Log in

View Full Version : ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আফগান ব্যাংক খাত



SumonIslam
2021-09-29, 12:11 PM
তালেবান ক্ষমতা দখলের পরই দুর্বল হতে শুরু করে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা। বৈশ্বিক রাজনৈতিক শক্তিগুলোর অস্বীকৃতি ও পশ্চিমা দেশগুলো কর্তৃক দেশটির বিপুল অর্থ জব্দ করার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় আফগানিস্তানের ব্যাংকিং ব্যবস্থা যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ইসলামিক ব্যাংক অব আফগানিস্তানের প্রধান নির্বাহী সাইয়েদ মুসা কালিম আল ফালাহি জানান, দেশটির অর্থনৈতিক শক্তিগুলো বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটের মুখে রয়েছে। গ্রাহকরা আতঙ্কিত হওয়ায় এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলনের ঘটনা ঘটছে। তবে যে পরিমাণ অর্থ উত্তোলিত হচ্ছে তার বিপরীতে জমাদানের ঘটনা বিরল। এখানে শুধু উত্তোলনই ঘটছে। ফলে অনেক ব্যাংকই কার্যকর থাকছে না, একই সঙ্গে তারা যথাযথ সেবাও প্রদান করতে পারছে না। দুবাই থেকে এমন মন্তব্য করেছেন সাইয়েদ মুসা কালিম আল ফালাহি। কাবুলে অস্থিরতা বিরাজ করায় তিনি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পূর্বেই আফগানিস্তানের অর্থনীতিতে নড়বড়ে অবস্থা বিরাজ করছিল। দেশটির আর্থিক সংস্থানের বড় অংশই নির্ভর করত বিভিন্ন বৈদেশিক সহায়তার ওপর। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, আফগানিস্তানের জিডিপির ৪০ শতাংশই আসত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা থেকে। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর পরই পশ্চিমা দেশগুলো আফগানিস্তানে দেয়া বিভিন্ন সহায়তা বাতিল করেছে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) গচ্ছিত থাকা দেশটির যাবতীয় সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
http://forex-bangla.com/customavatars/1847640826.jpg
বর্তমানে আর্থিক সহায়তার জন্য চীন ও রাশিয়ার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের দিকে তাকিয়ে আছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। আজ অথবা কাল তারা আলোচনা চালিয়ে নিতে এবং সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সক্ষম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এরই মধ্যে তালেবানের সঙ্গে কাজ করতে এবং আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য নিজেদের প্রস্তুত বলে জানিয়েছে চীন। চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে গ্লোবাল টাইমসের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানা যায়, আফগানিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সৃষ্টি ও দেশটির পুনর্গঠনে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। চীন এক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী। এরই মধ্যে আফগানিস্তানের জন্য খাদ্যসহায়তা ও কভিড-১৯ টিকাসহ প্রায় ২ হাজার কোটি ইউয়ান (৩ কোটি ১০ লাখ ডলার) সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। এ সহায়তা সত্ত্বেও দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে বেশ চাপে আছে তালেবান। বর্তমানে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার বেশ ঊর্ধ্বমুখী। ডলারের বিপরীতে মুদ্রার দরপতন হয়েছে ব্যাপক হারে। অনেক লোকজন চাকরি হারিয়েছে। একই সঙ্গে তাদের কাছে নগদ অর্থের সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের মাত্র ৫ শতাংশ পরিবারের কাছে দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। জরিপে অংশ নেয়া অর্ধেক পরিবারই জানিয়েছে যে গত দুই সপ্তাহে তাদের কাছে মজুদ থাকা খাবার অন্তত একবারের জন্য হলেও শেষ হয়ে গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, কিছু শর্ত পূরণ করলেই তারা তালেবানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি তালেবানের প্রতিশ্রুত নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন।

Tofazzal Mia
2021-11-24, 12:29 PM
কয়েক মাসের মধ্যেই আফগানিস্তানে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধসে পড়ার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। ব্যাংকগুলোয় নগদ তারল্য সংকট, গ্রাহকদের কাছ থেকে স্বল্প আমানত এবং ঋণখেলাপির সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধির ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর তৈরীকৃত তিন পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে দেশটির এমন ভঙ্গুর অর্থনৈতিক দৃশ্য ফুটে ওঠে। ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) জানায়, ব্যাংকিং ব্যবস্থার আর্থিক দিকগুলো ভেঙে পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।
16051
প্রায় দুই দশক পর চলতি বছরের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা পুনর্দখল করে দেশটির বৃহৎ রাজনৈতিক ও সামরিক গোষ্ঠী তালেবান। এর পরই আফগানিস্তানে সব প্রকার বিদেশী সহায়তা বন্ধ করে দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। পতন শুরু হয় আফগান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার। ব্যাংকগুলোয় অস্বাভাবিক হারে আর্থিক চাপ বাড়তে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে আমানত ধরে রাখতে সাপ্তাহিক উত্তোলন সীমা নির্ধারণ করে দেয় দেশটির ব্যাংকগুলো। ইউএনডিপি জানায়, আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং পেমেন্ট ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। এ অবস্থায় দেশটির স্বল্প উৎপাদন সক্ষমতা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। এটি মোকাবেলায় দ্রুতই কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। তালেবান নেতাদের ওপর একতরফা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকার ফলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে পাওয়া কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইউএনডিপি আফগানিস্তানের প্রধান আবদুল্লাহ আল দারদারি বলেন, আমাদের এমন একটি উপায় খুঁজে বের করা দরকার যে আমরা শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সহায়তা করছি। এটি যেন কোনোভাবে তালেবান সরকারকে সহায়তা না করা হয়।