PDA

View Full Version : সাধারন ও জীবন বীমার প্রিমিয়াম আয় কমেছে ২০২০ সালে



SaifulRahman
2021-03-07, 04:58 PM
13838
পুঁজিবাজারে বীমা খাতের শেয়ার দর কয়েকগুণ বাড়লেও কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় কমেছে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার (আইডিআরএ) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে বীমা খাতের প্রিমিয়াম আয় ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ কমেছে। এর মধ্যে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় সবচেয়ে বেশি কমলেও এ খাতটির শেয়ারদর গড়ে দ্বিগুণ বেড়েছে। বিপরীতে আয় সামান্য কমলেও পুঁজিবাজারের চাঙ্গাভাবেও বাজার মূলধন হারিয়েছে পুরো জীবন বীমা খাত। পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর দেশের অর্থনীতি সংকটের মুখে পড়লেও বীমা খাতে তুলনামূলক ক্ষতি হয়েছে। লকডাউনে প্রায় তিন মাস প্রিমিয়াম আদায় বন্ধ থাকলেও বছর শেষে অধিকাংশ কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে। মূলত এজেন্ট কমিশন ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে লাগাম টানায় প্রিমিয়াম আয় কম থাকার পরও বীমা কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা বেড়েছে বলে জানা গেছে।আইডিআরএ প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালে সাধারণ ও জীবন বীমা কোম্পানি মিলিয়ে পুরো খাতটির প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ১৩ হাজার ৮২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। গত বছর জীবন বীমা খাতে প্রিমিয়াম আয় হয় ৯ হাজার ৪৫৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ৯ হাজার ৫৯৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ হিসেবে ২০২০ সালে এ খাতটির প্রিমিয়াম আয় কমেছে দেড় শতাংশ। সাধারণ বীমা খাতে ২০২০ সালে প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম।এদিকে সাধারণ বীমা খাতের প্রিমিয়াম আয় সবচেয়ে বেশি কমলেও আইডিআরএর বিভিন্ন উদ্যোগে গত বছর খাতটির শেয়ারের বড় উল্লম্ফন দেখা দেয়। এ সময়ে বেশ কিছু সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ার দর ৫-৭ গুণ বাড়তে দেখা যায়। মূলত গত বছর কারসাজি করেই এসব শেয়ারের দর বাড়ানো হয়। শেয়ার দরে কারসাজি করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএর কিছু ভূমিকাও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। কমিশন এজেন্টের পরিমাণ কমিয়ে আনার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনার উদ্যোগে সাধারণ বীমা কোম্পানির নিট মুনাফা বাড়তে দেখা যায়। এছাড়া আইডিআরএ কর্তৃক বীমা খাতের ন্যূনতম লভ্যাংশ সীমা বেঁধে দেওয়ার ঘোষণাও এসব শেয়ারে প্রভাব পড়ে।পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ছিল ২৫ টাকা ১০ পয়সায়, যা ২০২০ সাল শেষে ১০৭ টাকা ৮০ পয়সায় উন্নীত হয়। যদিও চলতি বছর বীমা খাতে সংশোধন দেখা গেছে। গতকাল এ কোম্পানির শেয়ার দর নেমে এসেছে ৯৪ টাকা ৫০ পয়সায়। এক বছরে এশিয়াপ্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ২৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে গত ৩০ ডিসেম্বর ৭৪ টাকা ৯০ পয়সায় উন্নীত হয়।একই সময়ে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর ২৭ টাকা থেকে ৮৪ টাকায়, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৫০ টাকা ৭০ পয়সায়, নিটোল ইন্স্যুরেন্স ২৮ টাকা থেকে ৬৩ টাকা, রিপাবলিক ২৫ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় উন্নীত হতে দেখা যায়। গত বছর সবগুলো সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ার দর বাড়লেও সবচেয়ে বেশি বেড়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর।কারসাজির মাধমে প্যারামাউন্টের শেয়ার ৪০ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১৩০ টাকা ৬০ পয়সায় উন্নীত করা হয়। যদিও বর্তমানে সবগুলো সাধারণ বীমা কোম্পানির দর সংশোধন পর্যায়ে রয়েছে। এতে করে যেসব বিনিয়োগকারী সর্বোচ্চ দরে এসব শেয়ার কিনেছিলেন, তারা এখন লোকসানের মুখে রয়েছেন। ২০১৯ সালে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন ছিল ৫ হাজার ২১৯ কোটি টাকা, যা ২০২০ সাল শেষে ১০ হাজার ১৭৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়।বিপরীতে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে না কমলেও শেয়ার দর বাড়েনি। উল্টো এ খাতের কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ২০১৯ সালে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত বাজার মূলধন ছিল ৬ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা, যা ২০২০ সাল শেষে কিছুটা কমে ৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।