বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফরেক্স ট্রেডিং
বাংলাদেশে ফরেক্স ট্রেডিং সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
১. বৈধতা ও নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশে সরাসরি ফরেক্স ট্রেডিং: বাংলাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক (BB) দ্বারা অনুমোদিত কিছু ব্যাংক এবং অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন বৈধ, তবে সাধারণ খুচরা (retail) ট্রেডারদের জন্য সরাসরি ফরেক্স ব্রোকারদের মাধ্যমে ট্রেড করা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট ১৯৪৭ অনুযায়ী অনুমোদিত নয়। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক অনলাইন ফরেক্স ব্রোকারদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সরাসরি ফরেক্স ট্রেডিং বাংলাদেশে আইনত নিষিদ্ধ।
নেতিবাচক ধারণা তৈরি: এই নিয়ন্ত্রক কাঠামোর কারণে, অনেকে ফরেক্স ট্রেডিংকে একটি "অবৈধ" বা "ঝুঁকিপূর্ণ" কার্যকলাপ হিসেবে দেখে থাকেন, যা এর সম্মানজনকতার ধারণায় প্রভাব ফেলে।
২. দক্ষতা ও জ্ঞান: প্রয়োজনীয় দক্ষতা: ফরেক্স ট্রেডিংয়ে সফল হতে হলে গভীর জ্ঞান, বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং মানসিক শৃঙ্খলার প্রয়োজন। যারা এসব বিষয়ে দক্ষ হন, তারা পেশাদার ট্রেডার হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেন।
সাধারণ ধারণা: তবে, সমাজের একটি বড় অংশের কাছে ফরেক্স ট্রেডিংকে "জুয়া" বা "দ্রুত টাকা হারানোর মাধ্যম" হিসেবে দেখা হয়, কারণ অনেকে পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়াই এতে প্রবেশ করে অর্থ হারান।
৩. সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা: নেতিবাচক অভিজ্ঞতা: যেহেতু অনেকে ফরেক্স ট্রেডিংয়ে অর্থ হারিয়েছেন (বিশেষ করে স্ক্যাম বা অদক্ষতার কারণে), তাই এর প্রতি সমাজের একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। "ফরেক্স" শব্দটি শুনলেই অনেকে এটাকে "ঝুঁকি" বা "প্রতারণা"র সাথে গুলিয়ে ফেলেন।
অজ্ঞতা: ফরেক্স মার্কেটের জটিলতা এবং এর কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণার অভাবও এর সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দেয়।
৪. অর্থনৈতিক অবদান: যেহেতু খুচরা ফরেক্স ট্রেডিং বাংলাদেশে আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়, তাই এটি দেশের আনুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে সরাসরি বড় ধরনের অবদান রাখছে না। তবে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ফরেক্স বাজার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা:বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, নিয়ন্ত্রিত ব্রোকারদের মাধ্যমে ফরেক্স ট্রেডিং একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। তবে, যেহেতু বাংলাদেশে অনিয়ন্ত্রিত ব্রোকারদের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়, তাই অনেক সময় অনৈতিক কার্যকলাপ এবং প্রতারণার সুযোগ তৈরি হয়।
