যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ৪.৯%
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/454107923.jpg[/IMG]
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৪ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রবৃদ্ধির গতি ছিল দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। শ্রমবাজারে মজুরি বৃদ্ধি ও ভোক্তাচাহিদা পূরণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান র কার্যক্রম পুনরুদ্ধার প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি ব্যয় বাড়লেও দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো নিম্নমুখী ছিল কম্পিউটারের যন্ত্রপাতি ও কারখানা নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন দেশটিতে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এ মুহূর্তে। অবশ্য প্রবৃদ্ধির এ গতিকে টেকসই বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের উচ্চ সুদহারের কারণে ব্যাহত হবে প্রবৃদ্ধির গতি। অটো বা গাড়ি নির্মাণ খাতে কর্মীদের বিক্ষোভ, শিক্ষার্থীদের ঋণ ফেরত কার্যক্রম ও সুদহার বাড়ানোর প্রভাব এর মূল কারণ। চলতি সপ্তাহে ইউরোজোনে সুদের হার ৪ শতাংশে সীমিত রাখার বিষয় জানিয়েছে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি)। যে কারণে বর্তমানে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। এর আগে টানা ১০ বার সুদহার বাড়িয়েছে ব্যাংকটি। এরই মধ্যে অঞ্চলটিতে মূল্যস্ফীতির হার সর্বোচ্চ থেকে কমে ৪ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা অর্ধেকেরও কম। তবে এর হার ২ শতাংশে নামিয়ে আনাই অঞ্চলটির লক্ষ্য।
আগামী সপ্তাহে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠক হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, হয়তো সেখানে সুদ হার না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। বর্তমানে দেশটির মূল্যস্ফীতি হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা পাউন্ডের মান সর্বনিম্নে চলে এসেছে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীদের আশা কেন্দ্রীয় ব্যাংক হয়তো সহসাই সুদহার বাড়াবে না।অন্যদিকে কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি (সিবিআই) সম্প্রতি নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতারা ছয় বছরের মধ্যে চলতি অক্টোবর মাস সবচেয়ে খারাপ কাটিয়েছে। মূলত জীবনযাপন খরচ বাড়ায় গ্রাহক পর্যায়ে ব্যয় কমেছে।
সিবিআইয়ের অর্থনীতিবিদ মার্টিন সার্টোরিয়াস বলেন, ‘খুচরা বিক্রি খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার কমলে তা পরিবারের আয় বাড়াতে সহায়তা করবে। কিন্তু জ্বালানি ক্রয় ও ঋণের খরচ খুচরা বিক্রেতাদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধিতে থাকলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে যুক্তরাজ্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ুলো। ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পাশাপাশি ক্রমাগত কমছে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদাও। ফলে দেশটির অর্থনীতি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মন্দার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর কয়েকটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশটির অর্থনীতিতে এমন সময় মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যখন সেখানকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন করে সুদহার বাড়ানো কিংবা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি সুদহার অপরিবর্তিত রাখতে পারে বলেও মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর জরিপগুলোর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ুলোয় অতিরিক্ত ব্যয়ের চাপ অনেকটা কমে এসেছে। আগের মতো ব্যয় খুব দ্রুত বাড়ছে। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে বলে মনে হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। মূলত চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমেছে। ফলে কাঁচামাল আমদানি থেকে শুরু করে উৎপাদনসংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রেই ব্যয় কমেছে।
কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি (সিবিআই) কারখানার ওপর পরিচালিত একটি পৃথক জরিপে দেখা যায়, কারখানাগুলোয় নতুন ক্রয়াদেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২১ সালের পর এবার সবচেয়ে কম ক্রয়াদেশ এসেছে। নতুন ক্রয়াদেশ সংখ্যা কমে যাওয়ার সঙ্গে কারখানাগুলো উৎপাদন ব্যয়ের চাপও কমে এসেছে। তাই কারখানাগুলোয় নতুন ক্রয়াদেশ কমে আসার মূল কারণ উৎপাদন ব্যয় চাপ কমে আসা ও নতুন শ্রমিক নিয়োগ কম হওয়া, উভয়ই এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত এ তথ্যগুলো যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে বিদ্যমান হতাশাকে আরো বাড়িয়েছে।