-
ব্রেক্সিট কি আদৌও হবে
[IMG]http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/640x359x1/uploads/media/2017/10/14/be29c7ba1ae9d0726f7e74184d1f9b9c-59e179502aec7.jpg?jadewits_media_id=1031671[/IMG]
গণভোটের পরেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্যে বের হয়ে যাবার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না। বরং এই ইস্যুতে দুজন ‘হেভিওয়েট’ মন্ত্রীর পদত্যাগ করে থেরেসা মের নেতৃত্বে এটা আদৌও হবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেছে।
মুলত এখন ব্রেক্সিট কার্যকর করতে গিয়ে মহা বিপাকে পড়েছে ব্রিটেন সরকার। দুটি কারণে এই বিপদ। প্রথমত, বিচ্ছেদের পর যুক্তরাজ্য ইইউর একক বাজারের সুবিধা হারাবে। এতে দেশের অর্থনীতি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, চাইলেও একক বাজার থেকে যুক্তরাজ্য নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে পারছে না, কারণ স্বাধীন আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের অংশ উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার উন্মুক্ত সীমান্ত বজায় রাখার চুক্তি (গুড ফ্রাইডে ডিল)।
-
ব্রেক্সিট কেবল নামেই হয়েছে, বাস্তবে এর কোন প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না, যদিও যুক্তরাজ্যের সংসদে এ সংক্রান্ত একটি বিল পাশ হয়েছে। কিন্তু ব্রেক্সিট বিলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে স্কটল্যান্ডের সংসদ এবং ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগ করায় ব্রেক্সিট বাস্থবায়নের সংকটে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এই বরিস জনসনই ছিলেন ইইউ ত্যাগের সমর্থক শিবিরের প্রধান নেতা। তাই টেরেসা মে'র জন্য ব্রেক্সিট চুক্তি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকছে। তাই ব্রেক্সিটের ভবিষ্যত কী হবে আর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি নির্ভর করবে ইউরোপীয় নেতাদের উপরেই?
-
যুক্তরাজ্যের আইন সভায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত একটা বিল পাশ হওয়ার পরও যুক্তরাজ্যের বের হওয়ার কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছেনা।বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন পদত্যাগ করায় ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের নুন সংকট তৈরি হয়েছে।
-
টেরিজা মে এর দলের মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে অনেক বিরোধ থাকলেও ৬ জুলাই তার মন্ত্রিসভায় ইইউ’র সঙ্গে মে’র ‘বাণিজ্যবান্ধব’ ব্রেক্সিট পরিকল্পনা অনুমোদন পায় এবং তিনি এটি নিয়ে দলকে দ্বিধাবিভক্ত না করার জন্য সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেরিজা মে এর ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন এবং এমনকি ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ট্রাম্প ব্রিটেনের সাথে সকল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি না করারও হুমকি দেন।
[IMG]http://cdn-rr1mu0hhwzsuhkwd.stackpathdns.com/media/imgAll/2016October/bg/may-n-trump-bg20170323102219.jpg[/IMG]
-
ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটের ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা করে কয়েক মাস জল ঘোলা করা হয়েছে, কিন্তু গত ২১মে জুলাই শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যুক্তরাজ্য সরকারের ব্রেক্সিট প্রস্তাবটি বাতিল করে দিয়েছে। এছাড়া গত ৬ ফেব্রুয়ারি ইইউ পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, সদস্যদেশগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের পর থেকে যুক্তরাজ্য ইইউ জোটে তাদের সব অধিকার হারাবে। ইইউ-ভুক্ত ২৮ দেশের মধ্য পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে অবাধ শুল্কমুক্ত অভিন্ন বাজারব্যবস্থার প্রচলন থাকলেও ব্রেক্সিটের পরও ইইউর সঙ্গে ব্রিটিশদের বাণিজ্য করা ইচ্ছা গ্রহণযোগ্য হবে না। এবং ইইউ জোটের সঙ্গে বাকি বিশ্বের নানা দেশের মধ্য শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ইত্যাদি নানা বিষয়ে ৭৫০টি চুক্তি রয়েছে। যার মধ্য অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিষয়ের চুক্তি রয়েছে ৬৫টি, ইইউ ত্যাগের ফলে যুক্তরাজ্যকে এখন এ চুক্তিগুলো আবারও নতুন করে করতে হবে।
সুতরাং এ বাণিজ্যবিষয়ক প্রস্তাব বাতিল হয়ে যাওয়ার পর ধারনা করা হচ্ছে যে হয়তো ব্রেক্সিট কোনো রকম চুক্তি ছাড়াই বলবৎ করা হবে।
-
আর মাত্র দুই মাস পর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর ৪০ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। যদিও এই শেষ মুহূর্তেও প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে তার বাণিজ্য-বান্ধব ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় নিজ দলেরও সর্ম্পুণ পাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত টেরিজা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা এবং ‘চেকারস প্ল্যান’ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত অবস্থা এর মধ্যে রয়েছে। যদিও যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর মধ্যে বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণ করে ব্রেক্সিট করাটা বেশ কঠিন হবে। যা্ইহোক ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট সফল করতে যুক্তরাজ্যকে ইইউ ত্যাগের চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে এবং সেই চুক্তি টেরিজা মে’কে তার পরিকল্পনা পার্লামেন্টে পাশ করাতে হবে।
-
