DhakaFX
2020-06-14, 01:47 PM
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রেকর্ড উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ এক মাস (৩১ জুলাই পর্যন্ত) বাড়িয়েছে অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিস (ওপেক) ও এর মিত্র দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। এদিকে মহামারী পরিস্থিতি অনেকটা সামলে ওঠায় চীনসহ অনেক দেশে পণ্যটির চাহিদা বেড়েছে। এর জের ধরে আগামী মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা, যা পণ্যটির দাম বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। যুক্তরাজ্যভিত্তি বিনিয়োগ ব্যাংক কোম্পানি এইচএসবিসি সম্প্রতি চলতি বছর জ্বালানি তেলের দামের পূর্বাভাস বাড়িয়ে দিয়েছে। খবর অয়েলপ্রাইসডটকম ও ইকোনমিক টাইমস।
এইচএসবিসির গ্লোবাল রিসার্চ বিভাগের দেয়া সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ৩৯ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) প্রতি ব্যারেলের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ৩৪ ডলার ৬০ সেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির আগের পূর্বাভাসে যা ছিল যথাক্রমে ৩৭ ডলার ও ৩২ ডলার ৮০ সেন্ট। অর্থাৎ আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ ডলার ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ ডলার ৮০ সেন্ট বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির নোটে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের বাকি সময়ে জ্বালানি তেলের চাহিদা কীভাবে এবং কতটা পুনরুদ্ধার হবে তা এখনো অনিশ্চিত। বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতির ওপর নির্ভর করছে। তবে ওপেক প্লাস জোটের দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল উত্তোলন হ্রাস আগামী মাসে বাজারে জ্বালানি তেলের উদ্বৃত্ত সরবরাহ কমিয়ে আনতে পারে, যা পণ্যটির দামে তুলনামূলক চাঙ্গা ভাব ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। যদিও পুরো বিষয়টা এখনো অনিশ্চিত এবং সামনে পণ্যটির বাজারকে আরো অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে পারে।
নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার। আগে থেকে ধুঁকতে থাকা পণ্যটির বাজার মহামারীতে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। বৈশ্বিক চাহিদার অপ্রত্যাশিত হারে কমতে শুরু করে। এর সঙ্গে লাগামহীনভাবে কমতে শুরু করে দাম। কমতে কমতে এপ্রিলের শেষদিকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শূন্য ডলারের নিচে নেমে যায়।
অবশ্য শুধু চাহিদার পতন নয়, ওপেক প্লাসের ব্যর্থ বৈঠক পণ্যটির দাম হ্রাসের পেছনে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। রাশিয়ার আপত্তিতে মার্চের শুরুর দিকে চুক্তি ছাড়া শেষ হয় জোটটির বৈঠক। এরপর সৌদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যে পণ্যটি নিয়ে মূল্যযুদ্ধ শুরু হয়, যার প্রথম আক্রমণটা এসেছিল সৌদি আরবের পক্ষ থেকে। এ সময় সৌদি আরব জ্বালানি তেলের উত্তোলন রেকর্ড বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রধান রফতানি বাজারকে টার্গেট করে পণ্যটির রফতানি মূল্যে বিশেষ ছাড় দিতে শুরু করে। একদিকে মহামারীতে মন্দা চাহিদা, অন্যদিকে দুই দেশের মূল্যযুদ্ধ—সব মিলিয়ে জ্বালানি তেলের বাজার বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে। অবশেষে এপ্রিলে পুনরায় বৈঠকে বসতে ঐকমত্যে পৌঁছায় ওপেক ও ননওপেক জোটের সদস্যরা।
বৈঠকে ওপেকভুক্ত দেশ, রাশিয়া এবং অন্য সহযোগী দেশগুলো মে ও জুনজুড়ে জ্বালানি তেলের উত্তোলন দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পণ্যটির মোট বৈশ্বিক সরবরাহের ১০ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী, জোটের সব সদস্য দেশ মোট সক্ষমতার চেয়ে ২৩ শতাংশ জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে আনবে। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়া প্রত্যেকেই আলাদাভাবে পণ্যটির উত্তোলন কমাবে দৈনিক গড়ে ২৫ লাখ ব্যারেল। এছাড়া ইরাক একা দৈনিক গড়ে কমাবে ১০ লাখ ব্যারেল। ওপেকের ইতিহাসে এটাই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সর্বোচ্চ জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাস চুক্তি।
এদিকে চুক্তিটি ধীরে ধীরে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করে। গত দুই মাসে জ্বালানি তেলের দাম বছরের প্রথম দিকের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে গত ৭ এপ্রিল বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক প্লাস জোট। ঘোষণাটির পর জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ৪২ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এদিকে বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল ভোক্তা দেশ চীনসহ অনেক দেশে পণ্যটির চাহিদায় উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। ফলে আগামী মাসে বাজারে জ্বালানিটির উদ্বৃত্ত সরবরাহ কমে ঘাটতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এদিকে টানা ছয়দিন চাঙ্গা ভাবের পর সম্প্রতি জ্বালানি তেলের বাজার ফের নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ফের অবনতি হয়েছে এবং দ্বিতীয় দফার আক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি তেল ভোক্তা দেশগুলোর একটি। ফলে দেশটির এ রকম অবস্থায় পণ্যটির চাহিদায় ফের ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা, যা দাম কমাতে প্রভাব ফেলছে। সর্বশেষ কার্যদিবসে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের দাম দাঁড়িয়েছে ৩৭ ডলার ২১ সেন্ট, আগের দিনের তুলনায় যা ১ ডলার ৩৪ সেন্ট বা সাড়ে ৩ শতাংশ কম। এ সময় আগের দিনের তুলনায় ১ ডলার ৩৭ সেন্ট বা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ডব্লিউটিআইয়ের দাম ৩৪ ডলার ৯৭ সেন্টে নেমেছে।
