1 Attachment(s)
ডলারের বিপরীতে মূল্য হারাচ্ছে টাকা
ই মাস ডলারের দাম স্থিতিশীল থাকলেও, রবিবার (২২ মার্চ) তা আবার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অস্বাভাবিক আমদানি ব্যয় বাড়ায় ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে শক্তিশালী হচ্ছে ডলার; বিপরীতে দুর্বল হচ্ছে টাকা। ইতিপূর্বে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলারের জন্য ৮৬ টাকা খরচ করতে হয়েছিল; সেখানে আজ লেগেছে ৮৬ টাকা ৫৪ পয়সা। আর ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করছে এর চেয়েও পাঁচ-ছয় টাকা বেশি দরে। ফলে খোলা বাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ৯১-৯৩ টাকায়। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থির ছিল ডলারের দর। ৫ আগস্ট থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। বাড়তে বাড়তে ৮৬ টাকায় উঠার পর ১০ জানুয়ারি থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ওই দামে স্থিতিশীল ছিল। অর্থাৎ প্রায় আড়াই মাস পর মঙ্গলবার থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। এই হিসাবে গত সাত মাসে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা ১ টাকা ৪০ পয়সা দর হারিয়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অবমূল্যায়নে কিছুটা স্বস্তিতে থাকেন দেশের রফতানিকারকরা। তাদের মতে, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে। করোনা মহামারির সময়ে তারা মুদ্রার মান অবমূল্যায়ন করেই চলছে, কিন্তু সেই তুলনায় বাংলাদেশ এখনও সেভাবে অবমূল্যায়ন করেনি। রফতানিকে উৎসাহিত করতে টাকার মান আরও অবমূল্যায়ন করা উচিত বলে তারা মন্তব্য করেন তারা।
[ATTACH=CONFIG]17194[/ATTACH]
তবে, ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন আমদানিকারকরা। একদিকে করোনায় সামুদ্রিক জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি এবং কন্টোইনার সংকটে পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। কাঁচামাল ও উৎপাদনে মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে বর্ধিত দামে। এর সঙ্গে ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি যোগ হচ্ছে পণ্যের উৎপাদন খরচে। ফলে ভোক্তাসাধারণকে আগের চেয়ে বেশি মূল্যে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। আর সেই মূল্যস্ফীতির চাপে নাকাল হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে চাল, ডাল, ভোজ্য ও জ্বালানি তেল, শিশুখাদ্য, মসলা, গম, বিমানের টিকিট ও বিদেশে চিকিৎসা খরচ। ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গিয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে পাঁচ শতাংশের ঘরে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যদিও ফেব্রুয়ারি শেষে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক ১৭ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, আমদানি ব্যয় বাড়লেও পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এতে এখনই উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তবে মুদ্রা বিনিময় হারে যে অসামঞ্জস্য সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে মুদ্রার আরো অবমূল্যায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তারা বলেন, এই সময়ে বিদেশি আয় ধরতে টাকার মান আরও কমাতে হবে। এতে প্রবাসী আয় ও রফতানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতিতে। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি থেকে প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। আগে যা ছিল ২ শতাংশ।