গত শনিবার ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন তারা বেক্সিট এর খুব কাছাকাছি রয়েছে এবং ফলে খুব শিগগিরই যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেক্সিট চুক্তিতে সম্পূর্ণ হবে। তিনি মনে করেন নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে একটি ব্রেক্সিট চুক্তিতে বাস্তবায়িত হবে। ফলে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ইইউ ছাড়তে হবে। যদিও ৬ জুলাই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে মন্ত্রিসভায় তার ‘বাণিজ্যবান্ধব’ ব্রেক্সিট পরিকল্পনা উপস্থাপন করলেও ব্রাসেলসের সঙ্গে এখনও যুক্তরাজ্যের কোন বিচ্ছেদ পরিকল্পনা নেই।
-
ব্রেক্সিট অচলাবস্থাদুর করার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ‘অবস্থান পুনর্বিবেচনার’ জন্য আহ্বান জানিয়েছেন, এছাড়াও তিনি ব্রেক্সিট নিয়ে আরেকটি গণভোটের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। যদিও এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিরোধ হবার কোন সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না এবং আগামী নভেম্বরে মাসে ব্রেক্সিট নিয়ে শীর্ষ বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্য ও ইইউ এর নেতারা৷
-
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে অর্থনীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুক্তরাজ্য। তাই গত কয়েকমাস ধরে এই ইস্যুতে একেও পর এক ব্রেক্সিট বিরোধী মন্তব্য এবং সিদ্ধান্তে থেরেসার মের অবস্থান ক্রতাগত দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বর্ত মানে থেরেসা মে এর প্রসাশন প্রচন্ড চাপের মধ্যে আছে।
-
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন যে, ব্রেক্সিটের পর ইউরোপে প্রবেশদ্বারের ভূমিকা হারালেও যুক্তরাজ্যের ‘বৈশ্বিক সামর্থ্য অক্ষুণ্ন থাকবে। ফলে ব্রেক্সিটের পর ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের পর ব্রিটেনকে বৃহত্তর বৈশ্বিক বাণিজ্য চুক্তি ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপে (টিপিপি) স্বাগত জানানো হবে। মুলত টিপিপি চুক্তি হল জাপান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, কানাডা, মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়াসহ ১১টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি। প্রকৃত টিপিপিতে যুক্তরাষ্ট্রও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ চুক্তিটি থেকে দেশটিকে প্রত্যাহার করে নেন।
-
ব্রেক্সিট আর কত দূর? কেননা সম্প্রতি দেখা যায় ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যেতে এবং সমঝোতায় পৌঁছাতে আরো বাড়তি সময় লাগতে পারে। ব্রাসেলসে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফার বৈঠক হলেও বড় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। তাই ধারনা করা হচ্ছে ব্রেক্সিট সম্পন্ন হবার জন্য আরো বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হওয়ার শঙ্কায় চাপ বাড়ছে প্রধানমন্ত্রি থেরেসা মের।
-
ব্রেক্সিট বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মুখ্য সমঝোতাকারী মিশেল বাহনিয়ে জানিয়েছেন, বহুল আলোচিত ব্রেক্সিট নিয়ে ২৭ সদস্যের ব্লকটির সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পৌঁছেনি ব্রিটেন। ইউরোপীয় কাউন্সিলের বিবৃতিতে বলা হয়, ঐকান্তিক আলোচনা চললেও কোনো চুক্তিতে পৌঁছা যায়নি বলে জানিয়েছেন বাহনিয়ে। আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত ইস্যুর মতো বেশ কয়েকটি বিষয়ে এখনো উভয়পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। যদিও এর আগে ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষরে গুরুত্বপূর্ণ এ সপ্তাহে সতর্কসংকেত দিয়েছেন ইইউর মন্ত্রীরা। আগামী ২৯ মার্চ ইইউ থেকে ব্রিটেনের প্রস্থানের বিষয়ে ২৭ সদস্যবিশিষ্ট ব্লকটির মন্ত্রীদের ব্রিফিং করার কথা ছিল ইইউর মুখ্য সমঝোতাকারীর।
-
ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনা প্রায় শেষ সময়ের। যদিও ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এই দুই পক্ষকে যাবতীয় বিরোধ মিটাতে হবে। পৌঁছতে হবে সমঝোতায়। নয়তো কোন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের পথে এগুতে হতে পারে ব্রিটেনকে। অবশ্য আজ বুধবার যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় টেরিজা মে খসড়া নথিটি নিয়ে তার ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ে প্রত্যেক মন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক এর পর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন।এই আলোচনার ফলে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার পর ডলারের বিপরীতে পাউন্ড ও ইউরো শক্তিশালী হয়ে উঠলেও এটি স্বল্পমেয়াদী হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা। কারণ নথিটির বিষয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা ও পার্লামেন্টে অনুমোদন বাকি রয়ে গেছে।
-
সম্প্রতি থেরেসা মে সরকার ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে ব্রেক্সিট সমঝোতা নিয়ে সংকটে পড়েছে। বিরোধীরা চুক্তি সংস্কারের পাশাপাশি থেরেসা মেকে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। যদিও হাতে সময় আছে মাত্র এক সপ্তাহ। এমন অবস্থায় চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট সম্পন্ন হলে যে খারাপ পরিস্থিতির শিকার হবে ব্রিটেন এর ব্যবসায়ীরা। তাই চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ও ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা।
-
অনেক টানাপোড়েনের পর ব্রাসেলসে রোববার ব্রেক্সিট চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭ সদস্য দেশের নেতারা। ফলে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিটকে সময়ের ব্যপার মাত্র, যা ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপিয় নেতারা। যদিও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুমোদন পাওয়াটা খুব সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে না এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে চুক্তিটি পার্লামেন্টে ঘোর বিরোধিতার মুখে পড়বে যা মের জন্য থেরেসা মে। অন্যদিকে ইইউ সতর্ক করেছে যে, যদি পার্লামেন্টের ভোট অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে এই চুক্তিটি নিয়ে পুনরায় আলোচনার আর কোনো সুযোগ পাবেন না প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