11252
এইচএসবিসির গ্লোবাল রিসার্চ বিভাগের দেয়া সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ৩৯ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) প্রতি ব্যারেলের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ৩৪ ডলার ৬০ সেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির আগের পূর্বাভাসে যা ছিল যথাক্রমে ৩৭ ডলার ও ৩২ ডলার ৮০ সেন্ট। অর্থাৎ আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ ডলার ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ ডলার ৮০ সেন্ট বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির নোটে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের বাকি সময়ে জ্বালানি তেলের চাহিদা কীভাবে এবং কতটা পুনরুদ্ধার হবে তা এখনো অনিশ্চিত। বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতির ওপর নির্ভর করছে। তবে ওপেক প্লাস জোটের দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল উত্তোলন হ্রাস আগামী মাসে বাজারে জ্বালানি তেলের উদ্বৃত্ত সরবরাহ কমিয়ে আনতে পারে, যা পণ্যটির দামে তুলনামূলক চাঙ্গা ভাব ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। যদিও পুরো বিষয়টা এখনো অনিশ্চিত এবং সামনে পণ্যটির বাজারকে আরো অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে পারে।
নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার। আগে থেকে ধুঁকতে থাকা পণ্যটির বাজার মহামারীতে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। বৈশ্বিক চাহিদার অপ্রত্যাশিত হারে কমতে শুরু করে। এর সঙ্গে লাগামহীনভাবে কমতে শুরু করে দাম। কমতে কমতে এপ্রিলের শেষদিকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শূন্য ডলারের নিচে নেমে যায়।
অবশ্য শুধু চাহিদার পতন নয়, ওপেক প্লাসের ব্যর্থ বৈঠক পণ্যটির দাম হ্রাসের পেছনে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। রাশিয়ার আপত্তিতে মার্চের শুরুর দিকে চুক্তি ছাড়া শেষ হয় জোটটির বৈঠক। এরপর সৌদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যে পণ্যটি নিয়ে মূল্যযুদ্ধ শুরু হয়, যার প্রথম আক্রমণটা এসেছিল সৌদি আরবের পক্ষ থেকে। এ সময় সৌদি আরব জ্বালানি তেলের উত্তোলন রেকর্ড বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রধান রফতানি বাজারকে টার্গেট করে পণ্যটির রফতানি মূল্যে বিশেষ ছাড় দিতে শুরু করে। একদিকে মহামারীতে মন্দা চাহিদা, অন্যদিকে দুই দেশের মূল্যযুদ্ধ—সব মিলিয়ে জ্বালানি তেলের বাজার বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে। অবশেষে এপ্রিলে পুনরায় বৈঠকে বসতে ঐকমত্যে পৌঁছায় ওপেক ও ননওপেক জোটের সদস্যরা।
বৈঠকে ওপেকভুক্ত দেশ, রাশিয়া এবং অন্য সহযোগী দেশগুলো মে ও জুনজুড়ে জ্বালানি তেলের উত্তোলন দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পণ্যটির মোট বৈশ্বিক সরবরাহের ১০ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী, জোটের সব সদস্য দেশ মোট সক্ষমতার চেয়ে ২৩ শতাংশ জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে আনবে। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়া প্রত্যেকেই আলাদাভাবে পণ্যটির উত্তোলন কমাবে দৈনিক গড়ে ২৫ লাখ ব্যারেল। এছাড়া ইরাক একা দৈনিক গড়ে কমাবে ১০ লাখ ব্যারেল। ওপেকের ইতিহাসে এটাই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সর্বোচ্চ জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাস চুক্তি।
এদিকে চুক্তিটি ধীরে ধীরে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করে। গত দুই মাসে জ্বালানি তেলের দাম বছরের প্রথম দিকের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে গত ৭ এপ্রিল বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক প্লাস জোট। ঘোষণাটির পর জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ৪২ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এদিকে বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল ভোক্তা দেশ চীনসহ অনেক দেশে পণ্যটির চাহিদায় উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। ফলে আগামী মাসে বাজারে জ্বালানিটির উদ্বৃত্ত সরবরাহ কমে ঘাটতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এদিকে টানা ছয়দিন চাঙ্গা ভাবের পর সম্প্রতি জ্বালানি তেলের বাজার ফের নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ফের অবনতি হয়েছে এবং দ্বিতীয় দফার আক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি তেল ভোক্তা দেশগুলোর একটি। ফলে দেশটির এ রকম অবস্থায় পণ্যটির চাহিদায় ফের ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা, যা দাম কমাতে প্রভাব ফেলছে। সর্বশেষ কার্যদিবসে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের দাম দাঁড়িয়েছে ৩৭ ডলার ২১ সেন্ট, আগের দিনের তুলনায় যা ১ ডলার ৩৪ সেন্ট বা সাড়ে ৩ শতাংশ কম। এ সময় আগের দিনের তুলনায় ১ ডলার ৩৭ সেন্ট বা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ডব্লিউটিআইয়ের দাম ৩৪ ডলার ৯৭ সেন্টে নেমেছে।
11252