PDA

View Full Version : মার্কেটে বিনিয়োগ সম্পর্কে জন টেমপ্লেটনের কিছু পরামর্শ:



FXBD
2019-08-25, 02:47 PM
8706
শেয়ার কেনার উত্তম হচ্ছে পেসিমিজম অবস্থায় এবং বিক্রি অপটিমিজম অবস্থায়: জন টেমপ্লেটন
আমেরিকার অঙ্গরাজ্য টেনেসী, উইনচেষ্টারে জন্মগ্রহন করা স্যার জন মার্কস টেমপ্লেটন ( ২৯ নভেম্বর ১৯১২- ৮ জুলাই ২০০৮) ছিলেন একজন বিট্রিশ ইনভেস্টর, ব্যাংকার, ফান্ড ম্যানেজার এবং মানব কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ। ১৯৫৪ সালে মিউচ্যুয়াল ফান্ড মার্কেটে প্রবেশ করা এবং টেমপ্লেটন গ্রোথ ফান্ড গঠন করার মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে উঠেন বিনিয়োগ জগতের পরিচিত নাম। ১৯৯৯ সালে মানি ম্যাগাজিন ম্যাগাজিন জন টেমপ্লেটনকে “শতাব্দির সেরা স্টক পিকার যুক্তিবিদ” নামে ভূষিত করেন।
বাল্যজীবন, ব্যক্তিগত জীবন ও শিক্ষা:
১৯১২ সালের ২৯ নভেম্বর স্যার জন মার্কস টেমপ্লেটন উইনচেষ্টার, টেনেসী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহন করেন। ১৯৩৪ সালে ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে এম.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। জন টেমপ্লেটন একজন সিএফএ চ্যার্টারহোল্ডার ১৯৩৭ সালে টেমপ্লেটন জুডিথ ফোককে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। ১৯৫১ সালে তার স্ত্রী জুডিথ মটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৫৮ সালে টেমপ্লেটন আইরিন নিল্ডস বাটলারের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী ১৯৯৩ সালে মারা যান। ২০০৮ সালের ৮ জুলাই ৯৫ বছর বয়সে জন মার্কস টেমপ্লেটন মারা যান।

ইনভেস্টমেন্ট ক্যারিয়ার:
১৯৩০ সালে মন্দাবস্থায় টেমপ্লেটন নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ১ ডলারের নিচে সেগুলোর প্রতিটি কোম্পানির ১০০টি করে শেয়ার কেনেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টেমপ্লেটন যেসব কোম্পানির শেয়ার ১ ডলারের নিচে ছিলো সেগুলোর শেয়ার ক্রয় করেন এবং পরবর্তীতে এসব কোম্পানির শেয়ারই তাকে ধনী ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলে। বিশ্বব্যাপী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বৈচিত্র আনার পরই টেমপ্লেটন বিলিনিয়র হিসেবে পরিণত হন। ১৯৫৪ সালে তিনি টেমপ্লেটন গ্রোথ ফান্ড (ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড) প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৬০ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি জাপানে বিনিয়োগ করেন। টেমপ্লেটন নিউক্লিয়ার এনার্জি, কেমিকেলস, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি শিল্পে বিনিয়োগ করেন। টেমপ্লেটনের যখন ৬৬ মিলিয়ন ডলারের পাঁচটি ফান্ড তৈরি করেন তখন তিনি এগুলোকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করান। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি ট্যাকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের চেয়ে ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিসকে বেশি গুরুত্ব দেন।

বিনিয়োগ সম্পর্কে জন টেমপ্লেটনের পরামর্শ:
০১. মনে রেখো, কোনো বিনিয়োগই চিরদিনের জন্য নয়।
০২। প্যানিক হইও না, ক্রাশের আগে সেল করো; পরে নয়।
০৩। বুল মার্কেটের জন্ম হয় মন্দা (pessimism) থেকে, বেড়ে ওঠে সংশয়ের (Skepticism) মধ্যে, পরিণত হয় আশাবাদে (Optimism) এবং মৃত্যুবরণ করে রমরমা (Euphoria) অবস্থায়। তাই শেয়ার কেনার উত্তম সময় হচ্ছে পেসিমিজম অবস্থায় এবং বিক্রির সর্বোকৃষ্ট সময় হচ্ছে অপটিমিজম অবস্থায়।
০৪। একজন জ্ঞানী বিনিয়োগকারীর কাছে সফলতা হচ্ছে সর্বদা নতুন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা।
০৫। শেয়ার বিক্রি করার একটি কারণই থাকতে পারে তা হচ্ছে ধারণকৃত শেয়ারের চেয়ে আকর্ষণীয় অন্য শেয়ার পাওয়া। যতক্ষণ না ধারণকৃত শেয়ারের চেয়ে আকর্ষণীয় অন্য শেয়ার পাওয়া যায় ততক্ষণ শেয়ার ধরে রাখা উচিত।
০৬। আপনার ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।
০৭। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের একটিই উদ্দেশ্য হচ্ছে, ট্যাক্স কাটার পর সর্বোচ্চ কত টাকা রিয়েল রিটার্ন পাওয়া যাবে।
০৮। আপনার ভুলের জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুন। হতাশ হয়ে লোকসান পূরণ করার জন্য উত্তেজনায় বড় ধরণের রিস্ক নেবেন না। প্রতিটি ভুলই একটি করে শিক্ষা হিসেবে ধরে নিন এবং ভবিষ্যতে একই ভুল যেন না হয় সে বিষয়ে সচেতন হন। নিজের এবং অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।
০৯। অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠানের পেশাজীবীদের চেয়ে ভালো বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত তৈরি করাই আপনার সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ।
১০। কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত আনন্দকে লুকিয়ে রাখুন।