-
ব্রেক্সিট চুক্তির কারণে প্রতিবছর যুক্তরাজ্যকে প্রায় ১৩ হাজার কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল রিসার্চে'র গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে যে অর্থনৈতিক লোকসানের মধ্য দিয়ে যেতে হবে যুক্তরাজ্যকে। সংস্থাটি বলছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৪৬% শতাংশ ব্যবসা কমে আসবে এবং বিদেশী বিনিয়োগ কমবে ২১ শতাংশ। ফলে রাজস্ব আয় কমবে ১.৫ থেকে ২ ভাগ, যা ২৯০০ কোটি ডলার পর্যন্ত। তবে থেরেসা মে বলছে ‘‘কিছু পেতে হলে কিছু ছাড়তে হবে। ব্রেক্সিট চুক্তির ফলে একদিকে যেমন লোকসান হবে ঠিক তেমনি অন্য দিকে নতুন নতুন ব্যবসায়ের সুয়োগ তৈরী হবে।’’
-
ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটির অপেক্ষায় পুরো ব্রিটেন। আর এই ভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে দেশটির বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক কি হবে তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেরেসা মে'র ভাগ্যও নির্ভর করছে এই ভোটের ওপর। এমন অনিশ্চয়তায় শেষ মুহুর্তে ভোটাভুটি বাতিল করা হয়েছে
-
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগে তিন মাসেরও কম সময় বাকি রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জোটটির কাছ থেকে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে আশ্বাস আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে। তবে আগামী সপ্তাহে হাউজ অব কমন্সে ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর অনুষ্ঠেয় ভোটে জয়লাভ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মে। এদিকে ব্রেক্সিটের পর ইইউর ভর্তুকি প্রত্যাহারের আশঙ্কায় ব্রিটেনের কৃষিজমির দাম দ্রুত কমতে শুরু করেছে। এছাড়া ব্রেক্সিটের আগে আগে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদ ব্রিটেন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন আর্থিক কেন্দ্রগুলোয় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
-
ব্রেক্সিট হবার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চুক্তি করা নিয়ে প্রচুর আপত্তি রয়েছে যেমন ঠিক তেমনভাবে চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকর হলে বাধবে মহা বিপত্তি। তাই যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের সর্বদলীয় এমপিদের একটি জোট কোন চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে। গত মঙ্গলবার সরকারের আর্থিক বিলে (ফাইন্যান্স বিল) সংশোধনী চেয়ে সংসদে একটি প্রস্তাব পাস হয়। এর ফলে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করতে গেলে সরকার জনগণের ওপর করের বাড়তি বোঝা চাপাতে পারবে না। আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর সরকারকে নিরুৎসাহিত করতেই এই কৌশল। বিরোধী দল লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা ইভেট কোপার এবং ক্ষমতাসীন দলের সাবেক মন্ত্রী নিকি মর্গান যৌথভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা এতে সমর্থন দেন। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ২০ জন আইনপ্রণেতা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। মাত্র ৭ ভোটের ব্যবধানে (পক্ষে ৩০৩, বিপক্ষে ২৯৬) পাস হওয়া প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের জন্য বড় রকমের হার বলে বিবেচিত হচ্ছে।
-
যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে ব্রেক্সিট নিয়ে আজ মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ হবে। এ নিয়ে গোটা ব্রিটেনে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ডিসেম্বরে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও পরাজয়ের আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে এসে মে ভোটের তারিখ পিছিয়ে দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সতর্ক করেছেন, পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন ব্যর্থ হলে যুক্তরাজ্যে বিপর্যয় নেমে আসবে, তাই সব কিছু ভুলে দেশের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই সময়। কেননা আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার শেষ সময়সীমা। বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে। ব্রেক্সিট চুক্তির অনুমোদন পেতে আমার দল পূর্ণ সমর্থন দেবে।
-
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে ব্রেক্সিট বিল এর পক্ষ/বিপক্ষে যুক্তি তর্ক শেষ হয়েছে। ভোট এর ফলাফলে পক্ষে ভোট পড়েছেঃ ২০২ #বিপক্ষে ভোট পড়েছেঃ ৪৩২ টি। ফলে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এর উত্থাপিত ব্রেক্সিট চুক্তি বাতিল হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে, প্রস্তাবিত এই চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটেন, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় ইউ এর সদস্যতাপদ বাতিল করছে না। এমতবস্থায় বেশ অনেকগুলো বিষয় ইতিমধ্যেই আরও জটিল হয়ে উঠেছে, এদিকে লিভারেল পার্টি, নতুন করে থেরেসা মে এর উপর অনাস্থা ভোট এর আহ্বান করেছে যার ফলাফল হিসাবে থেরেসা মে এর মন্ত্রিত্ব নিয়ে নতুন করে সন্দেহের উদ্ভব হল। যেমন
* থেরেসা মে, কি তাহলে প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় থাকছেন?
* ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় কি পুনরায় গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে?
* আগামি মার্চ ২৯ এর মধ্যে কি তাহলে ব্রেক্সিট সম্পন্ন হচ্ছে না?
* ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, চুক্তি বাতিল এর এই সিধান্তকে কিভাবে মেনে নিবে?
