যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা ব্যয় বেড়েছে অপ্রত্যাশিত

উচ্চ সুদহার ও মূল্যস্ফীতির হতাশা সত্ত্বেও গত বছরের শেষ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই এ সময় দেশটির জনগণ তাদের ভোগব্যয় বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট জিডিপি আগের প্রান্তিকের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়েছে। অক্টোবর-ডিসেম্বরে পরিসংখ্যান যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদের অভিঘাত সহনশীলতাকেই সামনে নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। টানা ছয় প্রান্তিক ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২ শতাংশের ওপরে ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মোট অর্থনীতির প্রায় ৭০ শতাংশে ভোক্তারা অবদান রেখেছে, যা চতুর্থ প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধিকে নিশ্চিত করেছে। এ সময় পোশাক, আসবাব, বিনোদনমূলক পণ্য থেকে শুরু করে হোটেল ও রেস্তোরাঁর খাবারের মতো সেবা বাড়ায় ব্যয় বার্ষিক ২ দশমিক ৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হচ্ছে, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির জোরালো গতির মাঝে মূল্যস্ফীতি কিছুটা সহজ হতে চলেছে। ভোক্তা মূল্যসূচক বার্ষিক ১ দশমিক ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে, যা তৃতীয় প্রান্তিক থেকে ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। খাদ্য ও জ্বালানির অস্থির বাজার বাদ দিলে মূল মূল্যস্ফীতির হার বার্ষিক ২ শতাংশ। [IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/795313456.jpg[/IMG]
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অর্থনীতির এ অবস্থা জনগণের মনে প্রভাব ফেলবে তা নিশ্চিত। লম্বা অস্থির সময় পার করে এবার আমেরিকানরা মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতি সম্পর্কে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। এমন প্রবণতা ভোক্তাদের ব্যয় বাড়তে পারে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারে এবং সম্ভাব্য ভোটারদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এদিকে হাই ফ্রিকোয়েন্সি ইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ রুবেলা ফারুকী বলেন, ‘আমরা আগামী প্রান্তিকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে চলমান সম্প্রসারণের পূর্বাভাস দিয়েছি।’ সঙ্গে সতর্ক করে জানান, উচ্চ ঋণের হার ভোক্তাদের ব্যয় ও জিডিপিকে কমিয়ে দিতে পারে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া সত্ত্বেও এখানো সামগ্রিকভাবে মহামারীর আগে থেকে প্রায় ১৭ শতাংশ ওপরে রয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মহামারী সঞ্চয় নিঃশেষ হয়ে যাওয়া, ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারসীমা পার হওয়া এবং উচ্চতর ঋণজনিত ব্যয় হ্রাসের কারণে আগামী মাসে অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়বে। এসব আশঙ্কার মধ্যে গত সপ্তাহের প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বরে ছুটির মৌসুমে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ব্যয় করেছে ভোক্তারা। এমনকি পরামর্শক সংস্থা আরএসএমের প্রধান অর্থনীতিবিদ জো ব্রুসুলাস বলেছেন, ‘প্রতিবেদনের চেয়েও ভোক্তাদের ব্যয় বেশি শক্তিশালী ছিল।’