ব্রেক্সিট-উত্তর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে জাপান-যুক্তরাজ্য
ব্রেক্সিট-উত্তর একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে (এফটিএ) পৌঁছেছে জাপান ও যুক্তরাজ্য। শুক্রবার উভয় পক্ষের স্বাক্ষরিত চুক্তিটি আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অন্তর্বর্তীকালীন পর্ব চালু থাকলেও জাপানের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক বহাল থাকবে। খবর কিয়োদো।
মুক্ত বাণিজ্য ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে টোকিওতে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তশিমিত্সু মোতেগি ও ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী লিজ ট্রুস। এর মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১১ দেশের জোট ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপে (টিপিপি) যুক্ত হওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়েছে বলে মনে করছে লন্ডন।
মোতেগির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রুস বলেন, এ চুক্তির মাধ্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে ব্রিটিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ুলো। এছাড়া টিপিপিতে যুক্ত হওয়ারও পথ সৃষ্টি করছে। জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকোসহ বৈশ্বিক অর্থনীতির ১৩ শতাংশের প্রতিনিধিত্বকারী অঞ্চলটিতে যুক্তরাজ্যের উপস্থিতির সম্ভাবনা নিয়ে এ কথা বলেন ট্রুস।
মোতেগি বলেন, ১১ দেশের টিপিপিতে যুক্ত হতে যুক্তরাজ্যের আগ্রহকে স্বাগত জানায় জাপান এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেব আমরা।
অনেকটা বর্তমানে কার্যকর জাপান-ইইউ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির মতো জাপান-যুক্তরাজ্য চুক্তিটি নিজ নিজ দেশের সংসদে অনুমোদনের পর কার্যকর হবে। জাপান-ইইউ বাণিজ্য চুক্তিতে যুক্তরাজ্য না থাকায় উভয় পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে একটি এফটিএ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল। আগামী ডিসেম্বর ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্য সম্পর্কের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
জাপানি কোম্পানিগুলো চুক্তিটিকে স্বাগত জানালেও যুক্তরাজ্যভিত্তি ও কন্টিনেন্টাল ইউরোপে সচল কোম্পানিগুলো ব্রেক্সিট-উত্তর বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে। যদি চুক্তি স্বাক্ষরিত না হয়, তাহলে ইউরোপে জাপানি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অনেক জাপানি কোম্পানি কন্টিনেন্টাল ইউরোপে ঢুকতে ব্রিটেনকে যে প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহার করছে, সেদিকে ইঙ্গিত করে মোতেগি বলেন, ব্রেক্সিট কার্যকর হলেও যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সাপ্লাই চেইন সচল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যৎ অংশীদারিত্ব নিয়ে যুক্তরাজ্য ও ইইউ শিগগিরই কোনো চুক্তিতে পৌঁছাক, সে বিষয়ে উচ্চাশা পোষণ করছে জাপান।
ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্সের ইউকে ট্রেড পলিসি অবজারভেটরির ফেলো ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিবিষয়ক পরামর্শক ডক্টর মিনাকো মরিতা-জেগার বলেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে জাপানের এফডিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বিবেচনায় চুক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো উল্লেখ করেন, বিদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ হচ্ছে জাপান। ২০১৮ সালে বিদেশে এফডিআইয়ের ১৪ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি।
বণিক বার্তা