প্রশ্নগুলোর উত্তর এখন পর্যন্ত পরিস্কার নয় এবং এই বিষয়গুলোর প্রভাব, আমরা সরাসরি ফরেক্স ট্রেডে দেখতে পাবো। আসছে কয়েকদিন #gbp এবং #eur পেয়ারে অস্বাভাবিক মুভমেন্ট হতে পারে। তাই #gbp এবং #eur পেয়ারের অস্বাভাবিক মুভমেন্ট এর জন্য তৈরি থাকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
-
নো -ডিল ব্রেক্সিটের সম্ভবনা বেশী। আর নো ডিল ব্রেক্সিট হলে ইউরো এবং পাউন্ড নদীর এই কুলে আমি আর অই কুলে তুমি মাঝ খানে শুধু ডলার বেইজ মুভ হবে। আগে যেমন ইউরো পরলে পাউন্ড ও পরতো এমন পজিটিভ কো-রিলেশন থাকবে না। দুটি দেশ, দুটি আলাদা ইস্যুতে মুভ করবে। এবং ব্রেক্সিটের পর বেশ কয়েক মাস টেকনিক্যাল এনালাইসিস বেশী ফলো করবে ফরেন পলিসি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত। আর এখন থেকেই এর একটু একটু প্রভাব শুরু হয়েছে।
যদি সফট ব্রেক্সিট হয় বা কানাডিয়ান স্টাইল বা নরওয়েন স্টাইলে হয়। অর্থাৎ ইউরো জোনে না থেকেও ইউরো জোনেফ সাথে ফ্রি ট্রেড ডিলিং সুবিধা ইংল্যান্ড পায় সেক্ষেত্রে আবার পজিটিভ রিলেশন কাজ করবে। ইউরো শক্তিশালী হলে পাউন্ড ও হবে। পাউন্ড শক্তিশালী হলে ইউরো শক্তিশালী হবে৷ আর হার্ড ব্রেক্সিট হলে বা নো ডিল ব্রেক্সিট হলে " আজ দুজনার দুটি পথ গেছে দুদিকে চল" এমন হবে৷ সেক্ষেত্রে ডলার বেইজ মুভ হবে।
-
ব্রেক্সিট নিয়ে জটিলতা নিরসনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আজ বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নতুন প্রস্তাবনা তুলে ধরবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, ফলে এর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার নির্ধারিত সময়ে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে পারবে বলে আশা ব্রিটেনের ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রীর। তবে নতুন প্রস্তাবনা নয়, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়ানোর পক্ষে বলে মত দিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার। এদিকে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট পরিকল্পনা মেনে নেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিরোধীদল লেবার পার্টি
-
চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে আশঙ্কায় দিন গুনছে ব্রিটেনে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান করা গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো। ২২ দিনের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে প্রস্থান করতে যাচ্ছে ব্রিটেন। অনেকটা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠায় বেশ কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানির উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের ৮ লাখ ৫০ হাজার কর্মীর জন্য উত্কণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। জেনেভা মোটর শোতে জার্মান গাড়ি নির্মাতা জায়ান্ট বিএমডব্লিউ জানায়, তারা অক্সফোর্ডের নিকটবর্তী কাউলি কারখানায় মিনি গাড়ি নির্মাণ বন্ধ করার কথা ভাবছে। এতে শত বছর ধরে গাড়ি নির্মাণ করা এ কোম্পানিটির ৪ হাজার ৫০০ কর্মী ছাঁটাই হতে পারেন।
-
আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ইইউ ছাড়তে হবে। অথচ এখনো যুক্তরাজ্য কোনো ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারেনি। উল্লেক্ষ্য যে গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র প্রস্তাবিত চুক্তি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিপুল ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। তাই আজ মঙ্গলবার ব্রেক্সিট চুক্তি গ্রহণ করা হবে কি হবে না এ বিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চূড়ান্ত ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এখন হাউজ অব কমন্সকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
-
ব্রেক্সিট ইস্যু ও পাউন্ডের স্ট্রং হওয়া নিউজের পরেইঃ
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিটের পক্ষে। এর অর্থ সে চায় বৃটেন ইউরোপীয় জোন থেকে বেরিয়ে আসুক। আমরা জানি ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক কমিউনিটির নাম। এই কমিউনিটি থেকে বেরিয়ে যাওয়া মানে বিশাল এক অর্থনৈতিক ব্যাকআপ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা। থেরেসা মে পন্থিরা স্বাধীনচেতায় বিশ্বাসী। তারা কোন ইউনিয়নের অধিনে থাকতে চাননা। তা সে যত শক্তিশালী কমিউনিটিই হোক না কেন!
কিন্ত এই ব্রেক্সিটের বিপক্ষেও জনমত কম নয়। বেশ কিছুদিন আগে ব্রেক্সিটের পক্ষে ও বিপক্ষে গণভোটে পক্ষের জয় হলেও বিপক্ষের ভোটও একেবারেই কাছাকাছি ছিল। সামান্য ব্যবধান ছিল দু পক্ষের। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মত শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার পক্ষে জয় হওয়াতে সেই ভোটের পরেই বৃটিশ পাউন্ড নামতে নামতে একেবারে তলানীতে এসে পড়েছিল প্রায়।
এবার প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সেই ভোটের রায় কার্যকর করতে পার্লামেন্টে বিল উথাপন করেন ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে। কিন্ত সেই বিলের পক্ষে হওয়া পার্লামেন্টারি ভোটে থেরেসা মে পক্ষ হেরে যান। তিনি পান ৩০৭ ভোট। আর বিপক্ষ জয় পায় ৩১২ ভোট পেয়ে।
তাতে ব্রেক্সিট ইস্যু কিছুটা হলেও দীর্ঘায়িত হয় আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে থাকাটাও আরেকটু লম্বায়িত হল বৃটেনের ফলে এই শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোনের সাথে আরও কিছুদিন থাকতে পারার সুবাদে বৃটিশ পাউন্ড (gbp) কিছুটা স্ট্রং আচরন দেখায়।
যার ফলে প্রায় সকল পেয়ারেই জিবিপি মুল্য উপরের দিকেই উঠতে থাকে নিউজের পর পরই
-
৪.১ মিলিয়ন লোক সাক্ষর করেছে যাতে ব্রেক্সিট নিয়ে আবার পার্লামেন্টে ডিবেট হয়, ৪.২ মিলিয়ন হলে ব্রেক্সিট নিয়ে আবার পার্লামেন্টে ডিবেট হবে যাতে নো ডিল ব্রেক্সিটের পক্ষে হাটতে না হয়। আর ০.১ মিলিয়ন লোক সাক্ষর করলেই হবে। নো-ডিল ব্রেক্সিট হলে মার্ক কার্নির( ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর) কথা অনুযায়ী ইংল্যান্ডের ইকোনোমি কলাপ্স করবে ২৫% এর মত। পাউন্ড কত পিপ্স ড্রপ করবে এটা সহজেই অনুমেয়।
৩য় ভোটের পর থেরেসা মে আর্জি করেছিলো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে ২ বছর সময়ের জন্য, এটা সাময়িক পাউন্ডের জন্য পজিটিভ ছিলো। সেটা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে ডিনাই করা হয়। এর পর আবেদন করা হয় ৩০ শে জুন পর্যন্ত, সেটার কারন দেখাতে বলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। শেষ পর্যন্ত এপ্রিল এর ১২ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয় এবং ২২ তারিখের মাঝেই একটা সিদ্ধান্তে পৌছে যাবে ব্রেক্সিট ডিল। এর মাঝেই ব্রেক্সিট ডিল নিয়ে পিটিশনের আয়োজন করা হয়েছে। লেটস সি।
পার্লামেন্টের নিজস্ব অয়েব সাইটে এই পিটিশন এর আয়োজন করা হয়েছে। https://petition.parliament.uk/petitions/241584
-
বিদায় নিচ্ছেন থেরেসা মে!
