PDA

View Full Version : নিম্নমুখী ধারায় খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক!



Montu Zaman
2021-08-08, 06:13 PM
http://forex-bangla.com/customavatars/711563102.jpg
গত বছর করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ চরমে পৌঁছায়। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তীব্র হতে থাকে। ফলে অস্থিতিশীল হতে শুরু করে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজার। এমন পরিস্থিতিতে স্বস্তির খবর দেয় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। টানা ১২ মাস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর চলতি বছরের জুনে এফএওর খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচকে দরপতন দেখা দেয়। জুলাইয়ে দ্বিতীয় বারের মতো খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম কমেছে।এফএও প্রতি মাসে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া খাদ্যপণ্যের দাম নিরূপণ করে থাকে। সর্বশেষ জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠানটির খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১২৩ পয়েন্টে। জুনে মূল্যসূচক ছিল ১২৪ দশমিক ৬ শতাংশ। সে হিসেবে খাদ্যপণ্যের দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। তবে গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় দাম বেড়েছে ৩১ শতাংশ।
রোমভিত্তিক এফএও জানায়, করোনা মহামারীর পর লাগাম ছাড়া হয়ে ওঠে কৃষিপণ্যের বিশ্ববাজার। খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে কৃষিপণ্য। তবে চলতি বছর চীনে কৃষিপণ্যের চাহিদা নতুন উচ্চতায় বেড়েছে। ফলে চীনের বাজার ধরতে উৎপাদন বাড়িয়েছেন শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলো।সরবরাহ বাড়তে থাকায় কমছে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম। জুলাইয়ে মূল্যসূচক হ্রাসে জ্বালানি জুগিয়েছে দানাদার খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেল ও দুগ্ধপণ্য।এফএও জানায়, খাদ্যশস্যের মূল্যসূচক জুনের তুলনায় কমেছে ৩ শতাংশ। এসব পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে ভুট্টার দাম। কৃষিপণ্যটির মূল্যসূচক কমেছে ৬ শতাংশ। এফএও জানায়, আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টা উৎপাদনে ব্যাপক সমৃদ্ধি আসায় চাপের মধ্যে পড়ে ভুট্টার বৈশ্বিক বাজার। অন্যদিকে চীন ভুট্টার ক্রয়াদেশ বাতিল করায় ব্রাজিলে উৎপাদিত ভুট্টা উদ্বৃত্ত থাকার আশঙ্কায় কৃষিপণ্যটির দাম আরো কমেছে।
বিশ্বের ৩৯টি দেশের প্রধান খাদ্যশস্য চাল। জুলাইয়ে কৃষিপণ্যটির আন্তর্জাতিক মূল্য কমে দুই বছরের সর্বনিম্নে নেমেছে। মূলত চালের সরবরাহ এবং মুদ্রার বিনিময় ব্যবস্থা চালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ কারণেই চালের দাম কমেছে। নিম্নমুখী আমদানি চাহিদার কারণে কমেছে যব ও জোয়ারের দাম। যদিও গমের মূল্যসূচক বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকায় প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পণ্যটির আবাদ ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে গমের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
এফএওতে দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচক ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে চলমান গ্রীষ্মকালীন ছুটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে মন্থর করে তুলেছে। এটি দুগ্ধপণ্যের বিশ্ববাজারে প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের ক্ষেত্রে বড় ধরনের দরপতন লক্ষ করা গেছে। দরপতনের ধারায় এর পরই রয়েছে মাখন, ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধ ও পনির। গত মাসে ভোজ্যতেলের দাম কমে পাঁচ মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে। জুনের তুলনায় মূল্যসূচক কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। বিশ্ববাজারে পাম অয়েলের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও সয়াবিন ও সরিষার তেলের বাজারদর মূল্যসূচক হ্রাসে সহায়তা করেছে। অন্যান্য পণ্যের দাম কমলেও বেড়েছে চিনির দাম। এফএওতে চিনির মূল্যসূচক ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ১৪ মাসের সর্বোচ্চে উঠে এসেছে। চিনির পাশাপাশি আমিষজাতীয় পণ্যের মূল্যসূচকও বেড়েছে।