Log in

View Full Version : ভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় পথ খুঁজছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো



kohit
2020-03-09, 05:08 PM
অর্থনীতিতে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবজনিত সংকট মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চাপ নিয়েই নতুন সপ্তাহে প্রবেশ করছে বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। গত সপ্তাহে মার্কিন অর্থনীতিকে মন্দার হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি বিনিয়োগে আস্থা ফিরিয়ে আনতে জরুরিভিত্তিতে সুদের হার কমায় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড), যা অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করেছে। এদিকে ফেডের সুদহার কমানোর পদক্ষেপে অর্থনৈতিক আত্মবিশ্বাস খুব একটা ফেরেনি। এ অবস্থায় ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাধাগ্রস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি ফিরিয়ে আনতে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের।

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট আর্থিক ধাঁধার সমাধানে আগামী বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেবে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি)। এক্ষেত্রে ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দের পক্ষে ফেডের চেয়ে খুব বেশি কিছু করা সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে। তাকেও সম্ভবত মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো সুদহার হ্রাসের ঘোষণা দিতে হবে।

এ বিষয়ে ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদ জেমি রাশ বলেন, বাজার শান্ত করতে ফেডের সুদহার হ্রাসের পদক্ষেপ খুব একটা কাজে আসেনি। এর মানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে তাদের সীমিত সুযোগ খুব সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে ইসিবির সমস্যা হলো, কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হলে আর্থিক অবস্থা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। রাশ মনে করছেন, এ অবস্থায় ফ্রাংকফুর্টে নীতিনির্ধারকরা আমানতের ওপর সুদহার ১০ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারেন। অন্যান্য স্থানেও বিনিয়োগকারীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের নেয়া পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে থাকবেন। এর মধ্যে আগামী বুধবারের বাজেটে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করবে যুক্তরাজ্য। এতে এমন কিছু আর্থিক পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে, যেগুলো কার্যকরে সম্ভবত ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সহায়তা নেয়া হবে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর মার্ক কার্নে পুরো গত সপ্তাহ এ বিষয়ে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন, ভাইরাস সংক্রমণের কারণে জনসাধারণের মনোবল ভেঙে গেলে, দেশটির অর্থনীতিতে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হবে। তার মতো অন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানরাও বর্তমানে উত্কণ্ঠায় দিন পার করছেন। কিন্তু বিশ্বজুড়ে একসঙ্গে শুরু হওয়া এ দুর্যোগ মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুধু মার্ক কার্নেই নন, তার মতো দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও। আশা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে তিনি কার্নের সঙ্গে আরো বৈঠক করবেন। এছাড়া ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে জি২০ জোটের সদস্য দেশ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গেও আলোচনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক উন্নয়শীল দেশের জন্য ১ হাজার ও ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের সুদমুক্ত ঋণের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য উপকরণ কিনতে আরো ৪ হাজার কোটি ডলারের জরুরি তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে অর্থ সংকটে পড়া দেশগুলোর জন্য।

এদিকে গত শনিবার প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, চীনে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে রফতানি কমেছে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। অন্যদিকে স্থানীয় সময় সোমবার জাপান দেশটির পুনঃসংশোধিত জিডিপি পূর্বাভাস প্রকাশ করবে। একইভাবে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় গ্রহণীয় নীতির বিষয়ে বক্তব্য দেবেন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বণিক বার্তা