PDA

View Full Version : ফোর্ড রেঞ্জার মিড-সাইজড পিকআপের রিভিউ



SaifulRahman
2021-01-13, 06:45 PM
Ford Ranger হল দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি বিক্রিত মিড-সাইজড পিকআপ, যার নাম হলো ফোর্ড রেঞ্জার। পিকআপের রাজ্যের রাজা হলো ফোর্ড। রিলায়েবিলিটি, পার্ফরম্যান্স, লুকস -- সবকিছু দিয়েই এই আমেরিকান ব্র্যান্ডটি পিকআপের বাজার সারা দুনিয়া জুড়ে দখল করে রেখেছে। ফোর্ডের এই পিকআপগুলোর সারা জীবনে ২০ লাখ কিমি চলার রেকর্ডও আছে, ও ২০ লাখ কিমি যে কতো বেশি তা আপনারা জানেনই।প্রথমেই দাম বলে দিচ্ছি। বাংলাদেশে ফোর্ডের অফিশিয়াল ডিলার আনোয়ার গ্রুপ ৩টি ট্রিমে ডাবল-কেবিন রেঞ্জার বিক্রি হয়। বেজ ট্রিম হলো Ranger XL, যেটিতে আছে ম্যানুয়াল গিয়ার, ও দাম ৫০ লাখ টাকা। এরপর আছে Ranger XL-T, যেটি হলো মিডিয়াম ট্রিম। এক্সএল-টি হলো অটো গিয়ারের, ও দাম হলো ৭২ লাখ টাকা। শেষে আছে বাংলাদেশে এই মূহুর্তে অ্যাভাইলেবল সবচেয়ে সেরা ডাবল-কেবিন পিকআপ, দ্যা মাইটি বিস্ট --> Ranger Raptor। আমরা ফোর্ড বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগ করে জেনেছি যে, রেঞ্জার র*্যাপ্টরের দাম শুরু হবে ৯৫ লাখ টাকা থেকে, ও গাড়িটি শুধু অর্ডার-ব্যাসিসেই আনা হবে।
13409
রেঞ্জার গাড়িটি দেখতে বেশ সুন্দর। নিসান নাভারা বা ইসুজু ডি-ম্যাক্সের মতো এক্সট্রিমলি সুন্দর না হলেও গাড়িটি ছিমছামের মধ্যে বেশ সুন্দর। র*্যাপ্টর ভ্যারিয়েন্টে গাড়িটি দেখতে অনেক স্ট্রং ও রাগেড লাগে, কারণ এই ভ্যারিয়েন্টে বড় বড় ফেন্ডার ফ্লেয়ারের কারণে অন্য ট্রিমের চেয়ে বেশি চওড়া। অন্য সব ট্রিমে ফোর্ডের মূল যেই লোগো, অর্থাৎ নীল রঙের ওভালের মধ্যে কার্সিভে ফোর্ড লেখা, সেই লোগোটি থাকলেও রেঞ্জার র*্যাপ্টরে ফোর্ডের বেস্ট পিকআপ ফোর্ড এফ-১৫০ র্যা প্টরের মতো সামনের গ্রিলের উপর বড় করে ‘FORD’ লেখা থাকে, যেটি গাড়িটির টাফ লুককে আরও ত্বরান্বিত করে। র*্যাপ্টরের সামনে থাকে হাই-টেনসাইল স্টিল প্লেট, যেটি এক্সট্রিম অফ-রোড সিচুয়েশনে শক্ত ও বড় পাথর থেকে গাড়ির আন্ডারবডি রক্ষা করে। র*্যাপ্টরে আরও থাকে ৩৩ ইঞ্চি সাইজের BF Goodrich টায়ার, যা এক্সট্রিমের থেকেও এক্সট্রিম অফ-রোডিং সিচুয়েশনে অনেক গ্রিপ এনে দেয়।ইন্টেরিওর সিম্পেল ও আর্গোনমিক, কিন্তু একটু ব্যাকডেটেড মনে হয় দেখলে। নিসান নাভারা, ইসুজু ডি-ম্যাক্স, টয়োটা হাইলাক্স রেভো এগুলোতে রেঞ্জারের চেয়ে তুলনামূলক বেশি লাক্সারিয়াস ইন্টেরিওর থাকে। একটা বড় সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দেশে অ্যাভাইলেবল রেঞ্জারের কোনো ট্রিমেরই পিছনের সারিতে এসি ভেন্টস নেই। কিন্তু নিসান নাভারাতে এদিকে ৫৮ লাখ টাকায় এবং টয়োটা হাইলাক্সে ৭৫ লাখ টাকা এটি পাওয়া যায়। র*্যাপ্টর ট্রিমে অবশ্য ৯৫ লাখ টাকা হিসেবে কিছু এক্সট্রা ফিচার আছে, যেমন RAPTOR লেখা ফ্লোর ম্যাট ও হেডরেস্ট। এই ট্রিমে সিটগুলোও হাই-কোয়ালিটি লেদারের। অ্যাপল কারপ্লে ও অ্যান্ড্রয়েড অটোও থাকছে, ও গান শুনার জন্য ৬টি হাই-কোয়ালিটি স্পিকার আছে। ৯৫ লাখ টাকা দিয়ে কেউই কাজের জন্য পিকআপ কিনবে না, যারা রেঞ্জার র*্যাপ্টর কিনবে তারা বুঝাই যাচ্ছে শখ করে কিনবে পার্সোনাল ইউজের জন্য। এজন্যই এরকম কিছু ফিচার গাড়িটিতে আছে।