PDA

View Full Version : হাবলের উত্তরসূরি জেমস ওয়েব



Montu Zaman
2022-01-02, 04:59 PM
অনলাইনে আমাদের দেখা সুন্দর সুন্দর ডিপ স্পেস, নেবুলা আর গ্যালাক্সির ছবিগুলো হাবল টেলিস্কোপের তোলা ছবি। হাবলের বয়স প্রায় শেষের দিকে, তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল নতুন প্রযুক্তির। ৫ ডিসেম্বর দক্ষিণ আমেরিকার ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে সেখানকার স্থানীয় সময় সকাল ৯.২০ মিনিটে ( বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা বেজে ২০ মিনিটে ) এই টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। আজ থেকে ২৯ দিন পর পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টে গিয়ে ভেসে বেড়াবে এ টেলিস্কোপ । এ স্থানে সব বস্তু ভেসে থাকতে পারে। সেখানে পৌঁছানোর ৫-৬ মাস পর পুরোপুরি কাজ করতে শুরু করবে এ টেলিস্কোপ। এরপর হাই-ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে এটি যোগাযোগ করবে পৃথিবীতে থাকা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি যৌথভাবে তৈরি করেছে এ টেলিস্কোপ। হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে ১০০ গুণ শক্তিশালী এবং মূল আয়নার ব্যাস চারগুণের এ টেলিস্কোপটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এটি তৈরিতে সময় লেগেছে ২৫ বছর!
পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জটিল ইঞ্জিনিয়ারিংগুলো একটি হলো এ টেলিস্কোপ। দানবাকৃতির আকারের জন্য একে ভাঁজ করে করে রকেটে পুরে পাঠানো হয়েছে। ৩০০ এরও বেশি সূক্ষ্ম যন্ত্রকে কাজ করতে হবে এ ভাঁজ খুলতে হলে। এটিকে সংস্কার করারও থাকবে না কোনো সুযোগ। এর মধ্যে কোনো একটি যন্ত্র সময়মতো কাজ না করতে পারলে ব্যর্থ হবে এ মিশন। এজন্য দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই পাঠানো হচ্ছে এ টেলিস্কোপকে।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ আমাদের মহাবিশ্বের সৃষ্টির শুরুর দিকে ছবিও দেখাতে পারবে। গবেষকরা মহাকাশে যতো দূরে তাকাবেন ততো অতীত দেখতে পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। একটি টেলিস্কোপ যতো বড় হয় মহাবিশ্বের ততো দূরের দৃশ্য দেখা সম্ভব হয়, এবং এ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মূল আয়নার ব্যাস হাবল টেলিস্কোপের ৪ গুণ। এর কার্যক্ষমতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রকৌশলীরা বলেছেন, চাঁদপৃষ্ঠে থাকা একটি মৌমাছিও শনাক্ত করা যাবে এ শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়ে।
পৃথিবীতে এখনও যেসব নক্ষত্রের আলো পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি এমন সব নক্ষত্রকে দেখতে পারা যাবে এ টেলিস্কোপ দিয়ে। গ্যাস, মেঘ কিংবা ধুলাবালির কারণে দেখা যায় না এমন নক্ষত্রকেও শনাক্ত করতে পারবে শক্তিশালী এ টেলিস্কোপ। এর ফলে আগে মহাকাশের এমন অনেক দৃশ্য দেখা যাবে যেসব এর আগে কখনই দেখতে পায়নি মানুষ। পৃথিবীর এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টির রহস্যের সমাধান মিলবে এ টেলিস্কোপ দিয়ে, এমনটাই ধারণা করছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা তারকাদের গঠন, পৃথিবীর বাইরে প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে বের করা এবং পৃথিবীর বাইরে মানুষের জন্য বসবাসযোগ্য জায়গার খোঁজ নিবে এ টেলিস্কোপ।
16369

