লম্ফন দেখা যায়।

শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সুমিতোমো মিত্সুই ডিএস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের জ্যেষ্ঠ কৌশলী সোইচিরো মনজি বলেন, ইকুইটি বাজারগুলো একটি দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যযুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। একটি দীর্ঘায়িত দ্বন্দ্বের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিও পরিবর্তন করছেন।

মনজির মতে, আসন্ন জি২০ সম্মেলন বাজারগুলোর জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনতে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য নিয়ে আবার একটি আলোচনা শুরুর জন্য এ সম্মেলনকে ব্যবহার করার সম্ভাবনা থাকায় এমনটা আশা করা হচ্ছে।

আগামী ২৮-২৯ জুন জাপানে জি২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে অন্য পর্যবেক্ষকরা জি২০ বৈঠক নিয়ে ততটা আশাবাদী নন। বান্নোকবুর্ন গ্লোবাল ফরেক্সের প্রধান বাজার কৌশলী মার্ক শ্যান্ডলার বলেন, জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক কঠোর রাজনৈতিক বাস্তবতার বদলে অনেকটাই আশাবাদী চিন্তা। এ মুহূর্তটি অতীত ও পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে পার্থক্য তৈরি করবে।

বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদের প্রতি আগ্রহের মধ্যেই জার্মানির ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ড হ্রাস পেয়ে তিন বছরের সর্বনিম্ন ঋণাত্মক শূন্য দশমিক ১৭৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে ইল্ড ঋণাত্মক শূন্য দশমিক ২০০ শতাংশ হয়, যা রেকর্ড নিম্ন ছিল।

১০ বছর মেয়াদি মার্কিন বন্ড ইল্ড দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২৬৭ শতাংশ। এর আগে বুধবার ইল্ড ২০ মাসের সর্বনিম্ন ২ দশমিক ২১০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়।


নিউজ বনিকবার্তা