মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার
চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৩৬ হাজার নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। যদিও তা প্রত্যাশার তুলনায় কম। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মক্ষেত্রের প্রবৃদ্ধি বেশ মন্থর ছিল। কিন্তু এ সময় সেখানে বেকারত্বের হারও ছিল খুবই কম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ উচ্চ ঋণ হারের খরচের মধ্যেও বেশ স্থিতিস্থাপক রয়েছে। ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের প্রকাশিত গত মার্চের জব রিপোর্ট বলছে, এ সময় বেকারত্বের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশে, যা ইতিহাসে সবচেয়ে কম। অর্থনীতিবিদদের ধারণা ছিল, নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হবে ২ লাখ ২৯ হাজার, আর বেকারত্বের হার কমে দাঁড়াবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে। গত ১২ মাসের মধ্যে এবারই প্রথম ফল প্রত্যাশার নিচে নামল। দেশটির শ্রম বিভাগ জানায়, ২০২২ সালের মার্চে দেশটিতে ২ লাখ ৩৬ হাজার নতুন কর্মক্ষেত্র যুক্ত হয়। সেটা যদিও ফেব্রুয়ারির তুলনায় বেশ কম। এসব তথ্য খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে ফেডারেল রিজার্ভ। কেননা ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়াচ্ছে। সুদহার বেড়ে যাওয়ার অর্থ ঋণ গ্রহণ আরো বেশি ব্যয়বহুল হবে। আর বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যদি কম ঋণ নেয়, তাহলে তারা নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করতে পারবে না। এমনকি কর্মী ছাঁটাইও করতে হবে। [IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/881723154.png[/IMG]
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগের সাম্প্রতিক এ প্রতিবেদনে পরিস্থিতি বদলানোর কথা বলা হচ্ছে। তবে নির্মাণ, উৎপাদন ও খুচরা খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি বেতন-ভাতাও কমছে। মার্চে ঘণ্টাপ্রতি বেতন বেড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ যা ফেব্রুয়ারির ৪ দশমিক ৬ শতাংশের তুলনায় কম। ২০২১ সালের মাঝামাঝির পর এবারই বেতন সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভের কর্মকর্তারা উচ্চমূল্যস্ফীতিত লাগাম টানার লড়াইয়ে তাদের সাহায্য করার জন্য মার্কিন চাকরির প্রবৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছে। অর্থনীতিবিদদের অনুমান, ফেডের দৃষ্টিকোণ থেকে মার্চের ফল মাঝামাঝি মানের হবে। ২০০৭-২০০৯ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর এবারই সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার মুখে পড়েছে ব্যাংক। ফলে স্বল্প সময়ের জন্য নীতিনির্ধারকদের মূল মনোযোগ মূল্যস্ফীতি থেকে সরে গিয়ে অর্থনৈতিক স্থিরতার দিকে ঝুঁকে পড়ে।
গত ১২ মাসে, শ্রম বাজারে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ৪১ লাখ কর্মক্ষেত্র। সে হিসাবে প্রতি মাসে যুক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৭টি নতুন চাকরির ক্ষেত্র। এতেই এক দশকের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে বেকারত্বের হার। এদিকে রয়টার্স পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন চাকরির ক্ষেত্র যুক্ত হয়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার, বার্ষিক হিসেবে ঘণ্টায় বেতন বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ আর বেকারত্বের হার সীমাবদ্ধ ছিল ৩ দশমিক ৬ শতাংশে। তুলনা করে দেখা যায়, কভিড-১৯ মহামারীর আগে কর্মক্ষেত্র প্রবৃদ্ধির গড় মাত্রা ছিল প্রতি মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার, বেতন প্রবৃদ্ধি এ সময়ে ছিল ২ থেকে ৩ শতাংশ।