Log in

View Full Version : দেউলিয়া হওয়ার পথে পাকিস্তানেও।



Smd
2022-05-18, 08:44 PM
পাকিস্তানের ভাগ্যও কি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি বলছে বিস্ফোরণোন্মুখ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানও দেউলিয়া হওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে। বহিষ্কৃত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ইসলামাবাদ অভিমুখী লংমার্চ করার হুমকির প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ইমরান খানের দাবি হচ্ছে আগামী ২০ মের মধ্যে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আগামী দিনে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে, যা পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারণ পাকিস্তানের অর্থনীতি এরই মধ্যে দেউলিয়া পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ধস নামছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি লাফিয়ে বাড়ছে এবং পাকিস্তানি রুপি মুখ থুবড়ে পড়ছে। চলতি অর্থবছরে রুপির মূল্য ২১.৭২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ইসলামাবাদভিত্তিক পাকিস্তানি রাজনৈতিক বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ এবং আর্থিক বিশ্লেষক ফারুখ সালিম এশিয়া টাইমসকে বলেছেন, ‘ডলার আসার মন্থর গতি এবং চীন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থনের অভাবে রুপির ওপর চাপ বাড়ছে। ডলারের বিপরীতে রুপির দাম রেকর্ড পরিমাণে সর্বনিম্ন। দেশে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক আরো ৯০০ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে, আর্থিক বাজারে ধস নামছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে এবং স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে (এসবিপি) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ১০.৪৪ বিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে। এর মধ্যে চীন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্যাশ ডিপোটিজ লোন রয়েছে ছয় বিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানের আসন্ন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি আর্থিক জরুরি অবস্থার দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের পরামর্শ হচ্ছে, করপোরেট খাতে ৮০০ বিলিয়ন রুপির যে করছাড় দেওয়া হচ্ছে, তা প্রত্যাহার এবং জমি ও সম্পদ ধারণের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা উচিত। তাঁরা চান, অসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যয় হ্রাস, ১৬০০ বা তার বেশি সিসি ক্ষমতার যানবাহনের ওপর জরুরি কর আরোপ, ৮০০ বর্গগজ বা তার বেশি আয়তনের আবাসিক ভবনে বিদ্যুতের শুল্ক দ্বিগুণ করা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরের আকার ছোট করা হোক। এই পরিস্থিতিতে গত মাসে ক্ষমতায় আসা জোট সরকারের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস ঠেকানো সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৬ মে বেসরকারি ব্যাংকের আমানত ছাড়া পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট মজুদ ছিল মাত্র ১০.৩ বিলিয়ন ডলার, যা বড়জোর চার সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারে। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে ইমরান খানের শাসনকালের বিনাশী কর্মকাণ্ডের রাজনৈতিক মূল্য পরিশোধ করতে পিএমএল-এন সরকার রাজি নয়। এর চেয়ে বরং দলের হাইকমান্ড প্রদেশিক পরিষদগুলো ভেঙে দিতে এবং নতুন করে নির্বাচনের আহ্বান জানাতেই বেশি আগ্রহী হবে। এই অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা এবং অর্থনীতির খারাপ অবস্থা অনুধাবন করে পিএমএল-এন প্রধান নওয়াজ শরিফ গত ১০ মে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং দলের ফেডারেল মন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতাদের পরামর্শের জন্য লন্ডনে ডেকে পাঠান। দলটি ক্ষমতায় এসে এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে যে এখন তাঁকে অজনপ্রিয় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।