PDA

View Full Version : হুমকিতে দক্ষিণ কোরিয়ার বাড়ি ভাড়া পদ্ধতি



FXBD
2023-02-22, 01:25 PM
http://forex-bangla.com/customavatars/207245893.png
ভূসম্পত্তির দাম নিম্নমুখী দক্ষিণ কোরিয়ায়। বিষয়টি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে বাসা ভাড়ার জন্য। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত ‘জনসে’ নামক বিশেষ ধরনের বাসা ভাড়া পদ্ধতি। যাদের বাসা কেনার সামর্থ্য নেই, তারা এ পদ্ধতিতে সাময়িক মালিকানা লাভ করেন। কিন্তু সম্প্রতি জনসে সূচকের অবনমন ঘটেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ। সম্প্রতি এমনটাই উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। স্বাভাবিক বাসা ভাড়ার বদলে কোরিয়ায় জনপ্রিয় জনসে। এ পদ্ধতিতে কোনো ভাড়াটিয়া বাসার মূল্যের ৫০-৭০ শতাংশ অর্থ মালিকের কাছে আমানত রাখে। মালিক পুরো টাকা ফেরত দেয়ার আগ পর্যন্ত ভাড়াটিয়া বসবাস করে। এর মধ্যে আলাদা করে ভাড়া দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কেবল বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস, পানি ও আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার বহন করতে হয়। সাধারণত এ ধরনের চুক্তির মেয়াদ দুই বছর পর্যন্ত হয়। ভাড়াটিয়া ও বাড়ির মালিক দুজনের জন্যই সুবিধাজনক জনসে পদ্ধতি। একদিকে সাধারণ ভাড়ার চেয়ে পদ্ধতিটি ভাড়াটিয়ার জন্য সস্তা হিসেবে পরিগণিত হয়। অন্যদিকে বাসার মালিক বড় অংকের টাকা পান সুদবিহীন।
কোরিয়া রিয়াল এস্টেট বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, দুই বছরে মধ্যবর্তী বিক্রয় মূল্য (মিডিয়ান হাউজ প্রাইস) কমেছে ১২ শতাংশ। একই সময়ের মধ্যে ৭ শতাংশ কমেছে জনসে মূল্য। আমানত হিসেবে মোটা অংকের অর্থ নেয়া মালিকরা আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এতে কেবল নতুন ভাড়াটিয়ার জন্যই পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাচ্ছে না। হুমকিতে পড়ছে পারস্পরিক বিশ্বাস। ২১ মার্চ জনসে সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করে বাসা নেন ২৮ বছর বয়সী যুবতী উ হা চিন। বাসামালিকের কাছে আমানত রাখেন ২৫ হাজার ডলার। এ বছর মার্চে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বাসামালিক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় তার আমানত হুমকিতে পড়েছে। আগামী ডিসেম্বরে বাড়ি নিলামে তোলার কথা। ভূসম্পত্তির দাম কমে যাওয়ার কারণে বাড়ির দাম প্রত্যাশা অনুযায়ী হবে না। সেখান থেকে বড় জোর আমানতের ৪৫ শতাংশ ফেরত পাবেন উ। ফলে দ্বিধা কাটছে না। কোরিয়ান হাউজিং ও আরবান গ্যারান্টি করপোরেশনের ভাষ্য অনুযায়ী, *জনসে পদ্ধতির আমানত পরিশোধে বিলম্বিত হওয়ার চিত্র গত বছরের তুলনায় বর্তমানে দ্বিগুণ হয়েছে।

পরিশোধে ব্যর্থ আমানতের পরিমাণ ৯০৩ মিলিয়ন ডলার। যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশের বয়স ২০-৩০-এর ঘরে। তাদের বড় একটা অংশ ক্ষতির সম্ভাবনা গুনছেন। যদিও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো তৎপর বাসামালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে লেনদেন মীমাংসা করতে। জনসে সম্পর্কিত অপরাধ পর্যবেক্ষণে তৎপর পুলিশও। বছরের তুলনায় প্রতারণা মামলা তিন গুণে বেড়েছে *জনসে খাতে। বর্তমান মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২২। ফলে কমে আসছে আমানত রেখে বাসা ভাড়া নেয়ার প্রবণতা। এদিকে ইঙ্গিত করে ডিবি ফাইন্যান্সিয়াল ইনভেস্টমেন্টের অর্থনীতিবিদ মুন হং চিওল বলেন, ‘*সংকটটি প্রভাব ফেলছে সামগ্রিক অর্থনীতিতে। যদিও জনসে খাতের সমস্যা বাজারের সামগ্রিক মন্দাবস্থারই একটা অংশ মাত্র।’

দীর্ঘদিন ধরেই *জনসে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে কোরিয়ার অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। আমানত ফিরে পাওয়ার অনিশ্চয়তা তরুণদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। সৃষ্টি করবে অনীহা, যা স্থাবর সম্পত্তিতে প্রভাব ফেলবে। ফলে দ্রুত সংকুচিত হয়ে পড়তে পারে এ খাত। অবশ্য এর মধ্যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে খাতটিকে ধরে রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিগগিরই সুদহার কমানো শুরু করবে।