PDA

View Full Version : ২৪ ঘণ্টা লেনদেন চালুর ভাবনায় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ গ্রুপ



Tofazzal Mia
2025-07-24, 04:35 PM
আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় শেয়ারবাজারে সক্রিয় অথচ ছোট বিনিয়োগকারীদের চাহিদা ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে। এ কারণে প্রচলিত কর্মঘণ্টার বাইরে লেনদেনের সময় বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে বড় শেয়ারবাজারগুলো। বিশ্বের অন্যতম আর্থিক বাজার লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ গ্রুপও (এলএসইজি) এখন ২৪ ঘণ্টা লেনদেন চালুর বিষয়টি বিবেচনা করছে। সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, প্রযুক্তি ও নিয়ন্ত্রণগত দিক বিবেচনা করে লেনদেনের সময়সীমা বাড়ানোর ব্যবহারিক দিকগুলো পর্যালোচনা করছে এলএসইজি। তাদের একজন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা লেনদেন বা বাড়তি সময় পর্যন্ত লেনদেন যা-ই হোক না কেন, বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে এলএসইজি। এটি চলমান আলোচনা, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক, নীতিগত ও নিয়ন্ত্রক বিষয়গুলো উঠে এসেছে।’
http://forex-bangla.com/customavatars/26271380.jpg
শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় বাড়িয়ে আনার প্রস্তাব প্রথম ওঠে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর এটি এখন অন্যান্য অঞ্চলে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বিনিয়োগকারীদের মনোভাব। এখন বেশির ভাগ তরুণ বিনিয়োগকারীরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে ট্রেডিংয়ে অংশ নেন। এ ধরনের বিনিয়োগের উত্থানের কারণে কর্মঘণ্টা বাড়ানোর চাপ তৈরি হয়েছে। এছাড়া ক্রিপ্টো বাজারে ২৪ ঘণ্টা লেনদেন হয়। এ খাতে ক্রমবর্ধমান লেনদেনের পরিমাণও শেয়ারবাজারকে সময় বাড়াতে প্রলুব্ধ করছে।
অবশ্য এলএসইজির প্রধান ব্যবসা শুধু শেয়ার কেনাবেচানির্ভর নয়। আর্থিক তথ্য বিক্রির মাধ্যমে বেশি অর্থ আয় করে তারা। এলএসইজি কোম্পানির শেয়ারমূল্য, বাজার বিশ্লেষণ, ট্রেডিং ভলিউম, আর্থিক রিপোর্ট ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে এবং তা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিতে বিক্রি করে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ার লেনদেন থেকে এসেছে এলএসইজির মোট আয়ের ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ এখনো গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বাজারটির লেনদেনের সময় সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লেনদেনের সময় বাড়ানোর সঙ্গে একাধিক বিষয় জড়িত। যেমন প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি, নিয়ন্ত্রক প্রশ্ন ও দ্বৈত তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওপর এর প্রভাব। এছাড়া দিনের শুরু ও শেষের লেনদেনের সঙ্গে তারল্যেরও সম্পর্ক রয়েছে।
এলএসইজি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও আরেকটি সূত্র বলছে, লেনদেনের সময় ২৪ ঘণ্টায় নিয়ে আসা নতুন পণ্য ও পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বড় শেয়ারবাজারগুলো ২৪ ঘণ্টা লেনদেন অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু লেনদেন কীভাবে কার্যকর হবে তা নিয়ে বড় বিতর্ক রয়েছে। কারণ ছোট বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারের মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অফিস আওয়ারের বাইরে লেনদেনে অংশ নিচ্ছে, সেখানে পেশাদার ফান্ড ম্যানেজাররা এখনো কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। তারা বাড়তি খরচ ও নিয়ন্ত্রণগত ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টক লেনদেনের প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ পরিচালনা করে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ, নাসডাক ও সিবিও গ্লোবাল মার্কেটস। তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোয় মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।
‘২৪এক্স’ নামে একটি নতুন ২৪ ঘণ্টার বোর্সের নীতিগত অনুমোদনের পর থেকে এসব আবেদন আসছে। তবে রাতভিত্তিক লেনদেন চালুর চূড়ান্ত অনুমোদন এখনো মুলতবি রয়েছে। কারণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর আগে বড় কিছু ইন্ডাস্ট্রি-সংক্রান্ত ইস্যু নিষ্পত্তি করতে চায়।
ফেডারেশন অব ইউরোপিয়ান সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জেস মে মাসে বলেছিল, দীর্ঘ সময় লেনদেন রিটেইল ট্রেডারদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক হতে পারে। তবে এ মডেল দীর্ঘমেয়াদে টেকসই বা উপকারী কিনা তা আগে বিবেচনা করতে হবে।
শেয়ারবাজারে সরকারিভাবে নির্ধারিত লেনদেন সময় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে পশ্চিম উপকূলের বিনিয়োগকারীরা নিউইয়র্কের তুলনায় ৩ ঘণ্টা পিছিয়ে থাকেন। ফলে তাদের জন্য লেনদেনের সময় শেষ হয়ে যায় বেলা ১টার মধ্যেই। আবার টাইম জোনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রাতের সময়টি ভালোভাবেই মিলে যায় এশিয়ার সঙ্গে। বিশেষ করে এর সুবিধা নেন দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনের মতো দেশের বিনিয়োগকারীরা।