FXBD
2019-10-24, 01:22 PM
9163
ট্রেড ব্যাল্যান্স বা বাণিজ্য ভারসাম্য রিপোর্ট নির্দেশ করে কোন দেশের আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের পার্থক্যকে। শুধু পণ্যই নয়, সেবা খাতও এর অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত প্রতি মাসে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। আর তাই, পূর্ববর্তী মাসের আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের পার্থক্যই রিপোর্টে নির্দেশিত হয়।রপ্তানি চাহিদার সাথে কোন দেশের মুদ্রার চাহিদা সরাসরি সম্পর্কিত। কেননা, রপ্তানি আমদানি থেকে বেশি হলে, অন্য দেশের আমদানি কারকদের সে দেশের মুদ্রা কিনতে হবে আমদানি ব্যায় পরিশোধ করার জন্য (বড় দেশগুলোর ক্ষেত্রেই এটি বেশি প্রযোজ্য)। আর তাতে সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রার চাহিদা বাড়বে ও মুদ্রা শক্তিশালী হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি অব্যাহত আছে বিগত বিশ বছর ধরেই। দেশটি যা রপ্তানি করে, আমদানি করে তার থেকে বেশি। যদিও দেশটি বহুদিন ধরে অর্থনীতির সম্প্রসারণ ধরে রেখেছে এবং এখনও তা অব্যাহত আছে, তবুও দীর্ঘমেয়াদে বিষয়টি উদ্বেগজনক। কেননা, যে হারে দেশটি থেকে অর্থস্থানান্তরিত হচ্ছে অন্য দেশে, সে হারে ফেরত আসছে না।
ধরা যাক, এক বছরে চীনে যুক্তরাষ্ট্র পন্য রপ্তানি করল ১ ট্রিলিয়ন ডলারের, কিন্তু আমদানি করল ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের। এক্ষেত্রে বানিজ্য ঘাটতি হচ্ছে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের। প্রশ্ন হচ্ছে, এই দুই ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে চীন কি করবে? কারন চীনের মুদ্রা হচ্ছে ইউয়ান। চীন যেটা করতে পারে, তা হচ্ছে এই ডলার তারা রিজার্ভ হিসেবে রাখতে পারে অথবা ডলারে দিয়ে বিনিয়োগ করা সম্ভব এমন কোথাও বিনিয়োগ করতে পারে । রিজার্ভ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট অনেকের বেশি ডলার চীনের কেন্দ্রিয় ব্যাংকে জমা রাখা দেশটির জন্য লাভজনক নয় । কারন, তাতে কেন্দ্রিয় ব্যাংক কোনো সুদ বা মুনাফা পাচ্ছেনা। তাই, তারা চেষ্টা করবে এই অতিরিক্ত ডলার বিনিয়োগের জন্য ।বাস্তব ক্ষেত্রে যা হয়, অধিকাংশ দেশই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সিকিউরিটি, যেমন –সরকারি ঋণপত্রে এই ডলার বিনিয়োগ করে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ থেকে সরকারী বন্ডে বিনিয়োগ তুলনা মূলক কম লাভজনক কিন্তু অনেক বেশি নিরাপদ। কেননা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে কিন্তু একটি দেশের সরকার দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম (যদিও সাম্প্রতিক কালে গ্রীসের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, তা প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ যেভাবে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছে, তা কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য নেবে না)।
কি হতে পারে যদি বছরের পর বছর বানিজ্য ঘাটতি বাড়তেই থাকে ?
সরকারী ঋণ পত্রে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমান আরও বাড়বে। আর যেহেতু, এই ঋণপত্রের / বন্ডের উপর সরকারকে সুদ দিতে হয়, তার মানে আরও বেশি ডলার দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বা সরকারি ঋণ আরও বাড়তে যাচ্ছে ।এর ফলশ্রুতিতে দুইটি সমস্যা তৈরি হতে পারে –প্রথমত, ডলার ঘাটতি মোকাবেলায় আরও ডলার ছাপাতে হবে যা ডলারকে নিঃসন্দেহে দুর্বল করে দিবে এবং রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে এর গ্রহণ যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে ।দ্বিতীয়ত, সরকার বন্ডের সুদের হার কমিয়ে দিলে, অন্যদেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী বন্ডে বিনিয়োগে উৎসাহ হারাবে। সেইক্ষেত্রে তারা চাইবে তাদের হাতে থাকা ডলারকে অন্য মুদ্রায় রূপান্তরিত করে তা দিয়ে তুলনামূলক বেশি সুদের কোন বন্ডে বিনিয়োগ করতে। এর ফলে ডলারের চাহিদা কমবে এবং অবধারিত ভাবেই ডলার দুর্বল হবে ।অর্থাৎ, সম্ভাব্য দুটি সমস্যারই পরিসমাপ্তি হতে যাচ্ছে ডলারের দুর্বল হওয়ার মধ্যে দিয়ে। এর ফলে যে পন্য আগে যুক্তরাষ্ট্র ৩ ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে আমদানি করতে পারত, তা আমদানি করতে যুক্তরাষ্ট্র কে হয়তবা ৪ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হতে পারে যা বানিজ্য ঘাটতি কে আরও বৃদ্ধি করবে।
