1 Attachment(s)
রুশ জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব তীব্র হচ্ছে
রাশিয়ান অপরিশোধিত জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা ও ক্রেতাদের অনীহার পুরোপুরি প্রভাব পড়তে যাচ্ছে আগামী মাস থেকেই। সম্প্রতি এমনটা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। তবে সংস্থাটি বলছে, এর বিপরীতে চীনের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের প্রত্যাশিত দুর্বল চাহিদা, ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোয় উত্তোলন বৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও আইইএর মিত্র দেশগুলোর আপত্কালীন মজুদ থেকে রেকর্ড পরিমাণ সরবরাহ বাজারে তীব্র ঘাটতি প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
সংস্থাটি আরো জানায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য আসতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। চাহিদা ও সরবরাহ ভারসাম্যের পরিমাণ দাঁড়াবে দৈনিক ৯ কোটি ৮৩ লাখ ব্যারেলে। এটি জ্বালানি পণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর আগে সংস্থাটি প্রত্যাশা করছিল, চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য ফিরতে চলতি বছরের শেষ প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটি বলছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যেই চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান কমে আসার সম্ভাবনা থাকলেও চলতি মাসে ঘাটতির পরিমাণ বাড়বে। এ মাসে বিশ্ববাজারে গড়ে দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কারণ রাশিয়ার জ্বালানি তেল পরিশোধন প্রতিষ্ঠানগুলো এখন পর্যন্ত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ক্রেতারাও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল ক্রয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
[ATTACH=CONFIG]17525[/ATTACH]
মে মাস থেকে রাশিয়ায় দৈনিক ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ দেশটির জ্বালানি তেলের গ্রাহকরা নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি এড়াতে স্বেচ্ছায় রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করে দিচ্ছে। মে মাস থেকে আমদানি বন্ধের হার বাড়বে এবং জ্বালানি তেল রফতানিতে এটির প্রভাব পুরোপুরিভাবে দেখা দেবে। গত মাসে আইইএ যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তার চেয়ে কিছুটা ধীরগতিতেই রাশিয়ার জ্বালানি খাতে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে। মার্চে আইইএ জানিয়েছিল, এপ্রিল থেকেই দৈনিক ৩০ লাখ ব্যারেলের ঘাটতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে রাশিয়া। আইইএর ভাষ্যমতে, কিছু ক্রেতা দেশ, বিশেষ করে এশিয়ার ক্রেতারা রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়িয়েছে। তবে চীন আমদানি বাড়িয়েছে কিনা তার কোনো ইঙ্গিত এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এসব ক্রেতা দেশের আমদানি বাড়ানোর কারণেই এপ্রিলেও নিষেধাজ্ঞার পুরোপুরি প্রভাব পড়েনি দেশটির জ্বালানি খাতে।
তথ্য বলছে, চীনে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটিতে কঠোর লকডাউন চলছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কমেছে। এসব কারণে আইইএ চলতি বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস দৈনিক ২ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল করে কমিয়েছে। আইইএর মতে, চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ ওপেক প্লাসের সদস্যদেশগুলো ও ওপেক প্লাসের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে উত্তোলন বৃদ্ধি বাজারে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে পারে। সংস্থাটি জানায়, ওপেক প্লাসের উত্তোলন বাড়লেও কয়েক মাস ধরেই জোটটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রায় ঘাটতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রসহ আইইএর ৩১ সদস্য সম্মিলিতভাবে আপত্কালীন মজুদ থেকে ২৪ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে একমত হয়েছে। এ ঘোষণার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম প্রায় ৯ ডলার কমেছে।