[IMG]https://www.dailyinqilab.com/news_original/1553487692_theresa-may-u-k-139062.jpg[/IMG]
মন্ত্রিসভার একটি পূর্ণাঙ্গ অভ্যুত্থান চক্রান্তের সম্মুখীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তার মন্ত্রিসভার ১১ জন মন্ত্রী জানিয়েছেন যে, তারা তার পদত্যাগ চান। টিম শিপম্যান রোববার বলেন, ‘আজ রাত থেকে থেকে উৎখাত করতে তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ অভ্যুত্থান চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তার সময় ঘনিয়ে এসেছে। তাকে ১০ দিনের মধ্যে তাকে বিদায় নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘মের ডি-ফ্যাক্টো সহকারী ডেভিড লাইডিংটন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তবে অন্যরা পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গভ অথবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমি হান্টকে এ দায়িত্ব দেয়ার পক্ষে।’
জানা গেছে, থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেই ব্রেক্সিট চুক্তি পাসে প্রয়োজনীয় সমর্থন পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের সিনিয়র নেতারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাথে পরবর্তী দফা আলোচনার নেতৃত্বে থেরেসা থাকছেন না বলে জানালে অনিচ্ছা সত্ত্বেও টোরি এমপিরা ব্রেক্সিট চুক্তিতে সমর্থন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমগুলোতে এমন খবরের মধ্যেই রক্ষণশীল দলের সংসদ সদস্য ও সিনিয়র নেতাদের এ মনোভাবের কথা জানা গেল।
তবে থেরেসা মেকে সরে দাঁড়াতে প্ররোচিত করা হচ্ছে বলে যেসব খবর প্রচারিত হচ্ছে সেগুলো উড়িয়ে দিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট। ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়াবিষয়ক আর্টিকেল-৫০ এর মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হওয়া মে সপ্তাহখানেক ধরেই পদত্যাগের চাপের মুখে আছেন। ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় তার সমালোচনাও করছেন এমপিরা। ইইউ নেতাদের সাথে হওয়া সমঝোতা চুক্তিটি থেরেসা আগামী সপ্তাহে ফের পার্লামেন্টে ভোটে তুলবেন কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা এমপিদের কাছে লেখা এক চিঠিতে ‘প্রয়োজনীয় সমর্থন’ পেলেই কেবল চুক্তিটি ফের উত্থাপন করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
-
ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়ে ঝামেলা যেন কাটছেই না, পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট বিষয়ক আলোচ্যসূচি হাতে নিতে সাংসদদের আনা একটি অভূতপূর্ব সংশোধনী প্রস্তাবে টেরিজা মে-র সরকার ৩২৯-৩০২ ভোটে হেরেছে, যদিও বিভিন্ন দলের সাংসদদের সমর্থনপুষ্ট ওই সংশোধনী অনুযায়ী বুধবার ব্রেক্সিট নিয়ে সিরিজ ভোট হবে; সেখানেই কোন পদ্ধতির বিচ্ছেদে সবচেয়ে বেশি সাংসদের সমর্থন আছে তা জানা যাবে। অথচ ১ সপ্তাহ আগে থেকে নোডিল ব্রেক্সিট এর পক্ষে বিপক্ষে চলমান ভোটকে কেন্দ্র করে মার্কেট এমনিতেই উত্তাল ছিলো, তার উপরে পার্লামেন্টে সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ আরো বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। যদিও গত সপ্তাহেই ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে ব্রেক্সিট কার্যক্রম পেছানোর জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আরো কিছুটা সময় চাওয়া হয়েছিলো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে কিছুটা সময় দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি গোদের উপর বিষ ফোড়ার মত ব্রেক্সিট এর বিপক্ষে আন্দোলন করা শুরু করেছে লাখ লাখ লোক, এদের মধ্যে আবার বাম দলের নেতারাও আছে।
[IMG]https://d30fl32nd2baj9.cloudfront.net/media/2019/03/26/may.jpg/ALTERNATES/w640/may.jpg[/IMG]
যেহেতু ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের পুনরায় ইউনিয়ন ভুক্ত থাকার এবং ব্রেক্সিট বাতিলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তাই ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি যত আন্দোলন ই হোক না কেনো ব্রেক্সিট বন্ধ হবেনা। তবে এইভাবে বিভিন্ন মহলের মাঝে মতবিরোধ চলতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদে ব্রিটেনের অর্থনীতির উপর ক্ষতিকর প্রভাব পরবে। এবং চলমান আন্দোলনের ব্যাপারে কোনও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত না আসে তবে চলতি সপ্তাহেই পাউন্ডের উপর এর ছোটখাটো ইফেক্ট আসতে পারে এমনকি মার্কেট গ্যাপ দিয়ে শুরু হবার সম্ভাবনাও আছে। আর পাউন্ড নিয়ে যদি এভাবে ধোঁয়াশা বাড়তেই থাকে তবে পাউন্ড রিলেটেড পেয়ারগুলোতে ভোলাটালিটি অনেক বেড়ে যেতে পারে এমনকি হুটহাট করে যেকোনো সময় কোনও ইভেন্ট ছাড়াই বড় মুভমেন্ট হতে পারে, কারন এই সময়ে বড় বড় ব্যাংক এবং বিগ ইনভেস্টরদের পাশাপাশি গ্যাম্বলাররা অনেক বেশি সক্রিয় থাকে।
দিন শেষে ফরেক্স মার্কেট তার আপন গতিতেই চলবে। তাই অবশ্যই স্টপ লস ব্যবহার করে ট্রেড করা উচিৎ এবং ভালো সেটাপ এবং ভালো ট্রেড কনফার্মেশন এর জন্য ধৈর্য ধারণ করে অপেক্ষা করা উচিৎ।
অল্প লটে এবং অবশ্যই স্টপ লস সেট করে ট্রেড করুন, নিজের ব্যালেন্স কে সুরক্ষিত রাখুন ।
-
