পৃথিবীর সাতটি শ্বাসরুদ্ধকর শূন্যস্থান
দারভাজা গ্যাস ক্রেটার
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/245841952.jpg[/IMG]
তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির বুকে, বালুর ঢেউয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলোর একটি—দারভাজা গ্যাস ক্রেটার, যা ‘জাহান্নামের দরজা’ নামে বেশি পরিচিত। ১৯৭১ সালে একটি ব্যর্থ খনন অভিযানের ফলে ভূগর্ভস্থ গ্যাস পকেটে ফাটল ধরে এই গর্ত তৈরি হয়। গ্যাস নির্গমন রোধ করতে বিজ্ঞানীরা আগুন ধরিয়ে দেন, ভেবেছিলেন আগুন দ্রুত নিভে যাবে। কিন্তু আজও সেই আগুন অবিরত জ্বলছে, আর মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে—প্রকৃতির শক্তি আর মানুষের ভুল কতটা ভয়ংকর হতে পারে।
বিগ হোল ডায়মন্ড মাইন
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1218773463.jpg[/IMG]
দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলি শহরের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত মানবসৃষ্ট শূন্যতা—বিগ হোল ডায়মন্ড মাইন। ১৯শ শতকের শেষ দিকে এখানে পৃথিবীর অন্যতম বড় হীরার খনি আবিষ্কৃত হয়। পরবর্তী কয়েক দশক ধরে শ্রমিকরা হাতে হাতে কোটি কোটি টন মাটি সরিয়ে প্রায় ২০০ মিটার গভীর এই খনিগর্ত তৈরি করেন। আজ এটি দাঁড়িয়ে আছে হীরা উত্তোলনের এক চিত্রময় স্মারক হিসেবে।
বিঙ্গহ্যাম ক্যানিয়ন মাইন
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/133194038.jpg[/IMG]
যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের সল্ট লেক সিটির কাছে অবস্থিত বিঙ্গহ্যাম ক্যানিয়ন—যা পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ তামা খনির গর্ত। ১৯০৬ সালে এই খনির খননকার্য শুরু হয়, যা এখনও চলমান রয়েছে। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে গড়ে উঠেছে এক বিশাল গর্ত, যার প্রস্থ ৪ কিলোমিটার আর গভীরতা ১.২ কিলোমিটারের বেশি। বিঙ্গহ্যাম ক্যানিয়ন কেবল আকারেই বিস্ময়কর নয়, বরং দেখিয়ে দেয়—খনিজ উত্তোলন কীভাবে পুরো একটি ভূপ্রকৃতি পাল্টে দিতে পারে।
মর্নিং গ্লোরি পুল
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/382433778.jpg[/IMG]
মর্নিং গ্লোরি পুল শুধু একটি রঙিন উষ্ণ জলাশয় নয়—এটি একটি প্রকৃত ভূতাপীয় সিঙ্কহোল, যা পৃথিবীর গভীর পর্যন্ত অবস্থিত। ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এই পুল নিখুঁত বৃত্তাকার গঠন আর বিস্ময়কর রঙের জন্য বিখ্যাত—মাঝখানে নীল, চারদিকে হলুদ ও সবুজ। এই রঙের উৎস হচ্ছে তাপপ্রিয় ব্যাকটেরিয়া, যারা বিভিন্নরকম তাপে বেঁচে থাকে। পৃষ্ঠের শান্ত সৌন্দর্যের নিচে ঘূর্ণায়মান রয়েছে এক সক্রিয় ভূতাপীয় সিস্টেম, যা যেকোনো সময় জেগে উঠতে পারে।
গ্রেট ব্লু হোল
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1905809447.jpg[/IMG]
বেলিজ উপকূলে, ক্যারিবিয়ান সাগরের ফিরোজা জলের মাঝে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম চমকপ্রদ প্রাকৃতিক সৃষ্টি—গ্রেট ব্লু হোল। এই দৈত্যাকার সামুদ্রিক সিঙ্কহোল প্রায় ৩০০ মিটার চওড়া ও ১২০ মিটার গভীর। হাজার বছর আগে, সমুদ্রপৃষ্ঠ নিচু থাকাকালে এটি গঠিত হয়। উপর থেকে এটি সাদা জলরাশির মাঝে এক গভীর নীল বৃত্তের মতো দেখায়। এটি শুধু এক ভূতাত্ত্বিক বিস্ময় নয়, বরং বিশ্বের সেরা স্কুবা ডাইভিং গন্তব্যগুলোর একটি, যা এর গভীরতা, নিখুঁত গঠন ও রহস্যময় পানির নিচের প্রাচীরের জন্য বিখ্যাত।
ডায়াভিক ডায়মন্ড মাইন
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/527088711.jpg[/IMG]
কানাডার উত্তর-পশ্চিমাংশে, আর্কটিক সার্কেলের কাছাকাছি বরফে ঘেরা দ্বীপে অবস্থিত ডায়াভিক ডায়মন্ড মাইন—দেশটির অন্যতম বৃহৎ হীরা খনি। এর ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য শুধু উৎপাদন ক্ষমতায় নয়, বরং অবস্থানে—যা একটি হিমায়িত হ্রদের মাঝখানে ছোট একটি দ্বীপে অবস্থিত। খোলা গর্তের খনি হওয়ায় উপর থেকে এটি বিশাল গর্তের মতো দেখায়, যেন বরফময় ভূমিতে খোদাই করা হয়েছে। ডায়াভিক প্রমাণ করে—আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কীভাবে তুষার-ঢাকা অঞ্চলেও দক্ষতার সঙ্গে খনন কাজ চালানো সম্ভব।
ড্রাগন হোল সিঙ্কহোল
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/2098903179.jpg[/IMG]
দক্ষিণ চীন সাগরের পানির নিচে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর জলমগ্ন সিঙ্কহোলগুলোর একটি—ড্রাগন হোল। এই কার্স্ট গঠনের গভীরতা ৩০০ মিটারেরও বেশি, যা একে বিশ্বের গভীরতম সামুদ্রিক ব্লু হোল হিসেবে স্থান দিয়েছে। এর খাড়া প্রাচীরগুলো ঘুটঘুটে অন্ধকারের দিকে নামতে থাকে, আর ভেতরের পরিবেশে তৈরি হয়েছে এক ধরনের আবদ্ধ বাস্তুসংস্থান। বিজ্ঞানীরা এই প্রাকৃতিক বিস্ময়কে ঘিরে গবেষণা চালাচ্ছেন, কারণ ধারণা করা হয় এর গভীরে এমন জীবজগৎ রয়েছে, যা পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই।