-
কর্মী সংকটে ভয়াবহ চাপে ব্রিটিশ অর্থনীতি
গত বছরের শুরু থেকে কর্মী সংকট দেখা দেয় যুক্তরাজ্যজুড়ে। কভিড-১৯ মহামারীর পাশাপাশি ব্রেক্সিটের প্রভাব এ সংকটকে আরো ঘনীভূত করে। এরই মধ্যে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে জ্বালানি সংকট। কর্মী সংকটের প্রভাব থেকে বাদ যায়নি পরিবহন, কৃষি থেকে শুরু করে আতিথেয়তা পর্যন্ত কোনো খাতই। অর্থনীতির প্রতিটি অংশে ছড়িয়ে পড়া এ সংকট মধ্যম আকারের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর গুরুতর চাপ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫০০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। জরিপে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, কর্মীদের অভাব স্বাভাবিক স্তরের কাজের সক্ষমতার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি মজুদ কমে যাওয়ায় সংস্থাগুলোর সরবরাহ চেইন ব্যাহত হচ্ছে ও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ সংকট মোকাবেলায় কিছু প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে এবং কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ফলে ক্রিসমাসের কেনাকাটার মৌসুম ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। জরিপের প্রায় ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তারা নতুন কর্মীদের আকৃষ্ট করার জন্য মজুরি বৃদ্ধি করছে এবং অন্যরা শ্রমিকদের প্রলুব্ধ করার জন্য অতিরিক্ত নানা সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে।
অ্যাকাউন্টিং ও পরামর্শক সংস্থা বিডিওর করা জরিপে বলা হয়েছে, এ সংকটে ভোক্তাদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যবসায়ী বলেছে, এ সংকট মোকাবেলায় আগামী তিন থেকে ছয় মাস পণ্যের দাম বাড়াতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার দাম বাড়ানোর পরিবর্তে পণ্য ও পরিষেবার ধরনগুলো কমিয়ে এনেছে। এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান এ পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে। আরো এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান পরিস্থিতি আমূল উন্নতি না হলে আগামী মাসে একই পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
বণিক বার্তা
-
নিউজিল্যান্ডে সাত বছরে প্রথমবারের মতো সুদহার বৃদ্ধি
সুদহার বৃদ্ধি করেছে নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল এ ঘোষণা দেয় রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড (আরবিএনজেড)। একই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কঠোরতার ইঙ্গিতও প্রদান করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মুদ্রাস্ফীতির চাপের উপরে উঠতে এবং উত্তপ্ত আবাসন মার্কেটে শিথিল অবস্থা আনয়ন করতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধির হার একটি কঠিন চক্রের সূচনা করে, যা চলতি বছরের আগস্টে শুরু হওয়ার কথা ছিল। নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডে লকডাউন ঘোষণার ফলে এ ঘোষণা পিছিয়ে দেয়া হয়। আরবিএনজেডের নগদ হার দশমিক ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি সম্পর্কে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল রয়টার্সের ২০ জন অর্থনীতিবিদ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ঘোষণার পর মার্কিন ডলারের বিপরীতে নিউজিল্যান্ড ডলারের মূল্য সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে বিস্তৃত বাজার ব্যবস্থার কারণে তা পরবর্তী সময়ে হ্রাস পেয়ে প্রতি নিউজিল্যান্ড ডলারের বিপরীতে মার্কিন ডলারের দর ৬৯ সেন্টে দাঁড়ায়।
ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ডের জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক জেসন ওং বলেন, সুদহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যে পন্থা অবলম্বন করছিল, তার সঙ্গে আরবিএনজেডের এ পদক্ষেপের বেশ মিল রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা বর্তমানে সুদহার বৃদ্ধির একটি সিরিজ প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছি। বাজার ব্যবস্থা এর জন্য উপযুক্ত অবস্থানে রয়েছে।
সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পর আরবিএনজেড জানায়, মুদ্রানীতি প্রণোদনা প্রত্যাহার করার ব্যাপারটি প্রত্যাশিত ছিল। মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের মাঝারি দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সুদহার বৃদ্ধির এ পদক্ষেপ অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় নিউজিল্যান্ডকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। জরুরি পরিস্থিতিতে গৃহীত ঋণের খরচ ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর উদ্যোগের ফলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও নরওয়ে, চেক রিপাবলিক এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোও সুদহার বৃদ্ধি করেছে।
বণিক বার্তা
-
বাণিজ্য বৈঠকে চীন-যুক্তরাষ্ট্র
