SaifulRahman
2022-08-17, 04:58 PM
বিলাসী পণ্যসহ আমদানিতে লাগাম টানায় কমেছে আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ। এর প্রভাব পড়ছে ডলারের বাজারে। গতকাল মঙ্গলবার কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে নগদ ডলার বিক্রি হয়েছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায়। গত সপ্তাহেও এক ডলারে গুনতে হয়েছিল ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা ও গুলশান এলাকার একাধিক মানি চেঞ্জারের কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা ডলার ১১২ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি করছেন। অবশ্য আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। নিয়ম অনুযায়ী, এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতেও এখন ১০৬ থেকে ১০৮ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি হচ্ছে। ডলারের বাজারে সরবরাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার আন্ত ব্যাংকে (বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে) প্রতি ডলার ৯৫ টাকা দরে মোট ৮০ মিলিয়ন বা আট কোটি মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গুলশানের মানি চেঞ্জারের কর্মকর্তা বলেন, ‘ডলার কেউ বিক্রি করতে এলে ১১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৩ টাকায় কিনছি। আর কেউ নগদ ডলার কিনতে এলে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি করছি। গত দু-তিন দিন ধরে বাজার একই অবস্থায় যাচ্ছে। ’কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ১১ দিনে দেশে মোট ১৬১ কোটি ডলার সমপরিমাণ মূল্যের আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা জুলাই মাসের তুলনায় ৯৪ কোটি ডলার বা ৩৬ শতাংশ কম। জুলাই মাসে আমদানি হয়েছিল ২৫৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল জুলাই মাসে দেশে মোট ৫৫৫ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা জুন মাসের তুলনায় ৩০.২০ শতাংশ কম। জুন মাসে আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি ডলারের। তবে জুন মাসে অবশ্য মে মাসের তুলনায় আমদানি ঋণপত্র ৭ শতাংশ বেশি খোলা হয়েছিল। মে মাসে ঋণপত্র খোলা হয় ৭৪৪ কোটি ডলারের। দেশের ব্যাংকগুলো যে দামে ডলার কিনবে, তার চেয়ে সর্বোচ্চ এক টাকা বেশি দামে ওই ডলার বিক্রি করতে পারবে। একই সঙ্গে রপ্তানি আয় দ্রুত দেশে এনে তা নগদায়ন করতে হবে। গত রবিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সভায় বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল করতে ব্যাংকগুলোর জন্য ডলারের ক্রয়-বিক্রয় হারের মধ্যে এক টাকার ব্যবধান বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
http://forex-bangla.com/customavatars/645389195.jpg
Rassel Vuiya
2022-08-24, 11:03 AM
খোলা বাজারে বাড়ছে তদারকি, কমছে ডলারের দাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যোগে কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রতি ডলার ১০৭-১০৮ টাকার মধ্যে কেনাবেচা হয়েছে। গত ১০ আগস্ট ডলারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১২০ টাকা। ফলে ১৩ দিনের ব্যবধানে নগদ ডলারের দাম কমেছে প্রায় ১৩ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নানা শর্ত দেওয়ায় কমছে আমদানি ব্যয়। অন্যদিকে প্রবাসী আয় বাড়ায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এছাড়া, খোলাবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি জোরদার হওয়ায় ডলারের অস্বাভাবিক দামও কমে আসছে। এদিকে, দেশে নগদ ডলারের দাম কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আমদানিতে দেওয়া হয়েছে নানা শর্ত। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে দেওয়া হয়েছে নীতিগত ছাড়। এছাড়া ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ডলার কারসাজিকারীদের ধরতে চালাচ্ছে অভিযান। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার মানি চেঞ্জার পরিদর্শনে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়ায় ২৮ টি মানি চেঞ্জারের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিএফআইইউ’র পক্ষ থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক হিসাব জমা দিতে বলা হয়েছে।