তৃতীয় বারের মতো ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-র চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার পর ব্রিটেনকে হয়তো কোন চুক্তি ছাড়াই ১২ এপ্রিল ইইউ ত্যাগ করতে হবে। ফলে দেশটির পার্লামেন্টে কার্যত এক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আরেক দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে? অনেকেই মনে করছে এর ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির গুরুতর ক্ষতি হবে। অন্যদিকে ব্রেক্সিট সমর্থকদের একাংশ বলছেন, মে-র চুক্তিতে যে ব্যাকস্টপ পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তাতে উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ব্রিটেনের বাকি অংশ- এ দুয়ের জন্য দুই নিয়ম চালু হবে। তাদের মতে, এক দেশে দুই নিয়ম থাকতে পারে না এবং এর ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ড কার্যত যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, ব্রিটেন আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে কখনোই ইইউ থেকে বেরুতে পারবে না।
-
ব্রেক্সিট কার্যকরে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় পেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের। কেননা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া কার্যকর করতে ব্রিটেনকে ৩১ শে অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সময় বাড়ানোর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউ সদর দপ্তরে বুধবার বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের নেতাদের সামনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আরো সময় চান। সময়সীমা বাড়ানোর জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের পর ইউরোপীয় নেতারা নিজেদের মধ্যে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা করেন। দীর্ঘ আলোচনার পর আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এ সময় বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যে ব্রিটেন কিভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসবে সে উপায় নির্ধারণ করবে। তবে জুন মাসে এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর করার কথা ছিল ২৯শে মার্চ। সেটি কার্যকর করতে না পারায় ১২ই এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ব্রিটেন কোন পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসবে সেটি চূড়ান্ত করতে পারেনি দেশটির পার্লামেন্ট। ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের একের পর এক প্রস্তাব বাতিল হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে। বুধবার ব্রাসেলস সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে আবেদন করেছিলেন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের সময়সীমা ৩০ শে জুন পর্যন্ত করার জন্য। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন সে সময়সীমা আরো চার মাস বাড়িয়ে ৩১ শে অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করেছে।
এ সম্মেলনে সবচেয়ে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো। তিনি বলেন, ৩০ শে জুনের মধ্যেই ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাবার বিষয়টি কার্যকর করতে হবে। তবে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বিষয়টি নিয়ে নমনীয় ভাব দেখান। তারা দুজনেই চেয়েছেন ব্রেক্সিটের জন্য ব্রিটেনকে যাতে যথাযথ সময় দেয়া হয়, যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাবার বিষয়টি ব্রিটেন পুনরায় চিন্তা করতে পারে।
যুক্তরাজ্য ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকার পর ২০১৬ সালের ২৩শে জুন একটি গণভোট নিয়েছিল। সেখানে সেদেশের নাগরিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- যুক্তরাজ্যের কি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকা উচিত, নাকি উচিত না? ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে,আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। কিন্তু সেই ভোটের ফলাফলের সাথে সাথেই ব্রেক্সিট হয়ে যায়নি।
-
অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) তথ্য অনুসারে ব্রেক্সিট-সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা পেছনে ফেলে চলতি বছর যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোর বিক্রি এতটা ভালো না হলেও অনলাইনভিত্তিক বিক্রির হার বৃদ্ধি পেয়েছে যা ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই তিন মাসে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রি পূর্ববর্তী তিন মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা বিক্রি বৃদ্ধির চলতি গতি গত গ্রীষ্মের চেয়ে দ্রুততর বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একই সময়ে অনলাইনে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ১৯৮৮ সালে রেকর্ড রাখা শুরুর পর সর্বোচ্চ।
-
1 Attachment(s)
[ATTACH=CONFIG]8114[/ATTACH]
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক কমিউনিটি। অনেক স্বাধীন দেশ এই কমিউনিটিতে যোগ দিয়েছেন কারন এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে থাকা দেশসমুহ নিজেদের মাঝে অনেকটা শুল্কমুক্ত ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারেন অনায়াসেই। তাতে নিজেদের মাঝে অবাধ লেনদেন করতে পারে এই দেশসমুহ। আর এই লেনদেন করার জন্য তারা নিজেদের দেশের মুদ্রার বাইরে আরেকটি মুদ্রার প্রচলন করে। যে মুদ্রা দিয়ে তারা নিজেদের মাঝে লেনদেন করে থাকে। এই মুদ্রার নাম ইউরো, ফলে এই ইউরো কারেন্সী কিন্ত কোন নিজস্ব দেশের মুদ্রা নয়। এটা একটা কমিউনিটির প্রচলিত কারেন্সী। আর বর্তমানে তারা সারা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালি ব্যবসায়িক কমিউনিটি বা সংগঠন। এই সংগঠনের একটি কার্যকরী সদস্য ছিল ইউনাইটেড কিংডম বা ইংল্যান্ড। যাকে আমরা গ্রেট বৃটেন বলে থাকি।
