PDA

View Full Version : ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও উচ্চাভিলাষী প্রকল্পসমূহ



SaifulRahman
2025-09-12, 02:42 PM
http://forex-bangla.com/customavatars/2096996357.jpg
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদের মতোই, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিশাল আকারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যে পদক্ষেপগুলো তার শক্তিশালী নেতৃত্ব ও সংস্কারকের ভাবমূর্তি মজবুত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে। যদিও দক্ষতার বিচারে এসব উদ্যোগ প্রায়ই সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে, তবে রাজনৈতিক নাট্যমঞ্চের যৌক্তিকতায় এগুলো বেশ নিখুঁতই বলা যায়—যেখানে ফলাফলের চেয়ে প্রভাবই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিচে ট্রাম্পের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও উচ্চাভিলাষী কিছু প্রকল্প তুলে ধরা হলো।

দেশপ্রেমের জোয়ার
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের অন্যতম চমকপ্রদ উদ্যোগ ছিল ব্যাপক সামরিক কুচকাওয়াজ ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন। জুন মাসে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর ২৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উৎসব আয়োজন করেন, যা তার ৭৯তম জন্মদিনের সঙ্গেও মিলে যায়। ট্যাঙ্ক, এয়ার শো এবং প্যারেডে অংশ নেওয়া সেনাদের নিয়ে এই কুচকাওয়াজ ওয়াশিংটনের কেন্দ্রস্থলে অনুষ্ঠিত হয়। এর খরচ দাঁড়ায় ২৫ মিলিয়ন থেকে ৪৫ মিলিয়ন ডলার, যেখানে প্রতি মিনিটে প্রায় অর্ধ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হয়েছে। এর আগে ২০১৯ ও ২০২০ সালের একই ধরনের আয়োজনের খরচ ছিল যথাক্রমে ১৩ মিলিয়ন ও ১৫ মিলিয়ন ডলার। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বায়িত্ব নেয়ারপর গৃহীত ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট (OBBBA) আইনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের ২৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যেই ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বিলিয়ন ডলার
দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প অভিবাসন আইন প্রয়োগে বরাদ্দ বাড়িয়ে ICE-কে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেন—যা বহিষ্কার ও অভিবাসী আটক পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত। এই অর্থ অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবহন, আর নিয়োগ বাড়ানোর জন্য ব্যয় করা হয়। নতুন এজেন্টদের প্রারম্ভিক বেতন প্রায় ৯০,০০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়, সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ ডলার বোনাস রয়েছে। ICE-এর গাড়ির বহরের জন্য আলাদাভাবে ২.৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে, যেখানে সোনালী ভিনাইল মোড়ানো SUV ব্যবহৃত হচ্ছে, যার গায়ে স্লোগান লেখা—“DEFEND THE HOMELAND।”

কালো সীমান্ত প্রাচীর
http://forex-bangla.com/customavatars/1974896529.jpg
ট্রাম্প আবারও করেছেন তার পুরনো ভাবনাকে সামনে নিয়ে এসেছেন—মেক্সিকো সীমান্তের প্রাচীর কালো রঙে রাঙানো হবে। এইবার পরিকল্পনাটি ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (DHS)-এর সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন ও ঘোষণা করেছেন। কর্মকর্তাদের মতে, কালো প্রলেপ সূর্যের তাপ শোষণ করবে এবং সীমান্ত পারাপার আরও কঠিন করে তুলবে। প্রথম মেয়াদে এই পরিকল্পনার খরচ ধরা হয়েছিল ৫০০ মিলিয়ন ডলার—দুই স্তরের অ্যাক্রিলিক রঙের জন্য—আর প্রিমিয়াম পাউডার কোটিংয়ের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বিলিয়ন ডলার। মুদ্রাস্ফীতি যুক্ত হওয়ায় ৯ মিটার উঁচু ইস্পাত প্রাচীরগুলো পুনরায় রাঙানোর চূড়ান্ত খরচ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এলিট এয়ার ফ্লিট
http://forex-bangla.com/customavatars/1610102740.jpg
দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প একটি আধুনিকীকৃত এয়ার ফোর্স ওয়ান পেতে যাচ্ছেন, যদিও এতে কিছু বিলম্ব হচ্ছে। বোয়িংয়ের সঙ্গে ২০১৮ সালে ৩.৯ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি হয়েছিল, কিন্তু দুটি নতুন প্রেসিডেন্সিয়াল বিমানের ডেলিভারির সময় এখন পিছিয়ে ২০২৭-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং খরচ বাজেটের তুলনায় কয়েক বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। সেইসাথে, ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে কাতার থেকে একটি জেট "উপহার" আসছে—যা পেতে নাকি যুক্তরাষ্ট্রের কোনোই খরচ হয়নি। তবে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, পেন্টাগন তাদের পারমাণবিক আধুনিকীকরণ প্রোগ্রাম থেকে ৯৩৪ মিলিয়ন ডলার একটি গোপন খাতে সরিয়ে নিয়েছে, যা সম্ভবত বিমানের পুনর্গঠনের সঙ্গে যুক্ত।

ব্রোঞ্জে মহত্ত্ব
http://forex-bangla.com/customavatars/24647329.jpg
জানুয়ারিতে ট্রাম্প আবারও একটি নির্বাহী আদেশ
কার্যকর করেন, যার মাধ্যমে ন্যাশনাল গার্ডেন অব আমেরিকান হিরোস গড়ে তোলা হবে—এই প্রকল্পটির ধারণা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আমেরিকার ২৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে এই উদ্যানে থাকবে ২৫০টি আসল মাপের ভাস্কর্য, যা “জাতির মহত্ত্ব” উপস্থাপন করবে। এই প্রকল্পের আনুমানিক খরচ ৩৪ মিলিয়ন ডলার। তবে এই প্রকল্পের সামনে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে: নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যথেষ্ট দক্ষ ভাস্কর নেই, এবং এই স্মৃতিসৌধের অবস্থান এখনো চূড়ান্ত হয়নি।