PDA

View Full Version : মার্কেটের বাবল কখনোই হঠাৎ তৈরি হয় না: জর্জ সরোস



FXBD
2019-08-25, 02:50 PM
8707
সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের মধ্যে (ফোর্বস ৪০০) ৬০তম ধনী হচ্ছেন হাঙ্গেরিয়ান জর্জ সরোস। ১৯৯২ সালে বৃটিশ পাউন্ড নিয়ে একদিনের ব্যবসায় তিনি ১ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। এ কারণে তিনি “the man who broke the Bank of England.” খ্যাতিতে ভূষিত। ১৯৯২ সালে দ্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে দেউলিয়া করার প্রধান কারণ ছিলেন জর্জ সরোস। বলা হয়ে যাকে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে সরিয়ে সেখানে বারাক ওবামাকে নির্বাচিত করার পেছনে তারই হাত ছিলো। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী এবং মুদ্রা ব্যবসায়ী হিসেবে জর্জ সরোস অত্যন্ত পরিচিত নাম।

জর্জ সরোস কে?:
১৯৩০ সালের ১২ আগস্ট হাঙ্গেরি’র বুধাপেস্টে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জর্জ সরোস জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪০ সালের পর তিনি লন্ডনে ইমিগ্রান্ট হয়ে যান। সেখানে তিনি অর্থনীতির ওপর পড়াশোনা করে ডিগ্রী নিয়ে ১৯৫৬ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে গমন করেন এবং এই নিউ ইয়র্কেই তিনি ফিন্যান্স জগতে প্রবেশ করেন। বর্তমানে জর্জ সরোস ৮ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা) মালিক এবং সরোস ফান্ড ম্যানেজমেন্টে এলএসসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনী:
জর্জ সরোসের জীবনে তিনটি বিয়ে হয় এবং দু’টি ডিভোর্স হয়। ১৯৬০ সালে তিনি অন্নালাইজ উইটসচককে বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর এই ঘরে তার তিন সন্তানের জন্ম হয়। ১৯৮৩ সালে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর একই বছর জর্জ সরোস তার চেয়ে ২৫ বছর কম বয়সী সুশান ওয়েভার নামে আরেক মহিলাকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী’র ঘরে তার দুই সন্তানের জন্ম হয়। ২০০৫ দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে জর্জ সরোসের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। অত:পর ২০০৫ সালে জর্জ সরোস তার চেয়ে ৪২ বছরের ছোটো তামিকো এম.বলটন নামে আরেকজন মহিলার সঙ্গে পরিচিত হন এবং ২০১৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সরোস তার সঙ্গে তৃতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন।

ইনভেস্টমেন্ট ক্যারিয়ার:
১৯৫৪ সালে লন্ডনের সিঙ্গার অ্যান্ড ফ্রাইডলেন্ডার নামে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকে জর্জ সরোস তার ফিন্যান্সিয়াল ক্যারিয়ার শুরু করেন। প্রথমে কেরানী পদে চাকুরি নিলেও পরবর্তীতে তিনি আর্বিট্রেজ ডিপার্টমেন্টে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে তার একজন সহকর্মী’র পরামর্শে নিউইয়র্কে এফ.এম. মায়ের ব্রোকারেজ হাউজে তিনি যোগ দেন। এই ব্রোকারেজ হাউজে তিনি আর্বিট্রেজ ট্রেডার হিসেবে ৪ বছর কাজ করেন। ১৯৫৯ সালে জর্জ সরোস রেদিম অ্যান্ড কো. প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন এবং ৫ বছরে সেখান থেকে তিনি ৫ লাখ ডলার আয় করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয়ান সিকিউরিটিজ হাউজে অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে সরোস ৪০ লাখ ডলারের একটি ডাবল ঈগল হেজ ফান্ড গঠন করেন এবং সেখান তার ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার বিনিয়োগ ছিলো। ১৯৭৩ সালে ডাবল ঈগল ফান্ডটি ১ কোটি ২০ লাখ ডলারে পরিণত হয় এবং এটি সরোস ফান্ডে রূপান্তরিত হয়। প্রতি বছর জর্জ সরোস এবং তার পার্টনার জিম রোজার্স ফান্ডটি থেকে ২০ শতাংশ মুনাফা করতে থাকে। ১৯৭০ সালে জর্জ সরোস তার সরোস ফান্ড ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে এই ফান্ডের নাম পরিবর্তন করে কোয়ান্টাম ফান্ড নাম রাখা হয় এবং এই ফান্ডের ব্যবস্থাপনা মাধ্যমেই মূলত জর্জ সরোস ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান। ১৯৮১ সালে ৪০ কোটি, ২০১১ সালে ১০০ কোটি এবং ২০১৩ সালে ৫৫০ কোটি ডলারের উপনীত হয়ে হেজ ফান্ড ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীর সবচেয়ে সফল ব্যক্তি হন জর্জ সরোস।

