PDA

View Full Version : নেপালের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে না।



Smd
2022-04-13, 01:29 PM
17470
নেপালের অর্থমন্ত্রী জনার্ধন শর্মা জানিয়েছেন, তার দেশের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার মতো চরম সংকটে পড়বে না। চরম আর্থিক সংকটে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির আর্থিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। দেশজুড়ে জ্বালানি থেকে ওষুধের আকাল দেখা দিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। নেপালের আর্থিক অবস্থাও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক (এনআরবি) একের পর এক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। সম্প্রতি এনআরবি আয়োজিত ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্স’-এ শ্রীলঙ্কার মতো একই পথে হাঁটছে নেপাল বলে যে গুজব ওঠে তা উড়িয়ে দেন অর্থমন্ত্রী শর্মা। তার মতে, নেপালের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার মতো ধসে পড়বে না। কেননা উৎপাদন ও রাজস্ব আদায়ে সঠিক পথে রয়েছে নেপাল। এমনকি দেশটিতে বিদেশি ঋণের বোঝাও তুলনামূলক কম। তিনি বলেন শ্রীলঙ্কা যে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে এবং আমাদের অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিবর্তে অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়া উচিত। বরং পাঁচ মাস আগে মূলধনের ঝুঁকি এড়াতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রিপ্টো কারেন্সির অবৈধ লেনদেন ও অস্বাভাবিক তহবিল নিয়ে সতর্কতা জারি করে। তবে সঠিক সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ায় দেশটি অবৈধ অর্থের উৎস বন্ধে ব্যর্থ হয়। এছাড়া দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঝুঁকিতেও ছিল। বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্য, যানবাহন ও বিলাসবহুল পণ্য আমদানির কারণে এ পরিস্থিতিতে পড়ে। তবে ঝুঁকি এড়াতে আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। এজন্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে মনোযোগী হয়। দেশীয় সম্পদ নিয়ে উৎপাদন বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। আর্থিক ও অন্যান্য খাতে স্থিতিশীলতা আনা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে নেপালের কর্তৃপক্ষ। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভীর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে যাতে অর্থনীতি টেকসই হয়। এনআরবি শুধু আর্থিক খাতের একমাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা-ই নয়, অর্থনৈতিক গবেষণার কেন্দ্রও বটে। তাই অর্থনীতির বর্তমান সমস্যা খুঁজে বের করতে এনআরবিকে দায়িত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিলম ধুনগানা তিমসিনা বলেন, তারল্য সংকট, উচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি ও রেমিট্যান্স কমে আসায় অর্থনীতি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এনআরবি তেল আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার আবেদন জানিয়ে সরকারকে একটি চিঠি লিখেছে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো যাতে অপ্রয়োজনীয় ঋণ না দেয়, সে বিষয়েও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে যানবাহন কেনার জন্য ঋণের আবেদন এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এনআরবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এই ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে এনআরবি সতর্ক করেছে। নেপাল সরকার বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের জন্য আমদানির ওপর রাশ টানছে। বর্তমানে নেপাল সরকারের একমাত্র লক্ষ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণে রাখা। সে কারণে বাইরে থেকে বিলাসবহুল পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে রাশ টানতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছে নেপাল সরকার। এনআরবির মুখপাত্র বলেন, দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে শুরু করেছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই বলে তিনি দেশবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার অবস্থা আমরা দেখছি। সে কারণে দেশের অর্থনীতি খারাপের খবর শুনে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তবে এখনও আগামী ছয় থেকে সাত মাসের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। নেপাল রাষ্ট্রব্যাংক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার ফল আসতে শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে নেপালের অর্থনীতি শিগগির ঘুরে দাঁড়াবে।