ভারতে পিসির বাজার সম্প্রসারণ হয়েছে ৮.১%
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/391042988.jpg[/IMG]
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ভারতের ব্যক্তিগত কম্পিউটার (পিসি) বাজারে ৮ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় টানা সপ্তম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রেখে মোট ৩৩ লাখ ইউনিট পিসি বিক্রি হয়েছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড কোয়ার্টারলি পারসোনাল কম্পিউটিং ডিভাইস ট্র্যাকার’ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আইডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিসির মধ্যে নোটবুক বিক্রি ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। ওয়ার্কস্টেশনের বিক্রি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে ডেস্কটপ বিক্রি ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। এদিকে ১ হাজার ডলারের বেশি দামের প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির নোটবুক বিক্রি ৮ শতাংশ বেড়েছে। বিশেষভাবে নজর কেড়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর নোটবুক, যেগুলোর বিক্রি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৮৫ শতাংশ। যদিও ভিত্তি ছোট থাকায় এআই-নির্ভর নোটবুকের বাজারে তুলনামূলক বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোক্তা খাতে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এসেছে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিশেষ অফার ও মার্চে বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে পণ্যের সরবরাহ বাড়ার কারণে। অনলাইন বিক্রির মাধ্যমে বিক্রি বেড়েছে ২১ দশমিক ৯ শতাংশ। অন্যদিকে বাণিজ্যিক খাতেও ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে সরকারি ক্রয় কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক ডেস্কটপের বিক্রি ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
আইডিসি ইন্ডিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার রিসার্চ ম্যানেজার ভরত শেনয় বলেন, ‘অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে, সঙ্গে সঙ্গে ব্র্যান্ডগুলো অফলাইন স্টোরও বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি বড় খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে এবং অনলাইনে ছাড় ও ক্যাশব্যাক দেয়া হচ্ছে। এসব কারণ ভোক্তা খাতে বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করেছে। তবে সরবরাহ বেশি হওয়ায় বর্তমান বাজারে পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে, যা ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ হতে পারে।’
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি বাজার হিস্যা ছিল এইচপি ইনকরপোরেটেডের, যার পরিমাণ ২৯ দশমিক ১ শতাংশ। বিশেষ করে বাণিজ্যিক খাতে কোম্পানিটির হিস্যা ছিল ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ, যেখানে এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকদের কাছ থেকে ৬০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি এসেছে। তবে ভোক্তা খাতে পণ্য মজুদ সমন্বয় করতে গিয়ে বিক্রি ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে।
১৮ দশমিক ৯ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে লেনোভো। ভোক্তা খাতে কোম্পানিটি ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ ও বাণিজ্যিক খাতে ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। খুচরা ও অনলাইন চ্যানেলে সক্রিয় উপস্থিতি এবং ছোট-মাঝারি ব্যবসার (এসএমই) চাহিদাই এ প্রবৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ।
ডেল টেকনোলজিস ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ হিস্যা নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাণিজ্যিক খাতে ২২ শতাংশ হিস্যার পাশাপাশি এন্টারপ্রাইজ বিক্রির জোরেই এ অবস্থান ধরে রেখেছে কোম্পানিটি। তবে ভোক্তা খাতে পণ্যের মজুদ কমানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বিক্রি কমে যায়। ফলে তারা অ্যাপলের নিচে নেমে ছয় নম্বরে চলে গেছে। এসার ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। ভোক্তা খাতে তাদের বিক্রি ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে সরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান র ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক খাতে তাদের বিক্রি ২১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।
পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে আসুস, যার বাজার হিস্যা ৬ শতাংশ ও প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকের শুরুতে পণ্যের মজুদ কম থাকায় কোম্পানিটি বেশি ইউনিট সরবরাহ করতে পেরেছে। আসুস ধীরে ধীরে বাণিজ্যিক খাতেও গুরুত্ব দিচ্ছে, যেখানে তাদের বিক্রি ৪১ শতাংশ বেড়েছে।
আইডিসি ইন্ডিয়ার অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট নভকেন্দর সিং বলেন, ‘এন্টারপ্রাইজ ক্রয় অব্যাহত থাকলেও ভারতের আইটি খাত কিছুটা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে এআই ও গেমিং নোটবুকের চাহিদা সামনের প্রান্তিকগুলোয়ও বাজারে গতি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।’