দীর্ঘ বিরতির পর আবারো দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দুই দেশের কর্মকর্তারা একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। খবর এপি।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির শীর্ষ বাণিজ্য আলোচক লিউ হি মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন তাইয়ের প্রতি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আলোচিত ‘ফেজ ১’ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি অন্যান্য প্রধান অর্থনৈতিক উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিবৃতি অনুসারে, উভয় পক্ষ বাস্তববাদী, অকপট ও গঠনমূলক আলোচনা করেছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি তাই জানিয়েছিলেন, তিনি শুল্কযুদ্ধ সমাধানের লক্ষ্যে একটি অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বেইজিংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার পরিকল্পনা করছেন।
আলোচনায় চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হি চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা বাতিলের বিষয়ে জোর দেন।
দুই দেশের বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান ঘটাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ফেজ ১’ বাণিজ্য চুক্তি প্রণয়ন করেছিলেন। বেইজিংয়ের শিল্পনীতি ও বাণিজ্য উদ্বৃত্তের অভিযোগ তুলে ট্রাম্পই চীনের পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়েছিলেন। অন্যদিকে মার্কিন সয়াবিন কেনা বন্ধ এবং অন্যান্য পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে প্রতিশোধ নেয় চীন।
বণিক বার্তা
-
ব্রিটেনে শিল্প উৎপাদন বন্ধের হুমকি
ব্রিটেনের বেশির ভাগ শিল্প উৎপাদকরা, বিশেষ করে স্টিল, গ্লাস, সিরামিক ও কাগজ কল মালিকরা উৎপাদন বন্ধের হুমকি দিয়েছেন সরকারকে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, জ্বালানির মূল্য লাফিয়ে বাড়ছে। উৎপাদকরা বলছেন, গ্যাসসহ জ্বালানিপণ্যের পাইকারি মূল্য কমানো না হলে স্টিল উৎপাদন চলমান রাখা সম্ভব নয়। খবর রয়টার্স।
এদিকে ইউরোপে চলতি বছর কয়েক দফায় পাইকারি বাজারে গ্যাসের দাম বেড়েছে অন্তত ৪০০ শতাংশ। এশিয়ায় গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি ও মজুদ কমে যাওয়ায় ইউরোপে এমন প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী জ্বালানির দাম কমানোর বিষয়ে কোনো সহযোগিতা ব্যবসায়ীদের করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাজ্য স্টিল লিমিটেডের পরিচালক গ্যারেথ স্টেস বলেছেন, ‘জ্বালানির দাম না কমানো হলে প্রতিদিনই চাপের মধ্যে উৎপাদনকাজ চালিয়ে যেতে হবে। এভাবে একদিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।’
যুক্তরাজ্যের সরকারের বক্তব্য, বর্তমান সংকটের ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে নজর দিতে হবে। এ খাতে বিপ্লব ঘটানো ছাড়া সমাধান সম্ভব হবে না। দেশটির গ্যাস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের সিইউ ডেভিড ডেলটন বলেছেন, অনেক কোম্পানি প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে।
তবে ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, তিনি জ্বালানির দাম কমিয়ে আনতে আগামীতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। যদিও তার এ আশ্বাসকে টিকে থাকার জন্য পর্যন্ত মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা।
বণিক বার্তা
-
যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা
যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বরে নিত্যপণ্যের চাহিদা ও খুচরা বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। তবে বাজার বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সরবরাহের সীমাবদ্ধতা ও পণ্য সংকটের কারণে ছুটির মৌসুমে সামগ্রিক বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়বে। খবর রয়টার্স।
সম্প্রতি দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বিক্রি বৃদ্ধির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত মাসে খুচরা বিক্রির হার শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আগস্টে এ বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদরা খুচরা বিক্রির হার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ভোক্তারা ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন দেশটির অর্থনীতিবিদরা। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিক্রি বৃদ্ধির যে তথ্য প্রদান করা হয়েছে, সেটি অর্থনীতিবিদদের ধারণায় তেমন কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। টরন্টোভিত্তিক বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিএমওর প্রবীণ অর্থনীতিবিদ সাল গুয়াটিয়েরি বলেন, খুচরা বিক্রির যে প্রতিবেদন সেটি ভোক্তাদের স্থিতিস্থাপকতা ও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকেই নির্দেশ করে। বর্তমান সময়ে সরবরাহ সংকট ও মাইক্রো চিপের ঘাটতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। ফলে ক্রেতাদের পছন্দের পণ্যের পরিমাণ কমছে ও চাহিদা বাড়ছে।