জর্জ সরোসের কিছু বাণী:
০১। আমি ধনী হতে পেরেছি কারণ আমি জানি কখন আমি ভুল। আমি সাধারণত আমার ভুল চিহ্নিত করার মাধ্যমেই টিকে থাকি। যখনই আমি ভুলের মধ্যে থাকি তখনই পিঠ ব্যাথায় ভুগি। আপনি যখনই বুঝবেন আপনি ভুল, তখনই আপনাকে ফাইট করতে হবে। একবার যখন ভুল থেকে বের হয়ে আসবেন তখনই দেখবেন পিঠ ব্যাথা সরে গেছে।
০২। স্টক মার্কেটের বাবল বা ঊর্ধ্বগতি কখনোই হঠাৎ বা অপ্রত্যাশিতভাবে তৈরি হয় না। বাস্তবতার নিরিখেই তা তৈরি হয়। কিন্তু ভুল ধারণায় সে বাস্তবতা বিকৃত হয়।
০৩। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট সাধারণত অনিশ্চিত হয়ে থাকে। তাই এখানে বিনিয়োগকারীর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আইডিয়া বের করার যোগ্যতা থাকা লাগে।
০৪। ব্যবসায়ী হওয়ার আগে আমি একজন মানুষ।
০৫। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের বাস্তবতা হচ্ছে এটি নিজে নিজেই অস্থিতিশীল হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে এটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে কিন্তু সবসময় ভারসাম্যের মধ্যেই থাকে।
০৬। যে রিসোর্স বিদ্যমান নেই তা ডেভেলপ করার চেয়ে বিদ্যমান রিসোর্স ব্যবহার করাই অধিকতর উত্তম।

Hasinapx
2019-08-25, 03:15 PM
ভাল লাগলো উপরোক্ত পোস্টটি, ধন্যবাদ আপনাকে । নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মাথায় থাকলে আমাদের বেশ উপকার দিবে।
জর্জ সরোসের কিছু বাণী:
০১। আমি ধনী হতে পেরেছি কারণ আমি জানি কখন আমি ভুল। আমি সাধারণত আমার ভুল চিহ্নিত করার মাধ্যমেই টিকে থাকি। যখনই আমি ভুলের মধ্যে থাকি তখনই পিঠ ব্যাথায় ভুগি। আপনি যখনই বুঝবেন আপনি ভুল, তখনই আপনাকে ফাইট করতে হবে। একবার যখন ভুল থেকে বের হয়ে আসবেন তখনই দেখবেন পিঠ ব্যাথা সরে গেছে।
০২। স্টক মার্কেটের বাবল বা ঊর্ধ্বগতি কখনোই হঠাৎ বা অপ্রত্যাশিতভাবে তৈরি হয় না। বাস্তবতার নিরিখেই তা তৈরি হয়। কিন্তু ভুল ধারণায় সে বাস্তবতা বিকৃত হয়।
০৩। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট সাধারণত অনিশ্চিত হয়ে থাকে। তাই এখানে বিনিয়োগকারীর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আইডিয়া বের করার যোগ্যতা থাকা লাগে।
০৪। ব্যবসায়ী হওয়ার আগে আমি একজন মানুষ।
০৫। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের বাস্তবতা হচ্ছে এটি নিজে নিজেই অস্থিতিশীল হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে এটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে কিন্তু সবসময় ভারসাম্যের মধ্যেই থাকে।
০৬। যে রিসোর্স বিদ্যমান নেই তা ডেভেলপ করার চেয়ে বিদ্যমান রিসোর্স ব্যবহার করাই অধিকতর উত্তম।