PDA

View Full Version : টানা চতুর্থ মাসে তাইওয়ানের রফতানি নিম্নমুখী



Montu Zaman
2023-01-09, 05:44 PM
রেকর্ড উচ্চতায় মূল্যস্ফীতি। দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকাতে আগ্রাসীভাবে বাড়ানো হচ্ছে সুদের হার। ধীর হয়ে পড়েছে বৈশ্বিক চাহিদা। এতে নিম্নমুখী রয়েছে তাইওয়ানের রফতানি। গত বছরের ডিসেম্বরে দ্বীপটির রফতানিতে টানা চতুর্থ মাসের মতো পতন হয়েছে। শিগগিরই রফতানি বাড়ার কোনো আশাও দেখা যাচ্ছে না। এমনকি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) তাইওয়ানের রফতানিতে সংকোচন আরো ত্বরান্বিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে তাইওয়ানের রফতানি আয় এক বছর আগের তুলনায় ১২ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। গত মাসে দ্বীপটির রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৭৫ কোটি ডলারে। এ রফতানি আয়ের পরিমাণ গত ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে নভেম্বরে অঞ্চলটির রফতানি ১৩ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। ডিসেম্বরেও ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ সংকোচনের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
গত মাসে রফতানি কমার কারণ হিসেবে মন্ত্রণালয় বলেছে, জিরো কভিড নীতি থেকে সরে আসার পর চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ব্যাপক করোনা সংক্রমণ উৎপাদন খাতকে বাধাগ্রস্ত করছে, রেকর্ড মূল্যস্ফীতির চাপ এবং প্রধান অর্থনীতিগুলোয় সুদের হার বাড়ার কারণে বিশ্বজুড়ে চাহিদা ধীর হয়ে পড়েছে। মন্ত্রণালয়টি পূর্বাভাস দিয়েছে, প্রথম প্রান্তিকেও তাইওয়ানের রফতাানি নিম্নমুখী থাকবে। কারণ ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং চীনে কভিডের বিস্তার নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একটি বিবৃতিতে তাইওয়ানের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন প্রযুক্তির হাত ধরে তৈরি হওয়া ইতিবাচক চাহিদাও রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রবণতা থামাতে পারছে না। ডিসেম্বরে মোট ইলেকট্রনিকস উপাদানের রফতানি ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬০৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে এ সময়ে সেমিকন্ডাক্টর রফতানি দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। টিএসএমসির মতো সংস্থাগুলো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও স্বল্প দামের পণ্যে সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ অব্যাহত রাখায় এ বিভাগে ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম চুক্তিভিত্তিক সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপল ও অন্যান্য বৈশ্বিক প্রযুক্তি জায়ান্টকে সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ করে থাকে।
তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। গত মাসে দ্বীপটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে ১ হাজার ৪২৮ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। এ রফতানির পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ কম। এর আগে নভেম্বরেও দেশটিতে তাইওয়ানের রফতানি ২০ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল।
এছাড়া গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এ হার নভেম্বরের ১১ দশমিক ৩ শতাংশের তুলনায় অনেক কম। এ সময়ে তাইওয়ানের আমদানি ৩ হাজার ৯৬ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আমদানির পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় ১১ দশমিক ৪ শতাংশ কম। এ হার অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস ১০ দশমিক ২ শতাংশের চেয়ে বেশি। এর আগে নভেম্বরে দ্বীপটির আমদানি ৮ দশমিক ৬ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল।

তাইওয়ানের অর্থ মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে তাইওয়ানের রফতানি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় চলতি মাসে রফতানি এক বছর আগের তুলনায় ২০-২৪ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বড়দিনের আগে রফতানি সম্পর্কিত শিল্পগুলোয় ব্যস্ত মৌসুম চলে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। বিভিন্ন সংকটের কারণে গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বছরওয়ারি রফতানি ৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
http://forex-bangla.com/customavatars/1859997270.jpg