বণিক বার্তা
-
আগামী বছরে ৫% মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা যুক্তরাজ্যের
আগামী বছরে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৫ শতাংশ। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (বিওই) এক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ এ পূর্বাভাস দেন। উপকরণ ও শ্রমিকস্বল্পতায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যাহত হওয়ায় এমনটা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। খবর সিএনএন বিজনেস।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া সাক্ষাত্কারে বিওই অর্থনীতিবিদ হাও পিল জানান, সামনের মাসগুলোতে ৫ শতাংশের উপরে মূল্যস্ফীতি থাকলে আমি অবাক হব না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেখানে ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে, তাতে আমরা খারাপ অবস্থাতেই আছি।
৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী পলিসি মিটিংয়ে সুদহার নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সেখানে তিনি সুদহার বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দেবেন কিনা এ বিষয়ে মন্তব্যে অস্বীকৃতি জানান পিল। মূল্যস্ফীতি কমাতে এবং স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
২০২০ সালের সংকোচন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি ৩ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। তবে আর্থিক পুনরুদ্ধার যে ঝুঁকির মুখে আছে সাম্প্রতিক কিছু উপাত্তে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি বেশ ঊর্ধ্বমুখী।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের (ওএনএস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে আরো উদ্বেগের বিষয় উঠে এসেছে। শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে টানা পাঁচ মাসের মতো খুচরা বিক্রি কমেছে যুক্তরাজ্যের। ১৯৯৬ সাল থেকে এ উপাত্ত রাখার শুরুর পর একটানা মাসের দিক থেকে এটা সর্বোচ্চ শ্লথগতি। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি অন্যান্য খাতের বিক্রিও হতাশাজনক। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি এবং ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সদ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে আসা দেশটি অর্থনৈতিক স্থবিরতায় প্রবেশ করতে পারে, এমন উদ্বেগ অনেক অর্থনীতিবিদের।
বণিক বার্তা
-
চলতি বছরও প্রতিশ্রুত অনুদান দিতে ব্যর্থ হবে উন্নত দেশগুলো
প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি ডলার অনুদান সরবরাহের লক্ষ্য ছিল ধনী দেশগুলোর। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলায় দরিদ্র দেশগুলোকে এ সহায়তা দেয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। চলতি বছরও এ সহায়তার সব অর্থ পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। খবর এপি।
যুক্তরাজ্য, কানাডা ও জার্মানির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রত্যাশা করেছিলেন, অর্থ অনুদান নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা হয়তো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে। হয়তো জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন বা কপ২৬-এর আগেই তা হয়ে যাবে। কিন্তু সেটি হয়নি। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের আগে এ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছা সম্ভব নয়। অর্থাৎ অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রুতি ঘোষণার তিন বছর পর তা পাওয়া যেতে পারে।
চলতি মাসের শেষ দিন গ্লাসগোয় হতে যাওয়া জলবায়ু আলোচনায় যুক্তরাজ্যের পক্ষে সভাপতিত্ব করবেন সংসদ সদস্য অলোক শর্মা। তিনি বলেন, ২০২০ সালের লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিতভাবেই নষ্ট হয়েছে। এর আগে প্রথম প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ হয় ২০০৯ সালে। এরপর ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু আলোচনায় নতুন করে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। সে সময়টা ছিল উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য গভীর হতাশার।
সময়মতো অর্থায়নের ঘাটতির জন্য অলোক শর্মাকে এখন দরিদ্র দেশগুলোর হতাশার মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলছেন, সামনের বছরগুলোতে ধনী দেশগুলোকে অর্থায়ন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলার অর্থায়নের বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে। সময়ের সঙ্গে অনুদানের অর্থের পরিমাণও বাড়াতে হবে। ২০২৫ সাল নাগাদ এ অর্থ ১১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে।