বেশ কিছুদিন আগে বৃটেনে জনগনের একাংশ দাবী করল যে, ত্রারা ইউরপীয়ান ইউনিয়নে থাকতে চায় না। কারন কি? কারন হচ্ছে, তারা নিজেদের সেরা বলে মনে করে। সারা বিশ্বে তারাই সর্বেসর্বা বলে মনে করে তারা। অন্য সংগঠনে থাকা মানে তাদের নিজেদের সম্মানহানী বলে তাদের অনুমান। আর তাই তারা ইউরপীয়ান ইউনিয়ন কমিউনিটি থেকে বের হতে বেশ জরালো দাবী জানাল। বিশ্বের শান্তিপুর্ন গনতন্ত্রের চর্চাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত দেশ বৃটেনে এই ইস্যু নিয়ে গনভোট হয়ে গেল। সেই ভোটে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়া পক্ষ জয়লাভ করলেন।
রাতারাতি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে গেলেন এই জয়লাভ করা পক্ষের নেতৃত্ব দেওয়া মানুষটি। যার নাম থেরেসা মে। এরপর তিনি বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান।
এই একটি সংগঠন থেকে বৃটেনের বেরিয়ে যাওয়াকেই বলা হয় ব্রেক্সিট। বৃটেনের জনগন ভাবতে পারেনি যে, ব্রেক্সিটের পর তাদের জন্য কি নিদারুন সময় অপেক্ষা করছে!
ব্রেক্সিটের পর দেখা গেল বৃটেনের ব্যাবসায়িক লেনদেন একেবারে সংকটের মাঝে পড়ে গেল। যেসব দেশ ইউরপিয়ান ইউনিয়নের মেম্বার হিসেবে লেনদেন করত, তারা তাদের লেনদেন গুটিয়ে নিল!! এমন পরিস্থিতিতে বৃটেনের নিজস্ব মুদ্রা বৃটিশ পাউন্ড এর ভ্যালু একেবারে তলানিতে যাবার অবস্থা তৈরি হয়।
ফলশ্রুতিতে বৃটিশ জনগন অতিদ্রুত নিজেদের ভুল শোধরে নিয়ে আবার মত পালটায়। তারা আবার ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে মত দেয়। তারা এই বলে মত দেয় যে আমরা আগেই সসম্মানের সাথে ভাল ছিলাম, তেমনি থাকতে চাই।
এমন জনমতের মুখে ব্রেক্সিট আন্দোলনের নেত্রি থেরেসা মে একেবারেই মুল্যহীন হয়ে পড়েন। গত দুইদিন আগে তিনি অবসর নিতে বাধ্য হোন।
-
ব্রেক্সিট-পরবর্তী অর্থনীতির অবস্থা কেমন হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছেই। এখন আরো যোগ হয়েছে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা। এমন অনিশ্চয়তায় সৃষ্ট পরিস্থিতি ব্রিটেনের ব্যবসায়িক বিনিয়োগে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্রেক্সিট অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিয়োগ কমাতে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে পণ্য মজুদের কারণে প্রবৃদ্ধিতে যে চাঙ্গা ভাব দেখা গিয়েছিল, তা ক্রমেই স্তিমিত হতে শুরু করেছে।
ব্রিটিশ চেম্বারস অব কমার্স (বিসিসি) বলছে, ব্রেক্সিটসংক্রান ত অনিশ্চয়তা ও দুশ্চিন্তায় চলতি বছর ব্যবসায়িক বিনিয়োগের বড় পতন দেখা যাবে এবং আগামী বছর প্রত্যাশার তুলনায় কম হারে বিনিয়োগ বাড়বে। সংগঠনটি বলছে, চলতি বছর ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমতে যাচ্ছে। এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব কথা জানিয়েছে বিসিসি।
-
ব্রেক্সিটকে একটি ‘বিশাল অর্থনৈতিক সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। শনিবার তিনি এ মন্তব্য করে বলেন, তার পূর্বসূরি টেরিসা মে এটিকে ‘প্রতিকূল ঘটনা’ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ম্যানচেস্টারে দেয়া এক বক্তৃতায় তিনি ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোটদানকারী অঞ্চলগুলোতে নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা দেন। এছাড়া ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য আলোচনা এগিয়ে নেয়া এবং অর্থনীতি এগিয়ে নিতে মুক্ত বন্দর প্রতিষ্ঠারও প্রতিশ্রুতি দেন। বক্তৃতায় জনসন বলেন, যখন জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তারা শুধু ব্রাসেলসের বিপক্ষেই ভোট দেননি, বরং তারা লন্ডনের বিপক্ষেও ভোট দিয়েছেন।স্থানীয় প্রতিনিধি ও জনগোষ্ঠীর হাতে অধিক ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড সংযোগ চাঙ্গা করা এবং পরিবহন অবকাঠামো শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।মূলত স্থানীয় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দেয়া ভাষণে নয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসার মানে ইইউর স্থলে ওয়েস্টমিনস্টারের ক্ষমতা প্রতিস্থাপিত করা নয়। তার মানে হচ্ছে আমাদের নগর, কাউন্টি ও শহরগুলোর আরো আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টি আমাদের সামনে বিশাল অর্থনৈতিক সুযোগ, যা থেকে দশকের পর দশক বঞ্চিত হয়েছি আমরা।ব্রেক্সিট আলোচনার হালহকিকত নিয়ে প্রশ্নের জবাবে জনসন বলেন, তিনি ইইউর অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে যদি গত মে মাসে প্রবর্তিত বর্তমান বিচ্ছেদ চুক্তিতে আইরিশ ব্যাকস্টপ ধারাটি বাতিল করা হয়।
-
চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতির জন্য যুক্তরাজ্য সরকার আরো ২১০ কোটি পাউন্ড তহবিল গড়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ব্রেক্সিট প্রস্তুতির পূর্বঘোষিত তহবিল বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এদিকে ১০টি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ঘোষণার পরিকল্পনা করছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নতুন বরাদ্দকৃত তহবিল সীমান্ত অঞ্চলের বিভিন্ন অফিসে ও বাণিজ্য অঞ্চলে আরো জনবল এবং প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য ব্যয় করা হবে। কেন্ট বন্দর পরিবহন ব্যবস্থা সহজ এবং সীমান্ত অঞ্চলের যানজট কমাতে বরাদ্দকৃত অর্থের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় করা হবে। এদিকে অবিরাম সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে ওষুধের মজুদ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করতে জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়নেরও কথা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে চ্যান্সেলর সাজিদ জাভিদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ করতে যুক্তরাজ্যের এখনো ৯১ দিন সময় হাতে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ইইউ ত্যাগের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করাই আমাদের মুখ্য বিবেচনা। এ সময়ের মধ্যে আসলে আমাদের ব্রেক্সিটের জন্য প্রস্তুত হয়ে যেতে হবে।
