PDA

View Full Version : ফ্রান্সে ৩% কর দিয়ে ব্যবসা করতে হবে অনলাইন জায়ান্টদের



kohit
2019-07-07, 06:48 PM
ইউরোপের মতো বাজারে নামমাত্র কর দিয়ে অনলাইন জায়ান্টগুলোর ব্যবসা করার দিন শেষ! গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজনের মতো বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানির আয়ের ওপর ৩ শতাংশ করারোপের একটি বিল পাস হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) কয়েক বছর ধরে এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চললেও ফ্রান্সই প্রথম এ ব্যাপারে আইন পাস করার পথে হাঁটল। খবর এএফপি।

বিলটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইন জায়ান্টগুলো ফ্রান্সে যে পরিমাণ রাজস্ব আয় করবে, তার ওপর ৩ শতাংশ কর ধার্য করা হবে। তবে যেসব ডিজিটাল কোম্পানির বৈশ্বিক রাজস্ব ৭৫০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি এবং ফ্রান্সে রাজস্ব ২৫ মিলিয়ন ইউরোর বেশি, শুধু সেসব কোম্পানিই এ করের আওতায় আসবে।

বিলটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত স্বল্প করের দেশে সদর দপ্তর স্থাপন করে ফ্রান্সের মতো কয়েকটি দেশে অর্জিত বিপুল রাজস্বে কর এড়িয়ে চলছে গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজনসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি। তাদের এ কৌশল ঠেকাতেই রাজস্বে ৩ শতাংশ কর আরোপ করা হচ্ছে।

ফ্রান্স পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিলটি গত বৃহস্পতিবারই আইনপ্রণেতাদের সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য চলতি সপ্তাহে এটি উচ্চকক্ষ সিনেটে উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ কর বাস্তবায়ন হলে ফ্রান্সে ব্যবসা করছে, এমন ডিজিটাল কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বছরে ৫০০ মিলিয়ন ইউরো আদায় করা যাবে। তবে এ করহার দ্রুতই আরো বাড়ানো উচিত বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, এয়ারবিএনবি এবং উবারের মতো কিছু মার্কিন কোম্পানির পাশাপাশি চীনা ও ইউরোপীয় কয়েকটি কোম্পানিও এ করের আওতাভুক্ত হবে। যেসব কোম্পানি অনলাইন বিজ্ঞাপন বিক্রি করতে গ্রাহকতথ্য ব্যবহার করে, এ আইন প্রাথমিকভাবে শুধু সেসব কোম্পানির জন্যই প্রযোজ্য হবে।

গত বছরের অক্টোবরে বাজেট বক্তৃতায় অনেকটা একই ধরনের প্রস্তাব করেছিলেন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড। তিনি বলেছিলেন, যেসব কোম্পানির বৈশ্বিক রাজস্ব ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি, তাদের আয়ে ২ শতাংশ কর ধার্য করা হবে। এ কর কোম্পানির নিজস্ব আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদায় হবে। তবে এক্ষেত্রে স্টার্টআপ অবশ্যই অব্যাহতি পাবে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এ কর বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছিলেন হ্যামন্ড। আর এ কর থেকে বছরে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড আয়ের লক্ষ্য স্থির করেছিলেন তিনি।

বৃহৎ ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো দাবি করে, তারা স্থানীয় কর আইন মেনেই ব্যবসা করছে। কিন্তু আয়ারল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গের মতো স্বল্প করের দেশে স্থাপিত দপ্তর থেকে ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে ইউরোপের অন্যান্য দেশে কর এড়িয়ে চলার কৌশল অবলম্বন করে তারা। তবে সম্প্রতি ব্রিটেনে গুগল, ফেসবুক ও অ্যামাজন ব্যবসা কৌশল পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। এখন স্থানীয়ভাবে রাজস্ব হিসাব করে তারা।

সার্চ ইঞ্জিন, সোস্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন মার্কেট প্লেসের ওপর করারোপের আলোচনায় ব্রিটেন সবচেয়ে বেশি সরব থাকলেও এখনো তারা এটিকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে পারেনি। আন্তর্জাতিক করপোরেট কর ব্যবস্থার সংস্কারেরও দাবি জানিয়ে আসছে দেশটি। তবে এতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর আয়ে ভাগ বসবে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন নাখোশ হতে পারে, এমন আশঙ্কায় ব্রিটিশ সরকার এ নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এর আগে গত বছরের মার্চে বৃহৎ ডিজিটাল কোম্পানির আয়ের ওপর ৩ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করেছিল ইউরোপীয় কমিশন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের মতো ছোট দেশগুলো তাদের আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে। এছাড়া করারোপের ফলে উদ্ভাবন বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে বলে নরডিক দেশগুলোর আশঙ্কা।

নিউজ বনিকবার্তা