[ATTACH=CONFIG]11608[/ATTACH]
একসময় পৃথিবীতে যখন মুদ্রার প্রচলন ছিল না। তখন বিনিময় প্রথা প্রচলিত ছিল। তখন একটি দ্রব্যের বিনিময়ে অন্য দ্রব্য পাওয়া যেত। কিন্তু এর কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন কোন ব্যক্তি 50 কেজি ধানের বিনিময়ে এক বস্তা ডাল গ্রহণ করতে চায়। অর্থাৎ যার ডাল আছে কেবল সেই ওই 50 কেজি ধান গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু যার ডাল নেই সে ধান গ্রহণ করতে পারবে না। এই জটিলতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মানুষ এমন একটি মাধ্যমের কথা চিন্তা করল যা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া প্রত্যেকটি পণ্যের একটি নির্ধারিত মূল্য থাকবে এবং ওই পণ্যের মূল্য ওই মাধ্যম এর একটি নির্ধারিত এমাউন্ট দিয়ে পরিশোধ করা যাবে। এ ইমাধ্যম তাই পরবর্তীতে মুদ্রা হিসেবে আবির্ভূত হলো। কিন্তু মানুষ নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণে এই মুদ্রা পরিচালনা করা এবং সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে বিকল্প কিছু মাধ্যম অনুভব করল। পরবর্তীতে এই বিকল্প মাধ্যম হিসেবে আসলো ব্যাংক। ব্যাংক মুদ্রা সংরক্ষণের জন্য নিরাপত্তা দিতে পারে। কিন্তু এই নিরাপত্তা যথেষ্ট নয়। কারণ খবরের কাগজ খুললে অহরহ ব্যাংক ডাকাতির নিউজ পাওয়া যায়। তাই মানুষ ব্যাংকের চেয়েও আপডেটেড এমন কিছুর প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করল যেখানে ব্যাংক এর চেয়েও বেশি সিকিউরিটি পাওয়া যাবে এবং যা স্বচ্ছ লেনদেন নিশ্চিত করবে। তাছাড়া এই সিস্টেমের মধ্যে ডাকাতি বা হ্যাকিং এর মত কোন জটিলতা থাকবে না। ব্লকচেইন হলো সেই স্পেশাল টেকনোলজি। এটাকেই ভবিষ্যতের সবচেয়ে আপডেটেড ব্যাংকিং টেকনোলজী হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের নামিদামি কয়েকটি ব্যাংক এর পেছনে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
ব্লকচেইন এমন একটি প্রযুক্তি যার উপর নির্ভর করেই মূলত ক্রিপ্টো কারেন্সিগুলি তৈরি হয়েছে। আনুমানিক একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমগ্র বিশ্বব্যাপি যে পরিমাণ অর্থ বা সম্পদ লেনদেন হচ্ছে তাকে একটি জটিল কোডিং এ রূপান্তর করে একসাথে নিয়ে ব্লক তৈরি করা হয়। এই ব্লকের মাধ্যমে ক্রমানুযায়ী সম্পূর্ণ অপরিবর্তনশীল একটি বন্টনকৃত এবং বিকেন্দ্রীভূত ডেটাবেইজ বা রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়, এটাই মূলত ব্লকচেইন। ব্লকচেইনে এধরনের ডেটাবেজ বা রেকর্ডিংকে লেজার বলা হয়। আপনি যখন একটি ব্যাংকে কোন ভ্যালিড ট্রানজেকশন করবেন তখন অবশ্যই ওই ব্যাংকের লেজারে সেটার এন্ট্রি থাকতে হয়। ব্লকচেইনে এইধরণেরই একটি লেজার যেখানে পাশাপাশি একটার পর একটা এরকম অনেকগুলি ব্লক থাকে এবং প্রত্যেকটি ব্লকে থাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ ট্রানজেকশন হয়েছে তার ডেটা। যদিও এই ডেটা ওপেন কিন্তু সবাই পড়তে পারবে না। পড়তে হলে ব্যক্তিগত কিওয়ার্ড লাগে। ব্লকচেইন এর প্রত্যেকটি ব্লকই অপরিবর্তনীয়। কোন চেইনের সাথে যদি একবার একটি ব্লগ যোগ হয়ে যায় তাহলে তা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এখানে একটি ব্লক আরেকটি ব্লকের সাথে সম্পর্কিত হাওয়াই একটি ব্লক তার আগের ব্লক সম্পর্কে জানে। আমরা অনেকেই হয়তো বিটকয়েনের নাম শুনেছি। বিটকয়েন মূলত ব্লকচেইন টেকনোলজিতে ব্যবহার করা হয়। ব্লকচেইন টেকনোলজি তে ব্যবহৃত মুদ্রার গুলোকে ক্রিপ্টোকারেন্সি বলা হয়। বিটকয়েন তার মধ্যে একটি।