1 Attachment(s)
তুরস্কের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৭৮.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে
তুরস্কের মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। জুনে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যমূল্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৮ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে। এ হার দেশটির ইতিহাসে ১৯৯৪ সালের পর সর্বোচ্চ। যদিও সরকারি এ পরিসংখ্যান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অর্থনীতিবিদদের মনে। টার্কিশ স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, গত মাসে খাদ্য, পানীয় ও পরিবহনের ক্রমবর্ধমান ব্যয় মূল্যস্ফীতিকে রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। গত এক বছরে খাদ্যের মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যেখানে পরিবহন খরচ বেড়েছে ১২৩ শতাংশ।
যদিও সরকারি প্রতিষ্ঠানের এ পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের অভিযোগ, তুরস্কের প্রকৃত মূল্যস্ফীতি আরো বেশি। সংস্থাটি রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন হয়েছে। গত কয়েক মাসে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত ও পদত্যাগের ঘটনা সরকারি হস্তক্ষেপের দাবিকে জোরালো করেছে। স্বাধীন অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গঠিত ইনফ্লেশন রিসার্চ গ্রুপ জানিয়েছে, জুনে তুরস্কের প্রকৃত বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১৭৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
কয়েক মাস ধরে ব্যাপক মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হওয়া এক দেশের জন্য এটি আরেকটি ভয়াবহ মাইলফলক। ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা লিরার বিনিময় হার ২০ শতাংশেরও বেশি হারিয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো তুর্কি অর্থনীতিও নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের অপ্রচলিত অর্থনৈতিক নীতিগুলো এ সংকটগুলোকে আরো গভীর করেছে। যেমন বিপর্যস্ত লিরা আমদানিকে আরো ব্যয়বহুল করে তুলেছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন মুদ্রানীতি কঠোর করছে, সেখানে এরদোগান কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুদের হার কমাতে বাধ্য করেন। এমন কিছু বিপরীত নীতিই দেশটির অর্থনীতিকে বিপর্যয়ে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট যুক্তি দিয়ে চলেছেন, মুদ্রানীতি শিথিল করার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে এবং উৎপাদন ও রফতানি বাড়বে। পাশাপাশি তিনি তার দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপকে দায়ী করেছেন। তুরস্কের অর্থমন্ত্রী নুরেদ্দিন নেবাতি এক টুইট বার্তায় বলেন, বিশ্বজুড়ে পণ্যমূল্যের উচ্চবৃদ্ধি, বিশেষ করে জ্বালানি ও কৃষিপণ্যের অব্যাহত বৃদ্ধি জুনে মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার বিক্রি কর কমানো ও ভর্তুকি দেয়াসহ জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় মোকাবেলায় জনগণকে রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। গত সপ্তাহে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ঘোষণা করেছিলেন, চলতি মাসে সরকার ন্যূনতম মজুরি ৩০ শতাংশ বাড়াবে। শ্রমিকদের ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় মোকাবেলায় এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
[IMG][/IMG]