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী জোনাথান উইলকিনসন ও জার্মানির উপপরিবেশ মন্ত্রী জোসেন ফ্ল্যাশবার্থ। প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সংস্থাটি জলবায়ু খাতে বিশ্বের দেশগুলোর অর্থায়ন পর্যবেক্ষণ করে।
বণিক বার্তা
-
ইউরোপের ভোক্তামূল্য ১৩ বছরের সর্বোচ্চে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউরোজোনভুক্ত (ইউরো মুদ্রা ব্যবহারকারী) ১৯টি দেশে ভোক্তামূল্য ১৩ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি ও নভেল করোনাভাইরাস মহামারী-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ইইউর পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের প্রকাশিত এক তথ্যে এমনটা দেখা যায়। খবর এপি।
ইউরোস্ট্যাট জানায়, সংস্থাটির ইউরোজোনভুক্ত দেশগুলোয় চলতি বছরের অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৪ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরে এসব অঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০০৮ সালের জুলাইয়ের পর এটিই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। ওই সময়েও মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ।
ইইউর ১৯টি দেশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির হার লক্ষ করা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিশ্বব্যাপী মহামারী-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু হওয়ার ফলে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের এ যাত্রা খুব একটা সহজভাবে যাচ্ছে না। সরবরাহ চেইনে নানা প্রতিবন্ধকতা বৈশ্বিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের চাহিদায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট এ পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে তুলছে। ফলে খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে খেলনাসামগ্রী ও অবকাশকালীন কেনাকাটার খরচ বেড়েছে বহুগুণ।
বণিক বার্তা
-
সেপ্টেম্বরে জাপানের শিল্পোৎপাদন কমেছে
জাপানের শিল্পোৎপাদনের হারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এ খাতের উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। মূলত সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ সংকটের কারণে গাড়ি উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে জাপানের গোটা শিল্পোৎপাদন খাতের হিসাবে। খবর কিয়োদো নিউজ।
দেশটির গাড়ি নির্মাণ শিল্পে আগের মাসের তুলনায় ২৮ দশমিক ২ শতাংশ সংকোচন হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলের পর এটিই সবচেয়ে বড় সংকোচন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় কভিড-১৯ মহামারী ও এ-সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধের কারণে গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও চিপ সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে জাপানের গাড়ি উৎপাদন শিল্পে। টানা তৃতীয় মাসের মতো গাড়ি উৎপাদন শিল্পে উৎপাদন কমছে। সাধারণ ও ব্যবসার কাজে ব্যবহূত যন্ত্রপাতি যেমন কনভেয়রস ও কম্প্রেসশনের উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
বণিক বার্তা
-
বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে আরো চাপ বাড়ার শঙ্কা
মহামারীর শুরু থেকেই বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে দেখা দেয় জটিলতা। ঘাটতি তৈরি হয় বিভিন্ন পণ্যের। কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিলের পর তুমুল ভোক্তা চাহিদা সরবরাহ চেইনের ব্যাঘাতকে আরো ঘনীভূত করেছে। কম্পিউটার থেকে শুরু করে অটোমোবাইল পর্যন্ত বিভিন্ন খাত যন্ত্রাংশ ঘাটতিতে বিপর্যস্ত অবস্থা পার করছে। সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমার পর অক্টোবরে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য প্রবাহের এ ব্যবস্থা আবারো জটিল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই টোল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ। ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে আরো চাপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সুয়েজ খাল পারাপারে টোল বাড়ছে ৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথে ব্যয় বৃদ্ধি সরবরাহ চেইনে আরো মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সামুদ্রিক এ পথ দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ সম্পন্ন হয়।
এদিকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সরবরাহ চেইনের প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকবে বলেও মনে করেন কিছু বিশেষজ্ঞ। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের সমীক্ষা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে কিছুটা হালকা হওয়ার পর অক্টোবরে মার্কিন সরবরাহ চেইনের চাপ আবারো বেড়েছে। অক্টোবরে লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী জাহাজের সংখ্যা সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
বণিক বার্তা