Rassel Vuiya
2022-01-10, 12:46 PM
অবশেষে পুরোপুরি খুলেছে ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)’-এর মূল আয়না, হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। গোটানো অবস্থায় উৎক্ষেপণের পর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্পেস টেলিস্কোপটি সঠিকভাবে মেলে ধরার প্রক্রিয়া নিয়েই ছিল সবচেয়ে বড় শঙ্কা। জেডব্লিউএসটি’র সোনার প্রলেপ দেওয়া মূল আয়নাটি ১৮টি ষড়ভুজে বিভক্ত। এর মধ্যে আয়নার কেন্দ্রিয় অংশের দুই পাশের দুই প্যানেলে আছে তিনটি করে ছয়টি ষড়ভুজ। মহাকাশে পাঠানোর জন্য রকেটে বসানোর উপায় ছিল না প্রস্থে ২১ ফুট টেলিস্কোপটির। তাই বিজ্ঞানীরা এর নকশা করেছিলেন এমনভাবে যেন বিভিন্ন যন্ত্রাংশ গোটানো অবস্থায় টেলিস্কোপটি এঁটে যায় রকেটের খোলসে। জেডব্লিউএসটি মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে ২০২১ সালের বড়দিনে। তারপর দুই সপ্তাহ সময় লেগেছে টেলিস্কোপের বিভিন্ন অংশ গোটানো অবস্থা থেকে মেলে ধরতে। ৮ জানুয়ারি গোটানো অবস্থা খুলে আয়নার মূল অংশের পাশে যথাস্থানে বসেছে ডান পাশের প্যানেলটি। বাম পাশের প্যানেলটি সস্থানে বসেছে তার আগের দিন।
দুই প্যানেল পূর্বনির্ধারিত জায়গায় সঠিকভাবে বসে যাওয়ায় অবশেষে এক হয়েছে জেডব্লিউএসটি’র ১৮ ষড়ভুজের মূল আয়না। দূরের মহাবিশ্বের ‘ইনফ্রারেড’ আলোর কণা প্রতিফলিত হবে আয়নাটিতে। ওই আয়নার প্রতিফলন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মহাকাশের নানা অজানা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে জেডব্লিউএসটি।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে পৌঁছেই নিজেকে মেলে ধরার জটিল প্রক্রিয়া শুরু করে জেডব্লিউএসটি। এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে জটিল কাজটি শেষ হয়েছে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই, খুলেছে জেডব্লিউএসটি’র ‘সানশিল্ড’। সূর্য থেকে আসা আলো ও তাপ থেকে জেডব্লিউএসটি’র যন্ত্রপাতি রক্ষা করবে ওই সানশিল্ড।
পুরো টেলিস্কোপ গোটানো অবস্থা থেকে কোনো জটিলতা ছাড়াই নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরলেও বিজ্ঞানীদের কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। মূল আয়নার ১৮টি অংশ সঠিক কোণে আছে কি না, সেটি নিশ্চিত করার জন্য আরো খুঁটিনাটি পরিবর্তন করতে হবে বিজ্ঞানীদের। এ ছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়মিত সমন্বয় করতে হবে তাদের।
মহাকাশে এখনও নিজের গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়নি জেডব্লিউএসটি। ভার্জ বলছে, গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে অন্তত আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগবে টেলিস্কোপটির। আর টেলিস্কোপটি থেকে পাওয়া ছবির জন্য সম্ভবত অপেক্ষা করতে হবে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত।
16434

Rakib Hashan
2022-02-14, 05:27 PM
16747
মহাকাশ থেকে ছবি পাঠানো শুরু করেছে এযাবৎকালে নাসার সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস টেলিস্কোপ। তবে, সমন্বয় এখনও হয়নি ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)’ মূল আয়নার ১৮টি অংশের সমন্বয় এখনও হয়নি। ফলে একই ছবিতে একই নক্ষত্রের প্রতিবিম্ব ধরা পড়েছে ১৮টি ভিন্ন ভিন্ন কোণ থেকে। নাসা জেডব্লিউএসটি’র তোলা প্রথম ছবিটি প্রকাশ করেছে শুক্রবার। মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির হাতে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আয়নার সবগুলো অংশের সমন্বয় করা। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকরেডার বলছে, আয়নার ভিন্ন ভিন্ন অংশ পুরোপুরি সমন্বিত হলে এক ছবিতে এইচডি ৮৪৪০৬ নক্ষত্রটির ১৮টি আলাদা প্রতিচ্ছবি থাকবে না, সবগুলো একিভূত হয়ে ফুঁটে উঠবে একটি নক্ষত্রের ছবি। মহাকাশে আলোর কণা চিহ্নিত করার জন্য চারটি আলাদা আলাদা যন্ত্র রয়েছে জেডব্লিউএসটি’র। এর মধ্যে শুক্রবার প্রকাশিত ছবিটি তুলতে ব্যবহৃত হয়েছে ‘নিয়ার ইনফ্রারেড ক্যামেরা (এনআইআরক্যাম)’। দুটি উদ্দেশ্যে পরীক্ষামূলক ছবিগুলো তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে টেকরেডার। প্রথমত, ছবি থেকে নাসার বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন পুরো টেলিস্কোপটির মধ্যে দিয়ে এনআইআরক্যামের সেন্সরে পৌঁছাচ্ছে আলোর কণা। দ্বিতীয়ত, পরীক্ষামূলক ছবিগুলোকে ব্যবহার করে আয়নার ১৮টি অংশ সমন্বয়ের মান নির্ধারণ করতে পারছেন বিজ্ঞানীরা।
টেকরেডার জানিয়েছে আয়না সমন্বয়ের কাজ শেষ করতে কয়েক মাস সময় লাগবে নাসা’র। প্রথম ছবিগুলোকে প্রাথমিক অবস্থায় অতিগুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও আয়নার ভিন্ন ভিন্ন অংশ সমন্বয়ের খাতিরেই গুরুত্ব পাচ্ছে ছবিগুলো। আয়না সমন্বয়ের পাশাপাশি বাকি তিনটি সেন্সরের কার্যকারিতা যাচাই এখনো বাকি আছে বলে জানিয়েছে টেকরেডার। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরীক্ষা চালিয়ে সেন্সরগুলোর কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করা হবে। আয়নার সমন্বয় এবং সেন্সরগুলো চালু করার কাজ শেষ হলে মহাকাশের আরো পরিষ্কার ছবি দিতে পারবে জেডব্লিউএসটি।