ট্রেড ব্যাল্যান্স বা বাণিজ্য ভারসাম্য রিপোর্ট নির্দেশ করে কোন দেশের আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের পার্থক্যকে। শুধু পণ্যই নয়, সেবা খাতও এর অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত প্রতি মাসে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। আর তাই, পূর্ববর্তী মাসের আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের পার্থক্যই রিপোর্টে নির্দেশিত হয়।রপ্তানি চাহিদার সাথে কোন দেশের মুদ্রার চাহিদা সরাসরি সম্পর্কিত। কেননা, রপ্তানি আমদানি থেকে বেশি হলে, অন্য দেশের আমদানি কারকদের সে দেশের মুদ্রা কিনতে হবে আমদানি ব্যায় পরিশোধ করার জন্য (বড় দেশগুলোর ক্ষেত্রেই এটি বেশি প্রযোজ্য)। আর তাতে সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রার চাহিদা বাড়বে ও মুদ্রা শক্তিশালী হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি অব্যাহত আছে বিগত বিশ বছর ধরেই। দেশটি যা রপ্তানি করে, আমদানি করে তার থেকে বেশি। যদিও দেশটি বহুদিন ধরে অর্থনীতির সম্প্রসারণ ধরে রেখেছে এবং এখনও তা অব্যাহত আছে, তবুও দীর্ঘমেয়াদে বিষয়টি উদ্বেগজনক। কেননা, যে হারে দেশটি থেকে অর্থস্থানান্তরিত হচ্ছে অন্য দেশে, সে হারে ফেরত আসছে না।
ধরা যাক, এক বছরে চীনে যুক্তরাষ্ট্র পন্য রপ্তানি করল ১ ট্রিলিয়ন ডলারের, কিন্তু আমদানি করল ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের। এক্ষেত্রে বানিজ্য ঘাটতি হচ্ছে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের। প্রশ্ন হচ্ছে, এই দুই ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে চীন কি করবে? কারন চীনের মুদ্রা হচ্ছে ইউয়ান। চীন যেটা করতে পারে, তা হচ্ছে এই ডলার তারা রিজার্ভ হিসেবে রাখতে পারে অথবা ডলারে দিয়ে বিনিয়োগ করা সম্ভব এমন কোথাও বিনিয়োগ করতে পারে । রিজার্ভ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট অনেকের বেশি ডলার চীনের কেন্দ্রিয় ব্যাংকে জমা রাখা দেশটির জন্য লাভজনক নয় । কারন, তাতে কেন্দ্রিয় ব্যাংক কোনো সুদ বা মুনাফা পাচ্ছেনা। তাই, তারা চেষ্টা করবে এই অতিরিক্ত ডলার বিনিয়োগের জন্য ।বাস্তব ক্ষেত্রে যা হয়, অধিকাংশ দেশই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সিকিউরিটি, যেমন –সরকারি ঋণপত্রে এই ডলার বিনিয়োগ করে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ থেকে সরকারী বন্ডে বিনিয়োগ তুলনা মূলক কম লাভজনক কিন্তু অনেক বেশি নিরাপদ। কেননা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে কিন্তু একটি দেশের সরকার দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম (যদিও সাম্প্রতিক কালে গ্রীসের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, তা প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ যেভাবে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছে, তা কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য নেবে না)।
কি হতে পারে যদি বছরের পর বছর বানিজ্য ঘাটতি বাড়তেই থাকে ?
সরকারী ঋণ পত্রে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমান আরও বাড়বে। আর যেহেতু, এই ঋণপত্রের / বন্ডের উপর সরকারকে সুদ দিতে হয়, তার মানে আরও বেশি ডলার দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বা সরকারি ঋণ আরও বাড়তে যাচ্ছে ।এর ফলশ্রুতিতে দুইটি সমস্যা তৈরি হতে পারে –প্রথমত, ডলার ঘাটতি মোকাবেলায় আরও ডলার ছাপাতে হবে যা ডলারকে নিঃসন্দেহে দুর্বল করে দিবে এবং রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে এর গ্রহণ যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে ।দ্বিতীয়ত, সরকার বন্ডের সুদের হার কমিয়ে দিলে, অন্যদেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী বন্ডে বিনিয়োগে উৎসাহ হারাবে। সেইক্ষেত্রে তারা চাইবে তাদের হাতে থাকা ডলারকে অন্য মুদ্রায় রূপান্তরিত করে তা দিয়ে তুলনামূলক বেশি সুদের কোন বন্ডে বিনিয়োগ করতে। এর ফলে ডলারের চাহিদা কমবে এবং অবধারিত ভাবেই ডলার দুর্বল হবে ।অর্থাৎ, সম্ভাব্য দুটি সমস্যারই পরিসমাপ্তি হতে যাচ্ছে ডলারের দুর্বল হওয়ার মধ্যে দিয়ে। এর ফলে যে পন্য আগে যুক্তরাষ্ট্র ৩ ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে আমদানি করতে পারত, তা আমদানি করতে যুক্তরাষ্ট্র কে হয়তবা ৪ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হতে পারে যা বানিজ্য ঘাটতি কে আরও বৃদ্ধি করবে।