-
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের প্রক্রিয়া (ব্রেক্সিট) নিয়ে যুক্তরাজ্য ‘সংকটের’ মধ্যে আছে এবং দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রয়োজনে ‘কোনো চুক্তি ছাড়াই’ ইইউ’র সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আগামী ৩১ অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়ার কথা। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘সানডে টাইমস’ এ সরকারি একটি প্রতিবেদন ফাঁস হয়। তাতে বলা হয়েছে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে যুক্তরাজ্য খাবার ও ওষুধের সংকটে পড়বে। এছাড়াও চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট আটকাতে কোমর বেঁধে নেমেছেন করবিন। এজন্য তিনি আগামী সপ্তাহে দেশটির অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে বিবিসি’কে জানিয়েছিলেন শ্যাডো চ্যান্সেলর জন ম্যাকডনেল।
অন্যদিকে, সোমবার এক বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেন, পূর্বনির্ধারিত সময় গত ২৯ মার্চের আগেই চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিষয়ে প্রস্তুতি ‘অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিল’। যা তারপর ‘পিছলে কিছুটা পেছনে চলে গেছে’। “আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যুক্তরাজ্য অক্টোবরের শেষেই ইইউ ছাড়তে প্রস্তুত থাকবে। কোনো চুক্তি হোক বা না হোক।”
ও “ওই পথে কোনো বাধা থাকবে না, এমনটা আমি ভাবছি না। কিন্তু সবাই যদি এটার উপর সব মনযোগ দেয়... আমরা প্রস্তুত হতে পারব এবং এটা নিয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই।”
-
ব্রেক্সিট ঝড় বৃটিশ রাজনীতিতে অভিনব কোনো ঘটনা নয়। দুই প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় নিতে হয়েছে এই ঝড়ে। এবার দৃশ্যপটে নয়া প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। প্যারিসের জি-৭ সম্মেলন থেকে সবে ফিরেছেন। আর ফিরেই নাটকীয় এক সিদ্ধান্ত নিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ আর চ্যালেঞ্জিংও বটে। অক্টোবরে ব্রেক্সিট কার্যকরের আগে তিনি সংসদের কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বুধবার সকালে রাণীর কাছে পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত রাখার আর্জি জানান।রাণী এ সিদ্ধান্তে একমত হলে ব্রেক্সিটের আগে এমপিদের কোন বিল পাশ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। আকস্মিক এই সিদ্ধান্তে ঝড় ওঠেছে বিলাতের রাজনীতিতে। তার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিরোধীরা। বলছেন, এটি অগণতান্ত্রিক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন মেজর বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে যাবেন। স্পিকার জন বারকোও প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। টরি ব্যাকবেঞ্চার ডমিনিক গ্রিয়েভ পরিকল্পনাটিকে সাংঘাতিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, এতে প্রধানমন্ত্রী জনসনের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপিত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ঘোষণার এক ঘণ্টার মধ্যেই এক লাখ মানুষ একটি পিটিশনে সিদ্ধান্ত স্থগিত করার পক্ষে সই করেছেন।
তাই আজ ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে হাজারো মানুষ.. বিক্ষোভ এখনো চলছে:
-
সঠিক নিয়মে বেক্সিট হকে ইউকে ভিখারি হবে। তাই এরা চাচ্ছে তড়িঘড়ি করে ইউরোপ এর নেতাদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়া বের হতে। তবে এটা সম্ভব নয়। তাই যে কোন সময়ে এটি সম্পন্ন হবে আসা করি।
-
আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার কথা রয়েছে। সেটি চুক্তি হোক কিংবা না হোক। এ বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের সংসদ সদস্যদের সতর্ক করে দিয়েছেন, যেন তারা যাতে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের (নো ডিল ব্রেক্সিট) বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধাচারণ না করে। ফলে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের বলা হয়েছে, তারা যদি ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ এর বিপক্ষে ভোট দেয় তাহলে তাদের দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। এর অর্থ হচ্ছে, বহিষ্কৃতরা আগামী নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী হতে পারবেন না। ব্রেক্সিট বিষয়ে আগামী ১৭ অক্টোবর একটি চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরবর্তী সামিট অনুষ্ঠিত হবে। সে সূত্রটি বলেছে, এই চুক্তি হবার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ, ব্রাসেলস অনুধাবন করেছে যে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি-বদ্ধ।