রেঞ্জার এক্সএল ও এক্সএল-টি ট্রিমে থাকে ২২০০ সিসির টার্বো-ডিজেল ইঞ্জিন, যার শক্তি ১৪৮ হর্সপাওয়ার ও ৩৭৫ নিউটন-মিটার টর্ক। মোটামুটি ভালোই শক্তি, চলনসই বলা যায়। এক্সএল ট্রিমে থাকে ৫টি গিয়ারের ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন, ও এক্সএল-টি ট্রিমে থাকে ৬টি গিয়ারের অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন। নিসান নাভারা বাদে অন্য সব পিকআপ ট্রাকের মতোই এগুলোর সামনের অ্যাক্সেলে থাকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাবল উইশবোন সাস্পেনশন, ও পিছনে থাকে লিফ স্প্রিংস। ইউজারদের মতে গাড়িটি ঢাকায় ৮-১০ কিমি/লিটার মাইলেজ দেয়।এবার আসি রেঞ্জার র*্যাপ্টরের পাওয়ারট্রেইনে। রেঞ্জার র*্যাপ্টরে আছে ২০০০ সিসির ‘EcoBlue’ টুইন-টার্বো ডিজেল ইঞ্জিন, যার শক্তি ২১০ হর্সপাওয়ার ও ৫০০ নিউটন-মিটার টর্ক। ১০ গিয়ারের অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে এই শক্তি চাকায় ডেলিভার করা হয়। নিসান নাভারা ছাড়া আর যেই একটি পিকআপ আমাদের দেশে বিক্রি হয় সামনে ও পিছনে কয়েল স্প্রিং সাস্পেনশন সহ, সেটি হলো এই রেঞ্জার র*্যাপ্টর। দেশে অ্যাভাইলেবল পিকআপদের মধ্যে সবচেয়ে কম সিসি হলেও এই গাড়িটি সবচেয়ে বেশি পাওয়ারফুল। জীপ র*্যাংগ্লার যেমন ১ কোটি টাকার শখের এক্সট্রিম অফ-রোডার, এই রেঞ্জার র*্যাপ্টর গাড়িটিও তাই। কয়েল সাস্পেনশনের জন্য গাড়িটি অন-রোড এক্সট্রিমলি কমফোর্টেবল, একটি ৯৫ লাখ টাকার গাড়ির কাছে থেকে যেমনটি আশা করেন তেমনই। নাভারা গাড়িটির রিভিউতে একটি কথা বলেছিলাম যে, অফ-রোডিংয়ের জন্য লিফ স্প্রিংস ভালো, তাই নাভারা কন্ট্রোল করার চেয়ে ডি-ম্যাক্স বা এল২০০ বা হাইলাক্স কন্ট্রোল করা সহজ। কিন্তু যদি কয়েল সাস্পেনশন কে অফ-রোডিংয়ের জন্য ঠিকভাবে টিউন করা যায়, তাহলে কিন্তু কয়েল সাস্পেনশন বেশি ভালো পার্ফরম করে, যার সবচেয়ে বড় উদাহারণ হলো জীপ র*্যাংগ্লার ও টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারের মতো অফ-রোডিংয়ের রাজাধিরাজ গাড়িগুলো।গাড়িটিত আছে অটোম্যাটিক লিমিটেড স্লিপ ডিফারেনশিয়াল, যেটি ৩টি মোডে কাজ করে :- 2H (RWD); 4H (হাই-রেঞ্জ 4WD); এবং 4L (এক্সট্রিম অফ-রোডের জন্য লো-রেঞ্জ 4WD)। যদি 4L মোডেও সুবিধা না হয়, তাহলে আছে Rear Differential Lock, যেটি চালু করলে পিছনের ২টি চাকা সমান গতিতে ঘুরতে থাকবে যেভাবে হোক গ্রিপ ম্যানেজ করার জন্য। রেঞ্জারের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এই সেগমেন্টে সর্বোচ্চ, ও গাড়িটির টার্নিং সার্কেল ২য় পজিশনে। সেগমেন্টের সর্বোচ্চ ওয়েডিং ডেপথও ফোর্ড রেঞ্জারের --> ৮০০ মিমি.!!
13410