PDA

View Full Version : ই-কমার্স আমদানিতে ঝুঁকির মুখে জাপানের খুচরা ব্যবসা



Tofazzal Mia
2023-09-11, 05:40 PM
আন্তর্জাতিক ই-কমার্স প্লাটফর্ম থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা রয়েছে, এমন পণ্য ক্রয় বাড়ছে জাপানে। বিশেষ করে পোশাক ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি ব্যাপক হারে বেড়েছে। অনলাইনে জাপানি সাধারণ ক্রেতারা এখন দেশী পণ্যের চাইতে বিদেশী পণ্যের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন। নিক্কেই এশিয়ায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, গত কয়েক বছরে হোম ডেলিভারি অর্ডারের ছোট লট কার্গোর চালান বেড়েছে বহু গুণে। তথ্য বলছে, জাপানের ইস্যু করা আমদানি পারমিটের সংখ্যা ২০২২ সালে ছিল ১০ কোটির ওপরে, যা ২০১৯ সালের স্তরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। দেশটির খুচরা ব্যবসা বিশেষজ্ঞরা এ প্রবণতার প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ অনলাইনে কেনা অনেক বিদেশী পণ্য জাপানের ভোক্তা কর ও শুল্ক থেকে মুক্ত। ফলে স্থানীয় পণ্যের চেয়ে বিদেশী পণ্যে ক্রেতারা দামের সুবিধা বেশি পাচ্ছে।
http://forex-bangla.com/customavatars/2098724697.jpg
পণ্য আমদানি করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে কাস্টমস অফিস থেকে অনুমতিপত্র নিতে হয়। কিন্তু ই-কমার্স সাইট ব্যবহার করে অর্ডার করলে ক্রেতাকে কাস্টমস অফিস থেকে পৃথক কোনো অনুমতিপত্র নেয়ার দরকার পড়ে না। ই-কমার্স সাইটগুলোই ক্রেতাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নথি কাস্টমস অফিসে সরবরাহ করেন। ফলে ই-কমার্স সাইট ব্যবহার করে বিদেশী পণ্য অর্ডার করা ঝামেলাহীন ও সহজ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২২ সালে ১১ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার পারমিট দেয়া হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। কার্গো উড়োজাহাজে আসা প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্যই ছিল হোম ডেলিভারিতে আসা ছোট লট।
কভিড-১৯ মহামারীর চলাকালীন ২০২০ সালের শুরুর দিকে ছোট লট কার্গোগুলোর আমদানি বাড়তে শুরু করে। পরবর্তী তিন বছরে এ আমদানির পরিমাণ ২ দশমিক ৪ গুণ বেড়েছে। মহামারীর সময় ভাইরাস সংক্রমণ জারি করা নিষেধাজ্ঞার ফলে শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিতে ভোক্তারা দৈনন্দিন জিনিসপত্রের ক্রস বর্ডার (আন্তঃসীমান্ত) অর্ডার বাড়িয়েছিলেন।
একদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিস্তার বিদেশী পণ্য সম্পর্কে তথ্য পাওয়া সহজ করেছে। অন্যদিকে, অনলাইনে ঝামেলাহীন ও সময় সাশ্রয়ী ক্রয়ের অভ্যাস ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় আন্তর্জাতিক ই-কমার্স সাইটে অর্ডার সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে ই-কমার্স আমদানির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ৬ শতাংশ বেড়ে ৩৯ হাজার ৫৪০ কোটি ইয়েন বা ২৭০ কোটি ডলার হয়েছে। মার্কিন ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যালের মতে, জাপানের অনেক ক্রেতা জার্সি, বিভিন্ন পোশাক আইটেম ও লিপস্টিকের মতো প্রসাধনী কেনার জন্য তাদের পরিষেবা ব্যবহার করেছেন।
আন্তঃসীমান্ত ই-কমার্স সহায়তা প্রদানকারী জিগ-জ্যাগের সিইও কাজুয়োশি নাকাজাতো বলেছেন, ‘সাধারণ ভোক্তারা বিদেশী পণ্যের সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি পরিচিত।’ চামড়াজাত পণ্য ও নিটওয়্যারসহ কিছু আইটেম বাদে আমদানীকৃত পণ্যের মূল্য ১৬ হাজার ৬৬৬ ইয়েন বা তার কম হয়, তাহলে সাধারণ ক্রেতাদের ভোক্তা কর ও শুল্ক দিতে হয় না। কখনো কখনো শিপিং ফি দেয়ার পরেও আমদানি করা সাশ্রয়ী হয়।
অনেক দেশ ও অঞ্চল বাণিজ্য বাড়াতে এ ধরনের শুল্ক ছাড় দিয়ে থাকে। তবে শুল্কমুক্ত আইটেম আমদানি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলে তা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। জাপানে স্থানীয় পণ্যগুলো অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ আমদানি পণ্যে ভোক্তা কর না থাকলেও স্থানীয় পণ্যে ক্রেতাদের ১০ শতাংশ কর গুনতে হয়। জার্মান গবেষণা সংস্থা স্ট্যাটিস্টা পূর্বাভাস দিয়েছে, সারা বিশ্বে ই-কমার্স প্রসারিত হবে এবং আন্তঃসীমান্ত লেনদেনসংক্রান্ত সমস্যাগুলো আগামীতে আরো বাড়তে পারে।