যেসব মানি চেঞ্জারের হিসাব তলব করা হয়েছে, সেগুলো হলো- নিবেদিতা মানি এক্সচেঞ্জ, সিটি মনিটারি এক্সচেঞ্জ, বকাউল মানি এক্সচেঞ্জ, মনডিয়াল মানি এক্সচেঞ্জ, নাবিলস মানি চেঞ্জার, হিমালয় ডলার মানি চেঞ্জার, ক্যাপিটাল মানি চেঞ্জার, মেট্রো মানি এক্সচেঞ্জ, ডিপেনডেন্ট মানি চেঞ্জার, ঢাকা মানি চেঞ্জার, লর্ডস মানি চেঞ্জার, গ্লোরি মানি এক্সচেঞ্জ, ডিএন মানি চেঞ্জার, অংকন মানি এক্সচেঞ্জ, বিজয় মানি এক্সচেঞ্জ, বিনিময় মানি এক্সচেঞ্জ, বুড়িগঙ্গা মানি এক্সচেঞ্জ, ফয়েজ মানি এক্সচেঞ্জ, কুমিল্লা মানি এক্সচেঞ্জ, এএসএন মানিচেঞ্জার, বিকেবি মানি এক্সচেঞ্জ, কেয়া মানি চেঞ্জার, আলফা মানি এক্সচেঞ্জ, ক্রিস্টাল মানি এক্সচেঞ্জ, দি লিয়াজোঁ মানি এক্সচেঞ্জ, উত্তরা মানি চেঞ্জার, বিজয় মানি এক্সচেঞ্জ ও বিজয় ইন্টারচেঞ্জ। এর আগে, বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বুধবার মানি চেঞ্জারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ দেড় টাকা মুনাফার সীমা ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা বৈঠক করে। সেখানে বলা হয় ব্যাংকগুলো ডলার বেচাকেনায় কতো টাকা মুনাফা করবে তা তারা নিজেরাই ঠিক করবে। তবে বেচাকেনার মধ্যে পার্থক্য যেন এক টাকার বেশি না হয়। এসব পদক্ষেপের কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখাপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম অর্থসূচককে বলেন, বর্তমানে ডলার নিয়ে বর্তমানে আমরা একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। তাই ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংক এবং খোলাবাজারে আমাদের পরিদর্শন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপ্রাপ্ত ২৩৫টা মানি চেঞ্জার আছে। এর মধ্যে ১০২ টা আমরা পরিদর্শন করেছি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া গেছে। ফলে ৫টা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করেছি এবং ৪২ টা প্রতিষ্ঠানকে কৈফিয়ত তলব করেছি। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে বাজারে প্রায় ৭’শ প্রতিষ্ঠান বাজারে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে শাট ডাউন করতে আইন-শৃক্সক্ষলা বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছি।
২৮ মানি চেঞ্জারের ব্যাংক হিসাব তলবের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের পরিদর্শনের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এই পরিদর্শন কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। এবং সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মানি চেঞ্জারের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করায় এই পর্যন্ত ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, মানি চেঞ্জারগুলোর কঠোর তদারকিতে গ্রাহকের যেন ভোড়ান্তি না হয় সেজন্য আমরা ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি, এডি শাখার বাইরে তারা যদি এই সেবা দিতে চাইলে তারা যেন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে। এই পর্যন্ত ৩০ টা ব্যাংকের ৯৮৮ টা শাখা আবেদন করেছে। আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করে তাদেরকে ডলার বেচাকেনার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দেবো। এতে করে অনেক বেশি শাখায় ডলার বেচাকেনা করা হলে ডলারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে তা কমে আসবে। ডলারের অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকগুলোর এডি শাখার বাইরে অন্য শাখাগুলোতেও ডলারের সংকট কাটাতে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
http://forex-bangla.com/customavatars/2013104631.jpg
Powered by vBulletin® Version 4.1.9 Copyright © 2025 vBulletin Solutions, Inc. All rights reserved.