Log in

View Full Version : গুগলে বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার!



SaifulRahman
2022-05-09, 04:49 PM
বিপজ্জনক হয়ে উঠছে গুগলের ব্যবহার। বিশেষত গুগল পরিচালিত ইউটিউব প্ল্যাটফর্মের ভিডিও লিংকে সাইবার অপরাধীরা বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার ও স্পাইওয়্যার যুক্ত করায় এই সাইটের ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ এসব লিংকে ক্লিক করলেই ব্যবহারকারীদের ডিভাইসে যুক্ত থাকা ফেসবুক ও জিমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড দখল করে নিচ্ছে হ্যাকাররা। তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে ডিভাইস থেকে। গুগলের স্মার্টফোন প্ল্যাটফর্ম অ্যান্ড্রয়েডের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণকারী 'অ্যান্ড্রয়েড পুলিশে'র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনেও পাসওয়ার্ড চুরিতে সক্ষম ম্যালওয়্যার যুক্ত থাকার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এ বিপজ্জনক ম্যালওয়্যারযুক্ত ইউটিউব ভিডিও লিংক ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে গুগল অ্যাডস (গুগলের বিজ্ঞাপন) সেবাতেও গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়ার বড় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, মূল্য পরিশোধের জন্য সংযুক্ত গ্রাহকের ক্রেডিড কার্ড থেকে অর্থ চুরি হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের জন্য গুগলের নির্দিষ্ট কোনো যোগাযোগ ক্ষেত্র (কমিউনিকেশন পয়েন্ট) না থাকায় ইউটিউব এবং গুগল অ্যাডসে ক্ষতির শিকার গ্রাহকরা কোনো প্রতিকারও পাচ্ছেন না। ইউটিউব ব্যবহার করে অবাধে 'হেট স্পিস' ও 'সাইবার বুলিং' করা হলেও গুগলের কাছে কেউ এর প্রতিকার দাবি করতে পারছেন না।
http://forex-bangla.com/customavatars/818313744.jpg
যা হচ্ছে ইউটিউব লিংকে: গত ১৩ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ার সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান এএসইসির একটি তথ্যের উদ্ৃব্দতি দিয়ে অ্যান্ড্রয়েড পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউটিউব ভিডিও লিংকে বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার যুক্ত করছে আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধীরা। প্রথমত, ব্যবহারকারীর বিভিন্ন সেবার পাসওয়ার্ড এবং ডিভাইসে থাকা ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট ফাইল চুরি করতে; দ্বিতীয়ত, গুগল অ্যাডসের বিজ্ঞাপনের অর্থ হাতিয়ে নিতে; তৃতীয়ত, ফেক নিউজসমৃদ্ধ ভিডিওগুলোতে রিপোর্ট করা হলেও সেগুলো গুগলের সাপোর্ট টিমের কাছে যেতে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এ লিংক যুক্ত করা হচ্ছে। ফলে ব্যবহারকারীরা আপত্তিকর ভিডিওগুলোর ব্যাপারে রিপোর্ট করলেও তা গুগলের সাপোর্ট টিমের কাছে যাচ্ছে না।
গুগল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতে সরকারবিরোধী প্রচারের নানা ভিডিও এবং তারকা খ্যাতি বা সমাজের নামিদামি মানুষকেন্দ্রিক প্রচারমূলক ভিডিওর লিংকেই বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার যুক্ত হচ্ছে বেশি। কারণ এসব ভিডিওর ব্যাপারে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশি। গুগলের সাপোর্ট টিম মূলত সক্রিয় ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার উন্নত দেশগুলোতে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের মতো দেশের ব্যবহারকারীদের রিপোর্ট আমলে নিচ্ছে না তারা।
গুগল অ্যাডসেও ঝুঁকি: গুগল অ্যাডস সেবার মাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয় মূলত ইউটিউব এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে। ব্যবহারকারী ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এই অ্যাডের জন্য মূল্য পরিশোধ করে থাকেন।
তবে চলতি বছরের কিছু তথ্যে দেখা গেছে, ম্যালওয়্যারের কারণে গুগল অ্যাডের জন্য পরিশোধ করা মূল্য হ্যাকারদের কাছে চলে যাচ্ছে। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, একজন ব্যবহাকারী অ্যাড দিয়ে মূল্য পরিশোধের পর প্রায় এক মাস তার অ্যাডস 'পেন্ডিং' দেখায় গুগল। এরপর অ্যাডদাতা অ্যাড প্রত্যাহার করে অ্যাকাউন্ট বাতিল করে দেন। নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে সেই অ্যাকাউন্টে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু দুই মাস পরও গ্রাহক সেই অর্থ ফেরত পাননি।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ সময়ই যথাযথ রিপোর্ট যায় না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুগল সাপোর্ট টিম রিপোর্টগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। আবার গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে যথাযথভাবে দায়বদ্ধ করার কার্যকর উদ্যোগও নিচ্ছে না।