যুদ্ধে শক্তিশালী রাশিয়ার অর্থনীতি, ধুঁকছে ইউক্রেন
বর্তমান সময় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পুরো বৈশ্বিক অবস্থাই এখন টালমাটাল। যুদ্ধের প্রভাবে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোসহ সারা বিশ্বেই এখন মূল্যস্ফীতির হাতছানি। পাশাপাশি দেশে দেশে বেড়ে গেছে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। জ্বালানি সংকট ও মূল্যস্ফীতির কারণে উন্নত দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ যুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার অভিযানে দেশটি আজ বিধ্বস্ত প্রায়। অপরদিকে এ যুদ্ধের মধ্যে নিজেদের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে রাশিয়া। শুধু তাই নয়, মুদ্রার মান ও রফতানি আয়ে দেশটি ছাড়িয়ে গেছে তার যুদ্ধ পূর্ব অবস্থানকেও। ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে বড় শিকারে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন নিজে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, যুদ্ধ চলতে থাকলে বছরের শেষ নাগাদ দেশটির জিডিপির ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে। এর অর্থ হচ্ছে, দেশটির অর্থনীতির প্রায় অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে যাবে। ইউক্রেনের ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে দেশের মধ্যেই শরণার্থী হয়েছে আরও প্রায় ৮০ লাখ মানুষ। ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম গম ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য রফতানিকারক দেশ। বিশ্বের ১২ শতাংশ গম, ১৬ শতাংশ ভুট্টা এবং বিশ্বের অর্ধেক সূর্যমুখী তেল ইউক্রেন রফতানি করে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে দেশটির খাদ্য রফতানির খাত হুমকির মুখে পড়েছে। কারণ রাশিয়া দেশটির প্রায় সব বন্দর অবরোধ করে বসে আছে। ফলে বন্দরগুলো দিয়ে খাদ্যপণ্য রফতানি করা যাচ্ছে না। যুদ্ধের ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেনের রাস্তাঘাট, সেতু, ঘরবাড়ি ও শিল্পকারখানাসহ অবকাঠামো খাত। গেল মে মাসে ফরেন পলিসি পত্রিকা জানায়, যুদ্ধ শুরুর দুই মাসের মধ্যেই অবকাঠামো খাতের এ ক্ষতির পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি এ মুহূর্তে ডলারের বিপরীতে রেকর্ড শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল। এ বছর ডলারের বিপরীতে সবচেয়ে ভালো করা বিদেশি মুদ্রাগুলোর মধ্য শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে রুবল। গত জানুয়ারি মাসের পর থেকে এ পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে ৪০ শতাংশ মান অর্জন করেছে রুবল।